আপনার কি মন খারাপ? আপনি জানেন না কেন আপনার মন খারাপ? আপনার কি শরীর সুস্থ্ থাকার পরেও দুর্বল বা আলসে ভাব সব সময় কাজ করে? আপনার কি চারপাশের কোন কিছু ভাল লাগে না? আপনার চারপাশের ঘটা সব ঘটনাকে কি নেতিবাচক বা আপনার জন্য negative মনে হয়?
আপনি যদি কারণটা না জানেন যে কেন আপনার মন খারাপ, তাহলে এটাকে আমরা বলি ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন। পৃথিবীতে প্রায় ১০% মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় এই রোগে আক্রান্ত হয়। তত্ত্বীয় ভাবে বিষণ্ণতাকে ১৭ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তবে আজ আলোচনা করব কেবল ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন নিয়ে। কেন ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন হয়?
সাধারণত ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে আমাদের ব্রেনের তিনটা অংশ ডিসঅর্ডারের স্বীকার হয়।
১। Amygdala – এটা ব্রেনের সেই অংশ, যেটা নার্ভাস সিস্টেম বা ব্রেনে এলার্মের মত কাজ করে। ডিপ্রেশনে এই অংশটা খুব বেশি কাজ করা শুরু করে। এটার মূল কাজ চারপাশের নেতিবাচক জিনিসগুলো বাছাই করা। তাই ডিপ্রেশনের রোগীরা খুব বেশি নেতিবাচক চিন্তা করে বা চারপাশকে খুব বেশি negative ভাবতে থাকে। যা পরবর্তীতে তাদের সব কিছুর প্রতি ভয় ও অনীহা এক সাথে কাজ করতে শুরু করে। আর এটা বেশি কাজ করার জন্য আপনার মানসিক শক্তি কমতে থাকে।
২। Hippocampus – ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের রোগীদের ব্রেনের হিপোক্যাম্পাস অস্বাভাবিক ছোট হয়ে যায়। এই হিপোক্যাম্পাসের মূল কাজ কী তার সম্পর্কে আমরা এখনও তেমন কোনো পরিষ্কার ধারণা পাইনি। কিন্তু এই হিপোক্যাম্পাসের আকার দিয়েই ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন রোগ শনাক্তকরণ করা হয়, উন্নত দেশে। তবে এটা স্মৃতি সাজাতে সাহায্য করে বলে অনেকের ধারণা।
৩। Medial prefontal cortex – এটা ব্রেনের সামনের দিকের একটা অংশ, যা সাধারণত দুঃশ্চিন্তা তৈরি করে আপনাকে আগের থেকে সাবধান করে। কিন্তু ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন রোগীদের ক্ষেত্রে এটি অস্বাভাবিক মাত্রায় কাজ করে বলে রোগী বেশি চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে। যার জন্য চারপাশের কোন কাজে আগ্রহ পায় না।
মস্তিষ্কের এই তিনটা অংশে যখন এক সাথে সমস্যা সৃষ্টি হয়, ঠিক তখন মস্তিষ্ক ডোপামিন নিঃসরণ করলেও তা গ্রহণ করে না। কারণ, মস্তিষ্কের এই তিনটা অংশই এক হিসেবে আপনার সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করে। আর মস্তিষ্ক ডোপামিন গ্রহণ না করলে আপনি কোনো কিছুতেই আর মজা খুঁজে পাবেন না। আমাদের আনন্দ অনুভব করার কারণ হচ্ছে এই ডোপামিন। তাই ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের রোগীরা চারপাশের কোনো কিছুতেই আর আনন্দ খুঁজে পায় না। অথচ এই আনন্দ খুঁজে না পাওয়ার পিছনে বাস্তব জীবনে কোনো ঘটনাই দায়ী না। তাই মন খারাপ থাকলে এবং তার কারণ না খুঁজে পেলে, আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষণ্নতা প্রতিরোধী ওষুধ নিতে হবে …
সমস্যা হচ্ছে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন মানুষকে এত দুর্বল আর অলস করে ফেলে, এরা নিজের চিকিৎসা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং চিকিৎসা করতে আসতে চায় না। আশা করি আমি বোঝাতে পেরেছি, কেন বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে মন ভোলানো স্বান্তনার গল্প না শুনিয়ে ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, এটি সম্পূর্ণ মস্তিষ্কের কলাকৌশলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া একটা মস্তিষ্কজনিত রোগ। এটি সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডারের মধ্যে পড়ে না।
বিঃদ্রঃ এই লেখাটি দুঃখবিলাসী মানুষের জন্য উৎসর্গ করলাম।
আমি এই রোগে আক্রান্ত। আমার কী ওষুধ নেয়া উচিত? বা কী করা উচিত?
ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে অবশ্যই মেডিসিন নেওয়া উচিৎ … কারন এটা ক্লিনিকাল রোগ
খুব ভালো পোস্ট।
‘ক্লিনিকেল ডিপ্রেশন’এর ওষুধএর নাম বলবেন প্লিজ।
এভাবে পাবলিক প্লেসে মেডিসিনের নাম বলা তো নিষেধ । তবে প্রজাক SSIR এর একটা ভাল এন্টিদিপ্রেস্ট বাংলাদশে পাবেন prodep 20 mg নামে যেটা গ্রউপ নেম ফ্লক্সজেটিনের । সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খেতে হবে , যদি আপনি সারাদিন ক্লান্তবোধ করেন
সম্ভবত উৎসর্গটি যথাযথই হয়েছে (দুঃখবিলাসি মানুষের জন্য)
লেখাটাতে কিছু লক্ষণ /বৈশিষ্ট্য /ক্ষতিকর দিক দেখলাম কিন্তু সমাধানের পথটি পরিষ্কার পেলাম না, কিছু ওষুধের কথা বলা হলেও ওষুধের নাম উল্লেখ নেই ।
বিষয়গুলা সমন্ধে আরেকটু পরিষ্কার হলে একটুখানি উপকৃত হতাম।
পাবলিক প্লেসে এসব মেডিসিনের নাম লেখা নিষেধ । আর ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে আসলে মেডিসিন নেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই । এই রোগে কাউন্সিলিং বা মেডিকেশনে কোন কাজ দেয় না । এটাই করনিয় যে ,মেডিসিনের জন্য সাইকলজিস্ট বা psychiatrist দেখানো প্রথম এবং প্রধান করনিয় । এর বাইরে কোন সলিয়েশন ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে নেই । ধন্যবাদ
Dopamine নিস্বরণ করে এমন কোনো ঔষধ আছে কি?
থাকলে দয়া করে বলবেন?
আমি Prodep, Nexcital জাতীয় ঔষধ খেয়েছি
অনেক ডক্টর দেখাইসি তারা মুলত ঘুমের ঔষধ ই দেয়
ডোপামিন উতপাদন করার কোনো ঔষধ থাকলে দয়া করে সাজেষ্ট করুন
পাবলিকে না পারলে মেইলে জানাতে পারেন।
আমার মেইল আইডিঃ djismail1993@gmail.com
এই ক্লিনিক্যালডিপ্রেশন রোগ টা অতিরিক্ত মানুসিক চাপ থেকে হতে পারে?
অতিরিক্ত মানুসিক চাপ থেকে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন হতে পারে?
ঠিক একইরকমভাবে আমাদের মস্তিষ্কও তার কার্যক্ষমতা বলে মানসিক চাপ সহ্য করে। কিন্তু সেই চাপ যদি বহুদিন ধরে একটানা চলে তাহলে সেই অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার শক্তি আর মস্তিষ্কের থাকে না। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের নিউরোপ্লাসটিসিটি নামক ক্ষমতাও হ্রাস পায়। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যাবলী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চাপ সহ্য করার জন্য মস্তিষ্কে নতুন নিউরাল পাথওয়ে বা রাস্তা গড়ে ওঠে। কিন্তু সীমাহীন চাপ মস্তিষ্কে নিতুন নিউরাল পাথওয়ে গঠনের ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এর ফলে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়।
অতিরিক্ত মানুসিক চাপ এ ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন হতে পারে…??