না, এখানে কোন গুরুগম্ভীর আলোচনা নেই, নেই কোন শেখার সুযোগ। আমার এই ছোট্ট লেখাটার মূল উদ্দেশ্য আসলে একটা আইডিয়া শেয়ার করা। কিভাবে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে আরেকটু সহজ করে তুলতে পারি তারই একটা ছোটখাটো পরিকল্পনা এখানে শেয়ার করা হয়েছে। আমি বরাবরই প্রযুক্তিপ্রেমী। আমি সবসময়ই চেয়েছি আমাদের জীবনকে সহজতর করার জন্য কিছু বানানো যায় কিনা যেটা অবশ্যই কাজে লাগবে। টাইটেলে লেখা “Department 2.0” আসলে একটা স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন প্রজেক্ট বা সহজ ভাষায় অ্যাপ। এমন একটা অ্যাপ যেটা শুধু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকেই ডিজিটালাইজড করবে না বরং গতিশীলও করবে অনেকটাই। না এটা আমি এখনো আমি তৈরি করিনি , হয়ত সুদূর ভবিষ্যতে তৈরি করে ফেলব। তবে আমার এখানে লেখার মূল উদ্দেশ্য আসলে এই ধরণের অ্যাপের আইডিয়াটা যাতে অন্যরাও কাজে লাগায় এবং প্রযুক্তির ভালো দিকটার যথোপযুক্ত ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
আইডিয়াটা সিম্পল, আমরা একটা স্মার্টফোন এপ্লিকেশন বা অ্যাপ বানাবার চিন্তা করছি যেটাতে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্টের একজন ছাত্রের যা কিছু লাগে তার প্রায় সবকিছুই থাকবে। তবে শুধুমাত্র ছাত্রই নয় এতে শিক্ষকদের জন্যও কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়া যেতে পারে।
প্রথমেই বলা যেতে পারে সিলেবাসের কথা। সিলেবাস জিনিসটা কখন কোথায় লাগে বলাটা কঠিন। আবার দেখা যায় সিলেবাস উল্টোতে উল্টোতে জিনিসটা একেবারে নষ্টও হয়ে পড়ে। এজন্য আমরা অ্যাপের মধ্যে পুরো চার বছরের অনার্স ও মাস্টার্সের সিলেবাস দেয়া থাকবে। প্রত্যেক সেমিস্টার বা ইয়ারের জন্য আলাদা সেগমেন্ট থাকবে। যে যে সেমিস্টারের বা ইয়ারের ছাত্র সে সেই সেমিস্টার বা ইয়ারে ক্লিক করে নিজের কোর্সগুলো দেখতে পাবে। কোর্সগুলোও এমনভাবে থাকবে যাতে স্ক্রল যতটা সম্ভব কম করতে হয়। বুটস্ট্র্যাপ কলাপ্স বা জাম্প(কোডিংয়ের সময়) এই ধরনের ফাংশনগুলো আমরা ব্যবহার করতে পারি। প্রত্যেক কোর্সের জন্য প্রয়োজনীয় বইয়ের নামগুলো ও তাদের পিডিএফ লিংক জুড়ে দেয়া হবে।
যাদের ল্যাব বা প্র্যাকটিকাল আছে তাদের ক্ষেত্রে অ্যাপে প্রত্যেক এক্সপেরিমেন্টের নাম এবং এটা কিভাবে করতে হবে সেই সংক্রান্ত ডকুমেন্টের লিংক যুক্ত করা একটা সেগমেন্ট থাকবে। সম্ভব হলে ইউটিউবের ভিডিও Embed করা যেতে পারে যাতে শিক্ষার্থীরা ডাটা কানেকশন অন করেই ভিডিও যেকোন সময় দেখে নিতে পারে।
শিক্ষকদের ফোন নম্বর ও মেইলিং এড্রেস নিয়ে একটা অপশন রাখা যেতে পারে। যাতে কনট্যাক্ট নম্বরের পাশাপাশি ওই শিক্ষকের গবেষণা ক্ষেত্র ও সম্ভব হলে তার প্রকাশিত গবেষণাপত্রগুলোর লিংকও যুক্ত করা যেতেই পারে। এতে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষকদের ফোন নাম্বার আলাদাভাবে স্মার্টফোনে সেভ করার কষ্ট কমবে।
পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ডিপার্টমেন্টের যে কোনো নোটিশ তাৎক্ষণিকভাবে সকল ছাত্রছাত্রীদের (যারা অ্যাপটি ইনস্টল করেছে) পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় নোটিশও একইভাবে পৌঁছানো সম্ভব। এটা শিক্ষকদের জন্যও অনেক কাজে দিতে পারে যদি আমরা এখানে শিক্ষকদের জন্য আলাদা একটা অপশন রাখি যেটাতে তারা যেকোন তথ্য ছাত্রদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে পারবেন পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে। আবার ধরুন কোন শিক্ষক ক্লাস নেবেন না, কিংবা ছুটিতে গেছেন, আজ আসবেন না, সেই কথাও অ্যাপে ঢুকে টিচার্স অপশনে গিয়ে একটা পোস্ট করলেই সব ছাত্রছাত্রীর কাছে পুশ নোটিফিকেশনের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে।
মোটামুটি বলা যায় একটা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই একটা স্মার্টফোন অ্যাপ দিয়েই করে ফেলা যাবে। এজন্যই আমি এটার নাম দিয়েছি “Department 2.0” । এই ধরনের অ্যাপ বানানো খুবই সম্ভব। আমি নিজেও এর কাছাকাছি একটা অ্যাপ বানিয়েছিলাম। তখন থেকেই ভেবেছি কিভাবে আরো উন্নতিসাধন করা যায়। আমি আশা করব এই ধরনের অ্যাপ আমাদের দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা তৈরির চেষ্টা করবে। এটা হয়তো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে না, তবে এর আরো উন্নয়ন সাধনের রাস্তা তো এর ব্যবহারকারীদের হাতেই থাকবে। কে জানে তারা হয়তো আরো ভালো আইডিয়া বের করে ফেলবে যেটা হয়তো আরো ফলপ্রসূ হবে।
এ সম্পর্কে আরো কোন তথ্য জানতে কিংবা যেকোন মতামত দিয়ে আমাকে ই-মেইল করতে পারেন(proyashzaman@gmail.com)।
ধন্যবাদ।
চমৎকার আইডিয়া! অবশ্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব এপ থাকা এখন সময়ের দাবী।