জীববিজ্ঞানে হাতেখড়ি ১ : ডিএনএ, জিন, ক্রোমোজোম, জিনোম।

জীববিজ্ঞানের বিষয় সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং সঠিক তথ্য জানানোর জন্য আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস।
ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে না দেখে কমেন্টে জানাবেন। আমি বিদ্যাদিগগজ নই। ভুল ত্রুটি দেখালে অন্যেরাসহ আমি সঠিক শিখতে পারবো।
আমরা সবাই ডিএনএ, জিন এই শব্দগুলোর সাথে কম-বেশি পরিচিত। যেমন, কোন অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় বা অপরাধী সনাক্তকরণে আমরা ডিএনএ টেস্ট করি। আবার, কোন শিশু প্রতিভাবান হলে বলি ‘বাবা-মায়ের জিন পেয়েছে।’ সাধারণ মানুষ যা বুঝে তা হলো ডিএনএ প্রতিটি মানুষের জন্য স্বতন্ত্র পরিচয় আর জিন হচ্ছে বৈশিষ্ট্য যা বংশানুক্রমে স্হানান্তরিত হয়। আবার অনেকে জিনোম শব্দটির সাথে পরিচিত যদিও অধিকাংশই বুঝে না জিনোম (বাংলা: জীবনরহস্য) কী? সম্প্রতি পাটের জিনোম উৎঘাটনের মাধ্যমে শব্দটি সাধারণের মধ্যে প্রচার পেয়েছে। যারা জীববিজ্ঞান পড়েছেন তারা ক্রোমোজোম শব্দটি জানেন, বিশেষ করে জানেন যে ছেলেতে XY এবং মেয়েতে XX ক্রোমোজোম থাকে। তবে অনেকেই জানেন না বা বুঝতে পারে না, এই চারটি শব্দই পরস্পর সম্পর্কিত।
প্রথমে একটি উদাহরণ দিচ্ছি, সেটা মনে রাখুন। ধরুন, বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্স ৪৬ তলা করা হলো (কল্পনায়) এবং নাম পাল্টে রাখা হলো “জিনোম”। প্রতি তলাকে ক্রোমোজোম নাম দেয়া হলো। এখন উপরের ২৩ তলা আর নিচের ২৩ তলা একই (বা একটি তলা শুধু স্বতন্ত্র)। আলাদা ভাবে প্রতি দুই তলার মধ্যে মিল থাকার জন্য ২৩ জোড়া তলা বা ক্রোমোজোম বলুন। প্রতি তলার দোকানকে বলা হলো জিন যারা ভিন্ন ভিন্ন পণ্য বিক্রি করে/কাজ করে আর যত ইট আছে সবগুলোকে বললেন ডিএনএ। কঠিন হয়ে গেলো? তাহলে শুনুন, ইট তো ইট, ইটকে সঠিকবিন্যাসে সাজালে হয় দোকানঘর, দোকানঘর গুলো যদি একসাথে নির্দিষ্ট বিন্যাসে থাকে একটি বিশেষ জায়গায় থাকে তখন বলি ফ্লোর/তলা, সবগুলো তলা যখন একসাথে একটি ভবন তৈরি করে তখন বলি কমপ্লেক্স বা ভবন- কিন্তু এগুলো সবইতো ইট দিয়ে তৈরি। নিচের চিত্রটি(চিত্র ১) দেখুন বুঝা যায় কিনা? (অবস্হানগত বিভাগ বোঝানোর জন্য)

চিত্র ১: জিনোম থেকে ডিএনএ। ডিএনএর বিভিন্ন স্হানিক বিন্যাসের নামকরণের রূপক চিত্র।

আরেকটা প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দিচ্ছি, ধরুন আপনি বাংলা ব্যাকরণ পাঠ্যপুস্তক (জিনোম) পড়ছেন। সেখানে ৪৬ টা অধ্যায় (ক্রোমোজোম) যেখানে বইয়ের শুরুর ২৩টি অধ্যায় (ক্রোমোজোম) এবং শেষের ২৩ টি অধ্যায় (ক্রোমোজোম) একই (বা একটি অধ্যায় শুধু স্বতন্ত্র)। প্রতিটি অধ্যায় অসংখ্য প্রবন্ধাংশ (জিন) বিশেষ বিশেষ ঘটনা বর্ণনা করছে। আর সম্পূর্ণ ব্যাকরণ বই লিখা হয়েছে অক্ষর দিয়ে। (চারটি সংজ্ঞা পরস্পর সম্পর্কিত বোঝানোর জন্য)

ডিএনএ:
ডিএনএ হচ্ছে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক সিড। এটি বংশগতির ধারক ও বাহক। অর্থাৎ পিতামাতা থেকে বৈশিষ্ট্য ডিএনএ ধারণ ও বহন করে। একই ভাবে, পিতামাতাও তাদের ডিএনএতে তাদের পিতামাতার বৈশিষ্ট্য ধারণ ও বহন করে। তাই এইভাবে একজন মানুষের ডিএনএ এর তথ্য থেকে তার পূর্বপুরুষ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রজন্মান্তরে একই পূর্বপুরুষ থেকে বংশধররা আস্তে আস্তে দূরসম্পর্ক হয়ে যায়; আপনার নানীর চাচাতো বোনের মেয়ের মেয়ের সাথে আপনার সম্পর্ক হচ্ছে দূরসম্পর্কের আত্মীয়। আপনাদের দুজনের ডিএনএর বিন্যাসপাঠ (সিকুয়েন্সিং) করলে দেখা যাবে, আপনার সাথে আপনার ভাইবোনের সাথে সবচেয়ে মিল, তারপর হচ্ছে আপনার চাচাতো-মামাতো-ফুফাতো-খালাতো ভাই-বোনদের মিল, তারপরে দেখা যাবে আপনার ঐ দূর সম্পর্কের বোনের সাথে মিল। এখন এই মিল আসলে কিভাবে বিজ্ঞানীরা জানে বা আসলে ডিএনএর মিল কি বুঝায়? বিজ্ঞানীরা ডিএনএ বিন্যাস বের করে এবং কম্পিউটারের বিশেষ সফটওয়ার তাদের মিল বের করতে সাহায্য করে (জিনোম সিকুয়েন্সিং এর কথা বলছি)। সেখান থেকে তারা কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক বিন্যাস জনসংখ্যায় ভিন্নভাবে অবস্হান করে জানে, এবং শুধু সেগুলোর বিন্যাস থেকে নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারে কে কার সাথে কিভাবে সম্পর্কিত।

ডিএনএ চারটি গাঠনিক একক

চিত্র ২: ডিএনএ ।

(নাইট্রোজেনযুক্ত নিউক্লিক যৌগ/ক্ষার) দিয়ে তৈরি দ্বৈত-সর্পিলাকার (ডাবল-হেলিক্স) সূত্রাকার পলিমার। পলিমার হচ্ছে একই রকম যৌগ একক দিয়ে তৈরি লম্বা যৌগ। ডিএনএর চারটি গাঠনিক একক (নিউক্লিওটাইড) হচ্ছে এডেনিন (A), সাইটোসিন (C), গুয়ানিন (G) এবং থাইমিন (T)। এই চারটি অক্ষরের ভিন্ন ভিন্ন বিন্যাসে ডিএনএতে বংশগতি তথ্য সংরক্ষিত থাকে। ইংরেজীর যেমন ২৬ টি অক্ষর তেমনি বংশগতির মূল বর্ণমালায় অক্ষর চারটি। এখন এই অক্ষর আবার একটি আরেকটির সাথে জোড় বাধে। যেমন A জোড় বাধে T; C জোড় বাধে G (রাসায়নিক বন্ধন)। এরকম জোড়কে বলে বেইস পেয়ার। মানবদেহের একটি কোষের ডিএনএতে ৩.২ বিলিয়ন বেইসপেয়ার আছে। এই বিলিয়নেই আমাদের তথ্য লুকিয়ে আছে।

মজার তথ্য হলো, পনার দেহের সব কোষ থেকে পাওয়া ডিএনএ কে যদি সোজা করা হয় (কুণ্ডলী এবং প্যাঁচ খুলে দেয়া হয় ) তবে তার দৈর্ঘ্য হবে সূর্য থেকে পৃথিবীতে ৬৭ বার আসা যাওয়ার সমান। আর একটি কোষে থাকা ডিএনএর দৈর্ঘ্য প্রায় দুই মিটারের কাছাকাছি, যেখানে কোষে থাকা অবস্হায় পুরো ডিএনএ প্রায় ৬ মাইক্রোন জায়গার মধ্যে থাকে। মাইক্রোন হচ্ছে এক মিটারে এক মিলিয়ন বা দশ লাখ ভাগের এক ভাগ। আপনি ভাবছেন, কিভাবে ২ মিটার লম্বা একটি বস্তু কিভাবে এক মিটারের এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগের ছয় গুণ জায়গায় থাকে। গালগপ্প মারছি?

চিত্র ৩: মরিচবাতি দিয়ে আলোকসজ্জা। এখানে ব্যবহৃত সব মরিচবাতি এক সাথে এক ঘরের কোণে রাখা যাবে।

আবার চলুন ভবনে যাই। আপনি ভবনের ছাদে চলে যান আর আপনার হাতে আমি একটি সুঁতোর বড় গুটি দিয়ে দিলাম বা ঘুড়ির নাটাই। ছাদের কোন পিলারে সুতোর এক কোণা বেঁধে ছেড়ে দিন। সুতো দেখবেন হয়তো পুরো বিল্ডিং এর দৈর্ঘ্য অতিক্রম করে মাটিতে চলে গেছে। অথচ এই সুঁতোর বড় গুটি বা ঘুড়ির নাটাই ঘরের এক চিলতে জায়গায় খুব সুন্দর ভাবে থাকবে। চিত্র ৩ এ দেখুন একটি ভবনে মরিচ বাতি দিয়ে রঙবেরঙে আলোকসজ্জা করা হয়েছে।

 

চিত্র ৪: ডিএনএর সুপারকয়েলিং।

মরিচবাতি পুরো ভবনকেই ঘিরে রেখেছে। এই কাজে ব্যবহৃত সব মরিচবাতিকে যদি একত্রিত করে, গুছিয়ে সুন্দর করে বেঁধে রাখা হয় তবে তা ঐ ভবনের ছোট্ট একটি ঘরের বড় এক বাক্সে সুন্দর করে রাখা যাবে। ডিএনএর ব্যাপারটাও এই রকম। একে বলা হয় সুপারকয়েলিং। বাংলায় প্যাঁচ বেশি থাকলে লোকে বলে ‘জিলাপির প্যাঁচ’ আর জীববিজ্ঞানে আমরা বলি ‘ডিএনএর প্যাঁচ’। সুপারকয়েলিং অন্য নোটে ব্যাখ্যা করবো। চিত্র ৪ এ দেখতে পাচ্ছেন ডিএনএর সুপার কয়েলিং। এই ডিএনএর কোডিং অঞ্চল থেকে ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে এমআরএনএ হয় যা পরে ট্রান্সলেশনের মাধ্যমে প্রোটিন তৈরি করে (চিত্র ৫)।

চিত্র ৫: জীববিজ্ঞানে সেন্ট্রাল ডগমা বা প্রধান স্বীকার্য। সেন্ট্রাল ডগমানুযায়ী ডিএনএন থেকে ট্রান্সক্রিপশনে আরএনএ হয়। আরএন থেকে ট্রান্সলেশনের মাধ্যমে ফোল্ডিং শেষে প্রোটিন তৈরি হয়।

 

উপরের অংশ বুঝলে জিন, ক্রোমোজোম এবং জিনোম সহজেই বুঝতে পারবেন।
জিন:

জিন কে আলাদীনের জ্বিনের সাথে মিলিয়ে ফেলবেন না। জিন হচ্ছে বংশগতির বাস্তব এবং কার্যকরী একক।

চিত্র ৬: ক্রোমোজোমের দুটি জিনের অবস্হান দুটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করছে।

একটি জিন একটি প্রোটিন তৈরি করার তথ্য (coding for mRNA or functional RNA) এবং উৎপাদন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্হা থাকে। আপনার ডিএনএকে যদি সংখ্যা দিয়ে চিহ্নিত করে বিভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা হয় তবে জিন হচ্ছে কোন একটি নির্দিষ্ট স্হানে অবস্হৃত ডিএনএর নির্দিষ্ট বিন্যাস যা বংশগতির একক। জিনের নামকরণের সময় এর অবস্হান কোথায় তা সংঙ্গায়িত করা হয়। অর্থাৎ কোন ক্রোমোজোমের কোন বাহুর কোন অঞ্চলের কত নাম্বার বেসপেয়ার থেকে কত বেস পেয়ার সেটা বলা হয়।

এখন হয়তো দুটি জিনের মধ্যে একটি হয়তো চোখের আইরিশের রঙের জন্য দায়ী আরেকটি চুলের রঙের জন্য (চিত্র ৬)। এই দুটি জিন ভিন্ন কাজ করলেও তাদের অবস্হান ডিএনএর ভিন্ন জায়গায় এবং ভিন্ন বিন্যাস। প্রতিটি জিনের দুটি করে কপি আমাদের একটি কোষে থাকে। দুটি জিনের একটি পাই বাবা থেকে আরেকটি মা থেকে। এখন প্রতিটি মানুষের জিন বিন্যাস একইরকম হয়, তবে কিছু মানুষের মধ্যে এই বিন্যাসের কয়কটি স্হানে একই রকম পরিবর্তন থাকতে পারে। যখন এধরনের পরিবর্তন জনসংখ্যা ১% এর বেশিরূপে বর্তমান থাকে তাকে পলিমরফিজম বলে।

চিত্র ৭: সিঙ্গেল নিউক্লিউটাইড পলিমর্ফিজম।

নিচে তিনজন মানুষের একটি জিনের ডিএনএর বিন্যাসের চিত্রে-৭ দেখতে পাচ্ছেন শুধু একটি জায়গাতেই ভিন্নতা পরিলক্ষিত। এই ভিন্নতা যদি জনসংখ্যায় ১% এর বেশি বর্তমান থাকে তবে তা পলিমরফিজম, এই উদাহরণে এটাক বলে সিঙ্গেল নিউক্লিউটাইড পলিমরফিজন (এসএনপি বা সংক্ষেপে স্নিপ)”। ধরুন, ঐ অবস্হানে থাকা G থাকা বিন্যাস জনসংখ্যায় ১% এর কম, তখন এটাকে মিউটেশন বলে। একটি জিনের ভিন্ন বিন্যাস থাকা অংশগুলোকে একটি ‘এলিল’ বলা হয়। আবার অনেকসময় অনেকগুলো এসএনপি সবসময় একসাথে একই বিন্যাস থাকে এবং বংশানুক্রমে বাহিত হয়। এরকম বিন্যাস হচ্ছে জিনোটাইপ। মানুষের জিনের সংখ্যা মাত্র ২০ হাজার থেকে কিছু বেশি, যেখানে ভুট্টা গাছের জিনের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজারের মতো। সুতরাং জিনের সংখ্যা বেশি থাকা মানেই আপনি উন্নত প্রাণী তা বোঝায় না। আগেই বলেছি ডিএনএ প্যাঁচানো। এই প্যাঁচানো অবস্হান হিস্টোন প্রোটিন সাহায্যে উচ্চতর কুন্ডলি আকার ধারণ করে। সেই কুন্ডলি গুলো আবার গুচ্ছ আকারে নতুন প্যাঁচ তৈরি করে। কোষ যখন বিভাজনের সময় তরল পদার্থ বের করে দেয় তখন এই প্যাঁচানো ডিএনএগুলো ২৩ জোড়া (৪৬ টি) আলাদা আকৃতি ধারণ করে। এই আকৃতিগুলোকে বলে ক্রোমোজোম। মলিক্যুলার বায়োলজিস্টরা এদেরকে আলাদা ভাবে সনাক্তকরার পদ্ধতি বের করেছে, একে বলে ক্যারিওটাইপিং। এখন এই আকৃতিগুলো ভিন্ন এবং একই প্রাণীতে একই সংখ্যক ও একই আকৃতির। শুধু তাই না, এই ক্রোমোজোমের বাহুর মতো অংশগুলোর নির্দিষ্ট স্হানে শুধু নির্দিষ্ট জিনই খুঁজে পাবেন। এরকম নির্দিষ্ট স্হানকে “লোকাস” বলে।

চিত্র ৮: একটি ক্রোমোজোম।

ক্রোমোজোম/ক্রোমোসোম:

চিত্র ৯: কোষে ক্রোমোজোমের অবস্হান।

ক্রোমোজোম হচ্ছে সুসজ্জিত ডিএনএর আকৃতি যা বংশগতির তথ্য বহন করে এবং কোষ বিভাজনের সময় দৃশ্যমান(সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্রে)। ক্রোমোজোম একটি লম্বা ডিএনএ(কোষের সম্পূর্ণ ডিএনএ নয়) ও প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত সজ্জিত আকৃতি। মানবদেহে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম রয়েছে, যার মধ্যে ২২ জোড়া অটোসোম ও এক জোড়া সেক্স ক্রোমোজোম। এক জোড়া সেক্স ক্রোমোজোম মানুষের লিঙ্গ নির্ণয় করে। ছেলেতে XY এবং মেয়েতে XX ক্রোমোজোম থাকে। (কিভাবে ছেলে ও মেয়ে হয় সেটা আরেক নোটে বলবো) এই ৪৬ জোড়া ক্রোমোজোম কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে অবস্হান করে (চিত্র ৯)। এই ৪৬ জোড়া ক্রোমোজোমের সকল তথ্যকে একসাথে জিনোম বলে।

জিনোম:
 জিনোম হচ্ছে একটি প্রাণীতে থাকা সকল বংশগতির তথ্যের সম্পূর্ণ সেট। জিনোম একটি প্রাণীর সকল বংশগতির তথ্য বহন করে। ইউক্যারিওট বা প্রকৃতকোষী (ঝিল্লিবদ্ধ নিউক্লিয়াস) প্রাণীতে জিনোম নিউক্লিয়াসে থাকে। জিনোম নিউক্লিয়াসে লম্বা ডিএনএর বিশেষ সজ্জিত আকৃতিতে থাকে যাকে বলে ক্রোমোজোম। মানবদেহে ৪৬ জোড়া ক্রোমোজোম রয়েছে। ক্রোমোজোমের ডে নির্দিষ্ট অঞ্চলের নির্দিষ্ট বিন্যাস প্রাণীর জন্য আরএনএ ও প্রোটিন তৈরি করে তাকে জিন বলে। জিন ডিএনএ দিয়ে তৈরি। ডিএনএ নিউক্লিওটাইড দিয়ে তৈরি। (মাইটোকন্ড্রিয়ার ডিএনএ কথা সহজে বোঝানোর জন্য উল্লেখ করা হলো না।)
বড় পোস্ট, খেই হারিয়ে ফেললে চলুন, আবার ছোট্ট একটা ছবিতে আবার মনে করার চেষ্টা করি। প্রাণী কোষ দিয়ে তৈরি, কোষে থাকে নিউক্লিয়াস, নিউক্লিয়াসে থাকা সকল বংশগতির তথ্য হচ্ছে জিনোম, জিনোম নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম নামক আকৃতিতে থাকে, ক্রোমোজোমে অসংখ্য জিন থাকে, জিন ডিএনএ দিয়ে তৈরি, ডিএনএ নিউক্লিওটাইড দিয়ে তৈরি।

চিত্র ১০: আসুন শেষে আরেকবার মগজ ঝালাই করে নিই। কোষে থাকে জিনোম, জিনোম থাকে ক্রোমাজোমের আকৃতিতে, ক্রোমোজোমে থাকে জিন, জিন ডিএনএ দিয়ে তৈরি।

পুনশ্চ:
  • ১. সহজভাবে বোঝানোর জন্য সহজ ভাষায় লিখার চেষ্টা করেছি। অনেক সায়েন্টিফিক টার্ম বাদ দিয়েছি। যথাসম্ভব বাংলায় লিখার চেষ্টা করেছি।
  • ২. আরো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে করতে পারেন বা মেসেজ জানাতে পারেন। জানার জন্য কোন লজ্জা বা ভয় থাকা উচিত না।
  • ৩. বড় পোষ্টের জন্য দু:খিত।
  • ৪. ভুল-ত্রুটি কমেন্টে উল্লেখ করলে খুবই খুশি হবো।
  • ৫. ব্যকরণগত ত্রুটি এবং ভুল শব্দের প্রয়োগ থাকতে পারে।
রেফারেন্স/লিংক/সূত্রসমূহ:
  1. ডিএনএর দৈর্ঘ্য সম্পর্কিত: http://www.sciencefocus.com/qa/how-… ; http://scienceline.ucsb.edu/getkey…. ; http://hypertextbook.com/facts/1998…
  2. নেচারের এই লিংকে বিভিন্ন সংজ্ঞাগুলো পাবেন: http://www.nature.com/scitable/defi…
  3. এনআইএইচ এর এই লিংকে সহজ সংজ্ঞা পাবেন: https://ghr.nlm.nih.gov/primer#basi…
  4. এনআইএইচ এর এই লিংকে বিস্তারিত পাবেন: https://www.genome.gov/26524120/chr…
  5. সংজ্ঞাগুলো উইকিপেডিয়া লিংক: https://en.wikipedia.org/wiki/DNA ; https://en.wikipedia.org/wiki/Gene; https://en.wikipedia.org/wiki/Chrom…; https://en.wikipedia.org/wiki/Genom… ;https://en.wikipedia.org/wiki/Singl…
  6. ছবিগুলো (প্রথমটি বাদে) ইন্টারনেট অবলম্বনে।

ধন্যবাদ 
মীর মুবাশ্বির খালিদ 
গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট, 
দি  জে. ডেভিড গ্লাডস্টোন  ইন্সটিটিউট,(অট'স ল্যাব, জিআইভিআই) 
সান-ফ্রান্সিসকো, ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা। 

পিএইচডি ক্যান্ডিডেট,
ইরাসমাস মেডিকেল সেন্টার,(মাহমুদি'স ল্যাব, বায়োকেমিস্ট্রি) 
রটারডাম,দি নেদারল্যান্ডস।

Comments

Avatar

mirmkhlaid

I am a postdoctoral researcher (Buck Institute, CA, USA) and did my Ph.D on Molecular Virology (SARS-CoV2 and ZIKV). Previously, background: Genetic Engineering & Biotechnology(BS & MS, DU, Bangladesh); Infection & Immunity (MSc, EUR, Netherlands). I have done research on molecular virology (HIV, Zika, HCV & HBV). My focuses are understanding host-viral interaction, viral evolution and disease modeling. Current research focuses are T-cell metabolism in HIV, and Immune Aging.

আপনার আরো পছন্দ হতে পারে...

5 2 votes
Article Rating
Subscribe
জানান আমাকে যখন আসবে -
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x