আমাকে দাফন কোরো, যেন আমিও ফসিল হতে পারি – স্কট রিচার্ডসন
আমার এক ফসিলবিজ্ঞানী বন্ধু বললো, যদি পৃথিবীর সকল প্রাণীর সকল হাড় সংরক্ষিত হতো, তাহলে আমাদের ভূ-পৃষ্ঠ ঢেকে যেতো ৩ কিলোমিটার পুরু প্রাণীর হাড়ের স্তরে। কথাটা কি সত্য? এটা প্রমাণ করার কোনো উপায় নেই, কারণ বাস্তব জগতে প্রাণীর শরীরের খুব ছোট্টো একটা অংশ ফসিলে পরিণত হয়। আর লক্ষ লক্ষ বছর যেতে দিলে সেখান থেকে নতুন শিলা তৈরি হয় যেখানে ফসিলগুলো lithify (পাথরে পরিণত) হয়, রুপান্তরিত হয়, সাবডাকশনের মধ্যে দিয়ে যায়, এবং হারিয়ে যায় দৃষ্টির অগোচরে।
একটা এস্টিমেট থেকে দেখা গেছে যে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ প্রাণী ফসিলে রুপান্তরিত হতে সক্ষম। অন্যান্য প্রাণীরা এতো নরম শরীরের অধিকারী যে, সেখানে সংরক্ষণ করার মত কোনো অংশ নেই। যেমন, হাঙ্গরদের দাঁত ফসিল রেকর্ডের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। কিন্তু ওদের হাড় কার্টিলেজ দিয়ে তৈরি, এবং ফসিল হয়না বললেই চলে। কয়েকটা ভার্টেব্রি ছাড়া “মেগালোডন” এর কংকালের কোনো অংশই আমরা পাইনি। তাই বলতেও পারছিনা, পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হাঙরের সাইজ আসলে কতটুকু ছিলো।
অনুমান করা বলা হচ্ছে, যে নয়টা ফাইলা (ফাইলামের বহুবচন) পৃথিবীর বুকে চরে বেড়িয়েছে, তাদের মধ্যে ৮৫ থেকে ৯৭ শতাংশ কোনোদিনই ফসিলে রুপান্তরিত হয়নি। ফসিল জিনিসটা আসলেই দুষ্প্রাপ্য! আর ওদেরকে খুঁজে পাওয়াটাও সহজ কথা না।
স্কট রিচার্ডসন, একজন কৌতুহলী ফসিল অন্বেষণকারী। উনি একজন জিওলজিস্ট, এবং তার শখ হচ্ছে ব্যুরো অফ ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টের হয়ে ডায়নোসরের ফসিল বের করা। শখই বলতে হবে, কারণ তিনি এই কাজের জন্য বছরে মাত্র ৩০ হাজার ডলার পেয়ে থাকেন (মিডল ক্লাস ফ্যামিলিরা ৪৫-৫০ হাজার ডলার আয় করে বছরে)……… উনি টিরানোসরাস এর একটি নতুন প্রজাতি বের করেছেন ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণ দিকে, যেটার নাম দেয়া হয়েছে Lythronax argestes – the King of Gore!
ফসিলের প্রতি তার এই ভালোবাসা কি তাকে অমর করে রাখতে পারবে? উনি বলেছেন, উনি একটা জলাভূমিতে মরতে চান, যাতে দ্রুত ফসিলে রুপান্তরিত হতে পারেন। যাতে, ৮০ মিলিয়ন বছর পরে ভবিষ্যতের কোনো এক ফসিলবিজ্ঞানী তার খুলি হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে বলে, “হুম, এই পার্টটা কই গিয়ে লাগবে?”
আশা করছি, এতো এতো বছর পরেও, সেখানে ফসিল বিজ্ঞানী থাকবে, যাদের ধৈর্য হবে স্কট রিচার্ডসনের মত; যারা সাহসিকতার সাথে খুঁজে বেড়াবে দুষ্প্রাপ্য আর মূল্যবান ফসিল।
******
References
Original post by the Earth Story – by Annie R.
Image: Bethany Mollenkof / Los Angeles Times
See also: 1, 2, 3, 4.