মানুষের মধ্যে অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে চোখের ছানি। আর এটা নিয়ে চমৎকার একটা সমাধান এনে দিলো বিজ্ঞান!
শুরুতে আপনাদেরকে একটা গল্প বলি –
বিবিসি’র হিউম্যান প্ল্যানেট অনুষ্ঠানের মধ্যে একটা পর্বে দেখেছিলাম, নেপালের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক বুড়ি মহিলা প্রায় অন্ধ হয়ে গেছেন। কারণ, তার বাড়ি পাহাড়ের অনেক ওপরে। সূর্যের আলো তার চোখে প্রবেশ করেছে নিচু অঞ্চলের চেয়ে বেশি। এটা কোনোভাবে তার চোখে ছানির বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে দিয়েছে।
আশেপাশে অনেক মাইলের মধ্যে কোনো ডাক্তার নেই। কাঠমাণ্ডু থেকে এক ডাক্তার আসেন সপ্তাহে একদিন কি দুদিনের জন্য, তাও সেই গ্রামে না, পাহাড় ভেঙ্গে আরো প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামে। মহিলার পক্ষে সেখানে যাওয়া সম্ভব না। তাই, নিজের পিঠে করে সেই বৃদ্ধাকে ওখানে নিয়ে যাবে বলে ওয়াদা করলো এক বন্ধু। এবং সত্যি সত্যি নিয়েও গেলো ডাক্তারের সেই ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে।
ডাক্তার অপারেশন করলেন, মহিলা সুস্থ হলেন। তখনই ভাবছিলাম, এতো সহজ একটা জিনিসের আরো সহজ সমাধান থাকা উচিৎ। তাহলে এই মহিলাকে কষ্ট করে এতো দূর আসতে হতো না।
গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ এর জুলাই মাসে ২৫ জন বিজ্ঞানীর একটি দল নেচার পত্রিকায় একটা লেখা জমা দিয়েছিলেন। ওদের লেখার মূল বক্তব্য ছিলো, ওরা এমন একটা ড্রপ বের করেছেন যেটা চোখের ছানিতে প্রোটিনের অগ্রগতিকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেবে। প্রায় এক বছর পরে এসে, ২০১৫ এর জুনে সেটা নেচার গ্রহণ করেছে, এবং ২২শে জুলাই সেটাকে প্রকাশ করেছে।
নেচারে প্রকাশিত প্রবন্ধের সারাংশে বলা হয়েছে, মানুষের চোখ বিভিন্ন স্ফটিকসম্পন্ন প্রোটিন দিয়ে তৈরি। স্ফটিক কারণ, স্বচ্ছতার জন্য এই জিনিসটা দরকার। ঐ প্রোটিনগুলোর সামঞ্জস্যের মধ্যে সমস্যা হলেই এমন একটা স্তর তৈরি হয়, যেটা পানি সহ্য করতে পারে না। ঐ অঞ্চলেই প্রোটিনগুলো জমাট বাঁধে, এবং ছানি তৈরি করে। যদিও কেউ জানে না, ঐ প্রোটিনগুলোর সামঞ্জস্যে কেন সমস্যা তৈরি হয়; তবে বিজ্ঞানীরা এটাকে বয়সের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। আমেরিকার জাতীয় চক্ষু ইন্সটিটিউট বলেছে, ৮০ বছরের ওপরে অর্ধেক আমেরিকানই এই সমস্যায় ভুগে।
তাদের ড্রপটার মূল উপাদান ল্যানোস্টেরল। আর এই ড্রপটা ঐ প্রোটিনের জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াটাকে উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেবে। আর এটার প্রভাব হবে অভাবনীয়। চোখের ছানি সরাতে হলে মানুষকে এখন আর অপারেশন টেবিলে যেতে হবে না; নিজ ঘরে বসেই সুস্থ হয়ে যেতে পারবে।
what is name of that drop?
জেনেরিক নাম আছে। এখনো বাণিজ্যিক নাম নেই তো।