মানুষের ইন্দ্রিয়সমূহ নিয়ে চিন্তাভাবনা- প্রথম পর্ব

ভূমিকা

মানুষ আদিকাল থেকেই অনুভূতি ও ইন্দ্রিয় নিয়ে বরাবরই কৌতুহলী ছিলো; তার উপর যদি এমন কোনো কিছুর অনুভূতির ধারণা তাদের মাথায় আসে যা আপাত জানা ইন্দ্রিয়সমূহ দ্বারা উপলব্ধি করা সম্ভব নয় বলে মনে হয় তাহলে তো কথাই নেই! মানুষ স্থুলভাবে জেনে এসেছে যে বিভিন্ন ধরণের অনুভূতি প্রাপ্তির জন্য আমাদের মোট পাঁচটি ইন্দ্রিয় (চোখ, কান, নাক, জিহ্বা, ত্বক/স্পর্শ) রয়েছে, আর এখান থেকেই মানুষের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের ধারণার উদ্ভব হয়েছে। অর্থাৎ, এই পাঁচটি ইন্দ্রিয় দ্বারা যেসব অনুভূতি পাওয়া যায় বলে আমরা জানি, তার বাইরে কোনো কিছু অনুভূত হলে মানুষ ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কেই দায়ী করে এসেছে।

আবার অনেকে বলে থাকেন ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় হলো মন এবং ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত অনভূতি বলতে বুঝায় যা প্রচলিত কোনো গ্রাহকের (receptor) সাহায্য ছাড়া সরাসরি মনের মাধ্যমে অনুভূত হয়! এই ধরনের অনুভূতির ধারণার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – ভবিষ্যত দেখা/অনুমান করা, অশরীরীদের সাথে যোগাযোগ (যেমনটি দেখানো হয়েছে ১৯৯৯ সালের হলিউড মুভি “The Sixth Sense”-এ), ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকেও কোনো ঘটনা ঘটার সময় তা অনুভূত হওয়া, ইত্যাদি। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলতে প্রচলিতভাবে যা বুঝায় তা আসলে আছে কি নেই, সেটা নির্ণয়ে যাবো না আপাতত; লিখাটির মূল বিষয় হলো- আসলেই কি আমাদের শুধুমাত্র পাঁচটিই ইন্দ্রিয় রয়েছে? নাকি তা একটি ভ্রান্ত ধারণা মাত্র? আর হ্যাঁ, পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের ধারণা ভুল হলে কিন্তু “ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়” শব্দটি যেই প্রচলিত অর্থে ব্যবহৃত হয় সেই অর্থে তাকে আর ব্যবহার করা উচিত হবে না; তার পরিবর্তে ভিন্ন শব্দ ব্যবহার করাটাই উত্তম হবে।

আমাদের পরিচিত ইন্দ্রিয়সমূহ

সাধারণত ইন্দ্রিয় বলতে বুঝায় “এমন একটা ব্যবস্থা (system) যেটি সংজ্ঞাবহ (sensory) কোষগুচ্ছ দ্বারা গঠিত, যে কোষগুলো একটি নির্দিষ্ট ভৌত ঘটনার (physical phenomenon) প্রতি সাড়া দেয় (respond) এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের (central nervous system) নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলের সাথে সম্পর্কযুক্ত (যেখানে সংকেতগুলো গৃহীত ও অনুদিত হয়)”। এবার আসি আসল কথায়। “মানুষের শুধুমাত্র পাঁচটি ইন্দ্রিয় রয়েছে” – কথাটি ভুল! মানুষের পাঁচটির চেয়ে অনেক বেশী ইন্দ্রিয় রয়েছে এবং অধিকাংশ গবেষক মনে করেন সংখ্যাটি বিশ বা তারও বেশী! সাধারণত যেই পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের কথা আমরা জেনে এসেছি, সেগুলো হলো–

১। দর্শণেন্দ্রিয় (Opthalmoceptor)
২। শ্রবণেন্দ্রিয় (Audioceptor)
৩। স্বাদেন্দ্রিয় (Gustaoceptor)
৪। ঘ্রাণেন্দ্রিয় (Olfacoceptor)
৫। স্পর্শেন্দ্রিয় (Tactioceptor)

প্রচলিত পঞ্চইন্দ্রিয়ের ধারণা

আর যেসব ইন্দ্রিয় সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই সেগুলো এবং ইন্দ্রিয় সম্পর্কে আমাদের ভাবনার সীমাবদ্ধতাসমূহ তিন পর্বের এই লিখার মূল বিষয়। তবে লেখাটিকে পূর্ণতা প্রদানের চেষ্টায় সেগুলোর পাশাপাশি প্রায় সকলের জানা ইন্দ্রিয়গুলোকেও সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেছি। গবেষকেরা যেসব মানব ইন্দ্রিয় সম্পর্কে ইতোমধ্যেই অবগত আছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইন্দ্রিয়গুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করছি–

১। দর্শনেন্দ্রিয় (Opthalmoceptor): মূলত চোখের রেটিনার (retina) দুটি ভিন্ন ধরনের গ্রাহক কোষ দর্শনের জন্য দায়ী, যথা- কোন কোষ এবং রড কোষ। কোন কোষ আমাদের চোখে রঙের অনুভূতির জন্য দায়ী, তবে উজ্জ্বলতার প্রতি কম সংবেদনশীল বলে মৃদু আলোর জন্য উপযোগী নয়। অন্যদিকে রড কোষ উজ্জ্বলতার প্রতি খুবই সংবেদনশীল বলে মৃদু আলোতে দর্শনের জন্য দায়ী তবে রঙের অনুভূতি প্রদানে অক্ষম। এই কোষগুলো অপটিক স্নায়ুর (optic nerve) সাথে সংযুক্ত থেকে তার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে তথ্য প্রেরণ করে যা সেখানে প্রক্রিয়াকরণের (processing) মাধ্যমে আমরা দর্শনের অনুভূতি লাভ করি।

চোখের কোন কোষ এবং রড কোষ

চোখের কোন কোষ এবং রড কোষ


২। শ্রবণেন্দ্রিয়
(Audioceptor): কোনো মাধ্যম হতে (যেমন বায়ু অথবা পানি) কম্পন সনাক্তকরণ এবং মস্তিষ্কে তার অনুবাদই হচ্ছে শ্রবণ। যখন কোনো কম্পন কানের পর্দার (ear drum) সংস্পর্শে আসে তখন তা সেখানেও কম্পনের সৃষ্টি করে এবং তা অন্তঃকর্ণে (inner ear) অবস্থিত কক্‌লিয়া (cochlea) নামক একটি প্যাঁচানো নালিকার মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে সংলগ্ন স্নায়ুর মাধ্যমে তার সংকেত (signal) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরিত ও অনূদিত হয়। তবে প্রাণীজগতের একটা নির্দিষ্ট প্রজাতি শব্দের কম্পাঙ্কের একটা নির্দিষ্ট পরিসরই (range) সনাক্ত, অনুভব, ও অনুবাদ করতে সক্ষ্মম। মানুষের ক্ষেত্রে তা ২০ থেকে ২০০০০ হার্টজ।

শ্রবণেন্দ্রিয়ের অবস্থান ও গঠন

শ্রবণেন্দ্রিয়ের অবস্থান ও গঠন


৩। স্বাদেন্দ্রিয়
(Gustaoceptor):
আমরা মৌলিকভাবে পাঁচ রকমের স্বাদ পাই; যথা- মিষ্টি, নোনতা, টক, তেতো, এবং উমামি (এমিনো এসিড গ্লুটামেট এর স্বাদ যা মাংস ও মসলাদার খাদ্যে উপস্থিত থাকে)। বাকি স্বাদগুলো এইসব স্বাদের সমন্বয়েই অনুভূত হয়। এটা নিয়েই বিতর্ক আছে যে স্বাদেন্দ্রিয় একাই পাঁচটি ইন্দ্রিয় নিয়ে গঠিত, কারণ এই পাঁচ রকমের স্বাদ  জিহ্বার স্বাদ-কোরকের (taste bud) পাঁচটা আলাদা আলাদা গ্রাহকের মাধ্যমে গৃহীত হয়। তবে সাধারণত এটিকে একটা ইন্দ্রিয় হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এই ইন্দ্রিয় হতে সংলগ্ন স্নায়ু তন্তুর (nerve fiber) মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরিত সংকেত মূলত স্বাদ-কোরকের গ্রাহকে খাদ্যকণার রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে উৎপন্ন হয়।

 

স্বাদকোরকের গঠন

স্বাদ-কোরকের গঠন


৪। ঘ্রাণেন্দ্রিয়
(Olfacoceptor):
এটি আমাদের ঘ্রাণের অনুভূতি জাগায়। নাকের নাসারন্ধ্রের অভ্যন্তরে কিছু বিশেষ (specialized) সংবেদী কোষ এই কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করে। যখন কোনো কিছুর অণু এই কোষগুলোর নির্দিষ্ট গ্রাহকে যুক্ত হয় তখন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে সঙ্কেত যায় এবং ঘ্রাণের অনুভূতি জন্মায়। এই অণুগুলো মূলত তিন ধরনের হয়; যথা- উদ্বায়ী ক্ষুদ্র গন্ধযুক্ত অণু (Volatile small molecule odorants), অনুদ্বায়ী প্রোটিন (non-volatile proteins), ও অনুদ্বায়ী হাইড্রোকার্বন (non-volatile hydrocarbons)।

ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের কার্যপদ্ধতি

ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের কার্যপদ্ধতি


৫। স্পর্শেন্দ্রিয়
(Tactioceptor): স্পর্শেন্দ্রিয় আমাদের ত্বকে উপস্থিত বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের সমন্বয়ে গঠিত। এটি আমাদের ত্বকে যান্ত্রিক চাপ (mechanical pressure) ও বিকৃতির (distortion) প্রতি সাড়া প্রদান করে। আমাদের ত্বকে প্রধানত চার ধরনের গ্রাহক এই কাজে নিয়োজিত, যথা- তলাকৃতি কণিকা (Lamellar corpuscles), স্পর্শগ্রাহ্য কণিকা (Tactile corpuscles), স্পর্শগ্রাহ্য চাকতি (Tactile discs), এবং রাফিনি কণিকা (Ruffini corpuscle)। এই গ্রাহকগুলো প্রান্তীয় (peripheral) স্নায়ু তন্তুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে সংকেত প্রেরণ করে যা আমাদের মধ্যে স্পর্শের অনুভূতি জাগায়।

ত্বকে স্পর্শের বিভিন্ন ধরণের গ্রাহক

ত্বকে স্পর্শের বিভিন্ন ধরণের গ্রাহক


৬। চাপেন্দ্রিয়
(Baroceptor): চাপেন্দ্রিয় যে কোনো মেরুদণ্ডী প্রাণীর ধমনীতে অবস্থান করে। চাপেন্দ্রিয় সাধারণত রক্তচাপের প্রতি সংবেদনশীল এবং রক্তচাপজনিত তথ্য সবসময় কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণের মাধ্যমে স্বাভাবিক রক্তচাপ বজায় রাখতে একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এগুলো মূলত রক্তচাপের পরিবর্তনের সাথে সাথে ধমনীগাত্রের সংকোচন/প্রসারণের প্রতি সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করে।

হৃদপিন্ডে চাপগ্রাহকের অবস্থান

হৃদপিন্ডের ধমনীতে চাপ-গ্রাহকের অবস্থান


৭। তাপেন্দ্রিয়
(Thermoceptor): তাপেন্দ্রিয় নিরাপদ (innocuous) পরিসরের মধ্যে তাপমাত্রার পরম ও আপেক্ষিক পরিবর্তনের সংকেত প্রেরণে সক্ষম। মজার বিষয় হচ্ছে গরম ও ঠাণ্ডার অনুভূতি ভিন্ন ধরনের গ্রাহক দ্বারা সম্পন্ন হয়। স্তন্যপায়ী জীবের ক্ষেত্রে মনে করা হয় যে গরমের অনুভূতির জন্য তাদের প্রান্তীয় সংজ্ঞাবহ ব্যবস্থার মায়োলিন আবরণবিহীন C-তন্তু (Unmyelinated C-fibers) দায়ী, আর ঠাণ্ডার অনুভূতি প্রদানে এই কাজ সম্পন্ন করে প্রান্তীয় সংজ্ঞাবহ ব্যবস্থার মায়োলিন আবরণবিহীন সি-তন্তু ও পাতলা মায়োলিন আবরণযুক্ত A ডেলটা তন্তু (thinly myelinated A delta fibers)। তাপেন্দ্রিয়কেও একাধিক ইন্দ্রিয়ের সমতুল্য ধরা হয়; তবে তা শুধু এই জন্য নয় যে গরম ও ঠাণ্ডার অনুভূতির জন্য ভিন্ন ধরনের গ্রাহক বিদ্যমান, তাপমাত্রার পরিবর্তন সনাক্তকরণের কৌশলের ভিত্তিতেও ভিন্ন ধরনের গ্রাহক আছে। নিজের দেহতাপ পর্যবেক্ষণ (monitoring) করা তাপেন্দ্রিয়ের প্রধান কাজ।

ত্বকের তাপ-গ্রাহক তন্তুসমূহ

ত্বকের তাপ-গ্রাহক তন্তুসমূহ


৮। চুলকানেন্দ্রিয়
(
Pruriceptor): শুনতে অদ্ভুত শোনালেও সত্যি যে চুলকানির জন্য সম্পূর্ন আলাদা ইন্দ্রিয় রয়েছে! এটিও ত্বকের প্রান্তীয় স্নায়ু ব্যবস্থার C-তন্তুর কাজ, তবে এই C-তন্তুগুলো গঠনগত দিক থেকে তাপেন্দ্রিয়ের C-তন্তুগুলোর মত হলেও কৌশলগত দিক থেকে ভিন্ন। আমাদের দেহের মোট C-তন্তুর মাত্র ৫% এই ধরনের C-তন্তু দখল করে। সাধারণত এই তন্তুগুলোতে বিভিন্ন ধরণের যান্ত্রিক, তাপীয়, ও রাসায়নিক উদ্দীপনার (stimulation) কারণেই চুলকানি অনুভূত হয়। তন্তুগুলো এইসব উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছে দেয় এবং সেখান থেকে চুলকানি প্রতিবর্তী সাড়ার (scratching reflex response) উৎপত্তি হয়। যখন আমরা চুলকায় তখন ত্বকের একই স্থানের স্পর্শেন্দ্রিয় ও ব্যথান্দ্রিয়ের বিভিন্ন গ্রাহককে উদ্দীপনা প্রদান করি যা ওই স্থানের চুলকানির অনুভূতিতে ব্যাঘাত ঘটায়, তাই চুলকালে আমাদের চুলকানি প্রশমিত হয়। তবে চুলকালে আসলে চুলকানি থেকে সাময়িক মুক্তি ঘটে মাত্র। চুলকানেন্দ্রিয়ের মূল কাজ হলো আমাদের ত্বকে বা কলাতে (skin or tissue) ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি নির্দেশের মাধ্যমে আমাদের সতর্কতা প্রদান করা যাতে করে আমরা যথাসময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।

চুলকানির সংকেতের গতিপথ

চুলকানির সংকেতের গতিপথ


৯। ব্যথান্দ্রিয়
(Nociceptor): একসময় বিশেষজ্ঞরা মনে করতেন যে স্পর্শের মত অনুভূতিগুলোর অতি আধিক্যের কারণেই ব্যথা অনুভূত হয়, কিন্তু পরে ব্যথান্দ্রিয়ের নিজস্ব স্বতন্ত্র সংজ্ঞাবহ ব্যবস্থা খুঁজে পাওয়া যায়। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ব্যথান্দ্রিয়ের গ্রাহকগুলো মূলত কিছু সংজ্ঞাবহ নিউরন যেগুলো বিভিন্ন ধরণের বাহ্যিক/আভ্যন্তরীণ ক্ষতিকর (noxious) উদ্দীপনা গ্রহণে সক্ষম, এবং এরা শরীরের প্রায় সব অঞ্চলেই অবস্থান করে। অবস্থানের ভিত্তিতে ব্যথার অনুভূতি প্রদানের জন্য তিন ধরনের গ্রাহকের উপস্থিতি রয়েছে আমাদের শরীরে; যথা- ত্বকীয় (cutaneous), কায়িক (somatic),  এবং আন্তরযন্ত্রীয় (visceral)। এরা যথাক্রমে ত্বক, অস্থি, এবং আভ্যন্তরীণ অঙ্গে অবস্থিত।

ত্বকের ব্যাথা-গ্রাহক (বামে) ও ব্যাথার সংকেতের গতিপথ (ডানে)


১০। আত্মেন্দ্রিয়
(Proprioceptor): এই ইন্দ্রিয়টি খুবই চমকপ্রদ। আমরা এই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমেই শরীরের বিভিন্ন অংশের আপেক্ষিক অবস্থান বুঝতে পারি। উদাহরণস্বরুপ বলা যায় যে এই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমেই আপনি চোখ বন্ধ করেই আঙ্গুল দিয়ে আপনার নাক/কনুই ঠিকঠাক স্পর্শ করতে পারেন, কিংবা আপনার পিঠের ঠিক জায়গাতেই চুলকান। 

 

 

আত্মেন্দ্রিয়ের ভিন্ন ভিন্ন ধরণের গ্রাহক

আত্মেন্দ্রিয়ের ভিন্ন ভিন্ন ধরণের গ্রাহক

এই ইন্দ্রিয়টি ভিন্ন ভিন্ন গ্রাহকের সাহায্যে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন অনুভূতির সমন্বয়ের মাধ্যমেই শরীরের বিভিন্ন অংশের আপেক্ষিক অবস্থান বুঝতে সহায়তা করে, তাই এটিকেও একাই একাধিক ইন্দ্রিয়যুক্ত বলে গণ্য করা হয়। মূলত তিন ধরণের গ্রাহক নিয়োজিত রয়েছে এই সমন্বয়মূলক কাজে। যথা- পেশীতে অবস্থিত পেশী মাকুযন্ত্র (muscle spindle), কন্ডরাতে (tendon) অবস্থিত গলগি কন্ডরা অবয়ব (golgi tendon organ), এবং অস্থিসন্ধিতে অবস্থিত তন্তুময় ঠুলি (fibrous capsule)। পেশী মাকুযন্ত্র পেশীর দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন সম্পর্কিত, এবং গলগি কন্ডরা অবয়ব ও তন্তুময় ঠুলি পেশীর টানের ও অস্থিসন্ধির কোণের পরিবর্তন সম্পর্কিত তথ্য কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে যা সেখানে প্রক্রিয়াজাত হয়। আবার এই পেশী মাকুযন্ত্রই ফুসফুস, পাকস্থলী কিংবা অন্ত্রের (intestine) মত অভ্যন্তরস্থ অঙ্গের পেশীতে অবস্থান করে পীড়ন (stress) গ্রাহকরুপে কাজ করে।

দ্বিতীয় পর্বে  আরো ৭ টি কম পরিচিত ইন্দ্রিয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

(চলবে, সকল তথ্যসূত্র একসাথে তৃতীয় পর্বে দেয়া আছে)

Comments

Avatar

রকি চৌধুরী

--- অজ্ঞতা হচ্ছে স্বপ্নের মত। যতক্ষণ আপনি স্বপ্ন দেখবেন আপনি বুঝতে পারবেন না যে আপনি স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু যখনি আপনার ঘুম ভাঙবে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি স্বপ্ন দেখছিলেন!

আপনার আরো পছন্দ হতে পারে...

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
জানান আমাকে যখন আসবে -
guest
6 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত
Inline Feedbacks
View all comments
dhrubo saha
dhrubo saha
8 বছর পূর্বে

ধন্যবাদ।।।
নতুন কিছু শিখতে ও জানতে পারলাম আপনার জন্য।।
@এত দিন শুধুই ৫টাই জানতাম।

jewel sarker
jewel sarker
8 বছর পূর্বে

ভাল লিখেছিস দোস্ত

আমিম
আমিম
7 বছর পূর্বে

ধন্যবাদ। ভালো লাগল।

6
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x