বাজি ধরে বলতে পারি, এর চেয়ে সহজ করে Inflation Theory বোঝানো সম্ভব নয়। উত্তেজনায় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে পারে পড়তে পড়তে…… PhD Comics এ ইংরেজিতে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা হয়েছে, আর অনুবাদ করেছেন ফরহাদ হোসেন মাসুম
বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে জ্যোতির্বিদরা লক্ষ্য করলেন যে গ্যালাক্সিগুলো একে অপরের চেয়ে দূরে সরে যাচ্ছে। যতই দূরে যাচ্ছে, ততই দ্রুত সরে যাচ্ছে। পদার্থবিদরা বললেন যে, তাহলে নিশ্চয়ই ব্রহ্মাণ্ড বা ইউনিভার্স প্রসারিত হচ্ছে। তাহলে, নিশ্চয়ই এক সময় এটা ক্ষুদ্র, ঘন, ও উত্তপ্ত একটা বিন্দুর মত ছিলো। এটাকেই বলা হচ্ছে বিগ ব্যাঙ বা বৃহৎ বিস্ফোরণ।
এরপর, ১৯৬০ সালে দুজন জ্যোতির্বিদ আবিষ্কার করলেন মহাজাগতিক ক্ষুদ্রতরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ব্যাকগ্রাউন্ড বিকিরণ বা Cosmic Microwave Background Radiation, সংক্ষেপে CMB. এটা হলো খুবই হালকা (তিন ডিগ্রী কেলভিন এর) একটা আভা বা তাপমাত্রার মত, যেটা পুরো ইউনিভার্সের মধ্যেই ছড়িয়ে আছে। এটাও বৃহৎ বিস্ফোরণের থিওরিকে সমর্থন করলো। কারণ, ইউনিভার্সের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত একই তাপমাত্রা হওয়া শুধুমাত্র তখনই সম্ভব, যদি ইতিহাসের কোনো না কোনো সময় তারা একই জায়গায় থেকে থাকে।
তাত্ত্বিকরা এই আভার উৎস বের করেছেন – বৃহৎ বিস্ফোরণের তিন লাখ আশি হাজার বছর পর, যখন বস্তু জমাট বাঁধা আরম্ভ করার ফলে আলো চলাচল ভালোমত শুরু হয়েছিলো, তখন এর জন্ম হয়। কিন্তু এর আগে কী হয়েছিলো? এবং কীভাবে হয়েছিলো?
আগের সময়গুলোতে কীভাবে ব্রহ্মাণ্ড প্রসারিত হয়েছিলো, সেটা ব্যাখ্যা করার জন্য INFLATION হচ্ছে বেস্ট থিওরি। এটা একটা কৌশল, একটা গাণিতিক মডেল, যেটা CMB এর আগের ঘটনা ব্যাখ্যা করে। এটা বৃহৎ বিস্ফোরণ তত্ত্বের অনেক সমস্যার সমাধান করে ফেলে, কিন্তু এই সপ্তাহের আগে এটার পেছনে শক্ত কোনো প্রমাণ ছিলো না। যে কোনো ভালো তত্ত্বের মতই Inflation কেও এমন একটা ভবিষ্যদ্বাণী করতে হতো, যেটা সত্য বলে প্রমাণিত হতে হবে।
১৯৯০ সালে আরো ভালোভাবে যখন হিসাব করা সম্ভব হলো, তখন দেখা গেলো যে CMB জিনিসটা একদম নিখুঁতভাবে মসৃণ নয়, ঢেউ আছে কোথাও কোথাও। Inflation বললো যে, ব্রহ্মাণ্ড প্রসারণের সময় যে quantum fluctuation হয়েছিলো, সেটাই বেড়ে গিয়ে এই ঢেউগুলো তৈরি হয়েছে। যখন ব্রহ্মাণ্ড এতো ক্ষুদ্র ছিলো যে তখন কোয়ান্টাম ফিজিক্সের মাথা নষ্ট করা ঘটনাগুলো রাজত্ব করতো – শূন্য থেকে শক্তির উদ্ভব হতো, হঠাৎ করেই কণা তৈরিও হতো, হারিয়েও যেতো, সব সম্ভাব্যতা (probability) মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছিলো।
Inflation বললো, ব্রহ্মাণ্ড এতো দ্রুত (আলোর গতির চেয়েও দ্রুত) প্রসারিত হয়েছে যে, শুরুর দিকে এই fluctuations বা বিচ্যুতিগুলো স্থান ও সময়ের (time and space) মধ্যে এই ঢেউগুলো তৈরি করেছে। এই বিচ্যুতিগুলো প্রসারিত হয়েছে, পাহাড় এবং উপত্যকা তৈরি করেছে ব্রহ্মাণ্ডের শরীরে, যাতে বস্তুর কণা একে অপরের সাথে যুক্ত হতে পারে।
আরো ভালো করে বলতে গেলে, Inflation ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলো যে, এই ঢেউগুলো CMB এর আলোক প্রান্তের (Light Polarization এর) ওপর একটা বিশেষ নিদর্শন বা চিহ্ন রেখে যাবে। আমরা সেই সিগনেচার খুঁজে পেয়েছি।
এখন Inflation আরো অনেক বেশিরকম প্রমাণিত। আমরা এখন চোখ মেলে দেখতে পারি, ৩ লক্ষ আশি হাজার বছর আগের ঘটনাগুলোও; জানতে পারি, বৃহৎ বিস্ফোরণের এক সেকেণ্ডের লক্ষ লক্ষ ভগ্নাংশ সময়ের মধ্যে কী কী ঘটেছিলো।
ঐ একটা নিদর্শন বা চিহ্ন দিয়ে আমরা আমাদের উৎপত্তি বের করতে পারি। আমরা একসময় “আলো” ছিলাম। তারপর আমরা তাপমাত্রার মধ্যে একটা ঢেউ হলাম, যেটা পরে নক্ষত্রে রুপান্তরিত হলো, এরপর ছায়াপথ, এরপর পদার্থ !!
এবং অতঃপর……… প্রাণ !!
.
Very Knowledgeable information. ♥️♥️♥️♥️💕💕💕💕💕💕