পৃথিবীতে ঘাড়ত্যাড়া মানুষের কখনও অভাব হয়নি। যুগে যুগে মহান মহান সব ঘাড়ত্যাড়াগণ জন্ম নিয়ে পৃথিবীটাকে ধন্য করে দিয়েছেন। উপরে যে ভদ্রলোককে দেখছেন, তিনি তাঁদেরই একজন। ভদ্রলোকের নাম রিচার্ড ফিলিপ ফাইনম্যান। পৃথিবীর ইতিহাসের বাঘা বাঘা কয়েকজন পদার্থবিজ্ঞানীদের একজন। তিনি পদার্থবিজ্ঞানে দুইবার নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার যখন পুরষ্কারটি পান তখন তিনি ঘুমাচ্ছিলেন। এক সাংবাদিক তাঁকে কল দিয়ে ডেকে তুলে সুসংবাদটি দেয়। তখন ফাইনম্যান বলেছিলেন ‘আমি যদি তৃতীয়বারের মতো পুরষ্কার পাই তাহলে সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। এই সংবাদের চেয়ে আমার কাছে ঘুম বেশী গুরুত্বপূর্ণ!’ যা হোক, পুরস্কার গ্রহণ করার পর সাংবাদিকরা যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করে, তিনি ঠিক কী কারণে নোবেল পুরষ্কার পেলেন তখন তিনি উদাস গলায় জবাব দিয়েছিলেন ‘যদি আমি জিনিসটা সাধারণ জনগণকে এতো সহজে বুঝাতে পারতাম তাহলে নিশ্চয় এটার জন্য নোবেল পুরষ্কার পেতাম না!’
ফাইনম্যানের কর্মক্ষেত্র ছিল কোয়ান্টাম মেকানিক্স। এই বিষয়ে পৃথিবীর সেরা কয়েকজন হবার পরও তিনি একবার বলেছিলেন – ‘আমি দ্বিধাহীনভাবে বলতে পারি, কোয়ান্টাম মেকানিক্স আসলে কেউ বোঝে না!’
এই যে কথাটা এটা কোয়ান্টাম মেকানিক্স সম্পর্কে সবচেয়ে প্রচলিত ধারণা। কোয়ান্টাম মেকানিক্স মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে নিখুঁততম হাতিয়ার। এব্যাপারে আবার ফাইনম্যানের কাছেই ফেরা যাক, তাঁর ভাষায়- ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্সের হিসাবগুলোর কতগুলো সঠিক, সেটা নর্থ আমেরিকার প্রস্থ একটা মানব চুল পরিমাণ সূক্ষভাবে নির্ণয় করার সমতুল্য।’ কাজেই একে যখন বাঘা বাঘা পদার্থবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ভীতির জালে আটকে ফেলেন তখন আসলে হতাশ না হয়ে পারিনা। অবশ্য তাদেরকেও এককভাবে দোষও দেওয়া যায় না, কোয়ান্টাম জগতের আইন কানুন এতোটাই অদ্ভুত যে সেগুলো হুট করে বোঝা কঠিন, বিশ্বাস করা আরও কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়। আসুন দেখি, একদম শুরু থেকে চেষ্টা করা যাক।
There is nothing new to be discovered in physics now. All that remains is more and more precise measurement.
– ধারণা করা হয় কথাগুলো বলেছিলেন বিখ্যাত স্কটিশ পদার্থবিজ্ঞানী উইলিয়াম থমসন, গোটা বিশ্ব যাকে চেনে লর্ড কেলভিন নামে। হয়তো কথাটা তিনি বলেননি, কিন্তু কথাটা উনবিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ পদার্থবিজ্ঞানিদের মনোভাবকে প্রতিনিধিত্ব করে। ক্ল্যাসিকাল ফিজিক্স বা চিরায়ত পদার্থবিদ্যাকে নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁরা দেখেছিলেন যে এটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্যভাবে মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যখন এসব সূত্রগুলো বিভিন্ন নতুন ঘটনা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হয়ে যাচ্ছিলো, তখন প্রমাণ হলো যে ঐ উক্তিটা আসলে কতোটা ভুল ছিলো! প্রথম যে ঘটনাটি ক্ল্যাসিকাল ফিজিক্স ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয় সেটি হল ‘ব্ল্যাক বডি রেডিয়েশন’।
ঘটনাটি বোঝার জন্য কিছু তথ্য আগে মাথায় রাখতে হবে। কোনো বস্তুর উপর তাপ পড়লে সেখানে তিনটি ঘটনা ঘটে। কিছু পরিমাণ তাপ ওই বস্তুটা শোষণ করে। কিছু পরিমাণ তাপ বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়। আর কিছু তাপ ভেদ করে চলে যায় আলোর মতো। আর ভৌত সকল বস্তু এই তাপ শোষণের ফলে তড়িৎচৌম্বক বিকিরণের (electromagnetic radiation) রূপে শক্তি বিকিরণ করে যা আসলে বিভিন্ন ধরনের আলো। বস্তুটি কতোখানি শক্তি নির্গত করবে তা কিছু জিনিসের উপর নির্ভর করে, বিশেষ করে তাপমাত্রা ও রঙ। তাপমাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে, কম্পাঙ্ক ততই বাড়বে এবং একই সাথে শক্তিও। একটা লোহাকে গরম করে জিনিসটা কিন্তু আমরা স্বচক্ষে দেখতে পারি। লোহাকে উত্তপ্ত করলে প্রথমে লোহা শুধু গরমই হবে, রংয়ের কোনো পরিবর্তন হবে না। কিন্তু আরো উত্তপ্ত করলে তখন হালকা লাল রংয়ের আভা দেখা দেবে। অর্থাৎ, বিকিরণের রং পরিবর্তনের বিষয়টা তখন স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তাপমাত্রা ৫০০ ডিগ্রির ওপরে উঠলেই কেবল লোহার রং লাল হবে। তাপমাত্রা ৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে গরম লোহা তখন হলুদ হতে শুরু করবে। তার মানে, বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমছে। কারণ লালের চেয়ে হলুদ রংয়ের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম। আবার অন্যভাবে বলা যায় কম্পাঙ্ক বাড়ছে, কারণ কম্পাঙ্ক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়। লাল আলোর চেয়ে হলুদ আলোর কম্পাঙ্ক বেশি। যা হোক, লাল থেকে কিন্তু সরাসরি লোহার রং একবারেই হলুদ হয় না। ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের পরে তাপমাত্রা ধীরে বাড়াতে একসময় কমলা রং দেখা যাবে। ৮০০ ডিগ্রি থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকলে নিউটনের বর্ণালী ‘বেনীআসহকলা’র বাকি রংগুলোও একে একে দেখা যাবে। সবুজ, আসমানী, নীল আর বেগুনি। তারপর লোহার তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে যদি সূর্য পৃষ্ঠের সমান হয়ে যায় তখন সেই উত্তপ্ত লোহার রং উজ্জ্বল সাদা দেখাবে। আমরা ঘরের জিনিসপত্র থেকে খালি চোখে কোনো আলো বিকিরিত হতে দেখি না, কারণ আলোগুলো ইনফ্রারেড বা অবলোহিত; নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করলে কিন্তু আবার এসব দেখতে পাওয়া যাবে।
যা হোক, ফিরে আসি কৃষ্ণবস্তুতে। উপরেই বলেছি যে কোনো বস্তুর উপর তাপ পড়লে তিনটি ঘটনা ঘটে। কিন্তু ১৮৬০ সালে গুস্তভ কার্শফ নামক এক বিজ্ঞানীর মনে হলো তিনটি ঘটনা ঘটার সুযোগ তাঁর ঠিক হজম হচ্ছে না, শুধুমাত্র একটি ঘটনা তিনি ঘটতে দিতে রাজি আছেন। আর তা হল সম্পূর্ণ তাপই শোষণ করবে বস্তুটি। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন কালো বস্তু তাপ শোষণ করতে পারে সবচেয়ে ভালো। (আর একারণেই আমি বৈজ্ঞানিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে HOT কয়েকজন মানুষের একজন দাবি করি নিজেকে!) তাই সম্পূর্ণ তাপ শোষণকারী বস্তুর নাম দেওয়া হলো ব্ল্যাক বডি বা কৃষ্ণবস্তু। কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ অন্য সব বস্তুর চেয়ে সবসময় বেশী হবে কারণ অন্য কোনো বস্তুই এটার মতো তাপ শোষণ করতে পারবে না। বাস্তবে কৃষ্ণবস্তু প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। গ্রাফাইট মোটামুটি ৯৬% পর্যন্ত তাপ শোষণ করতে পারে, কিন্তু শতভাগ নিখুঁত কোনো কৃষ্ণবস্তু প্রকৃতিতে নাই। তাই কৃষ্ণবস্তু আসলে খানিকটা ‘সিস্টেম করে’ বানাতে হয়, সেটা নিয়ে বিশদ লিখার কোনো প্রয়োজন দেখছি না আপাতত। যাই হোক, কৃষ্ণবস্তু তো বানানো গেল। এবার এটা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করলেন বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর অস্ট্রিয়ান দুই পদার্থবিদ জোসেফ স্টিফেন আর লুদভিগ বোলৎজম্যান একটি সূত্র দিলেন –
E=KT^4
সূত্রটি বোঝায় যে কৃষ্ণবস্তু থেকে নির্গত শক্তির পরিমাণ তাপমাত্রার চতুর্থ বর্গানুপাতিক। আর K হল বোল্টজম্যান ধ্রুবক। সূত্রটি ঠিক থাকলেও বড্ড বেশী মোটা দাগে বর্ণনা করে কৃষ্ণবস্তুকে! বিভিন্ন রকমের আলো কিভাবে এটিকে প্রভাবিত করে সেটা সম্পর্কে সূত্রটি বড় বেশী উদাস!
১৮৯৩ সালে জার্মান পদার্থবিদ উইলহেম ভীন আরেকটি সূত্র দেন কৃষ্ণবস্তুর। তাঁর সূত্র অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমতে থাকে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় কৃষ্ণবস্তুটি বেগুনী রঙ ধারণ করবে। একটু আগে লোহার উদাহরণে আমরা যেমনটি দেখলাম। সমস্যা বাঁধে যখন দেখা যায় যে কৃষ্ণবস্তুর রঙ বেগুনী হবার পরও তাপমাত্রা বৃদ্ধি করানো যাচ্ছে! অর্থাৎ ভীনের সূত্রে সমস্যা আছে। কিন্তু সূত্রটি বেশী তরঙ্গদৈর্ঘ্য অর্থাৎ কম কম্পাঙ্কে খুব সুন্দরভাবে কার্যকর, কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যেই তার যা সমস্যা!
রেলে-জিন্স তখন যৌথভাবে একটা সূত্র দিলেন যে, কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণের তীব্রতা তাদের পরমশূন্য তাপমাত্রার সমানুপাতিক এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ব্যস্তানুপাতিক। তবে এই সূত্র আবার ভীনের সূত্রের উল্টা। এটি কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ব্যাখ্যা করতে পারে, বেশী তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বেলায় অচল। (অচল বলতে আমি আসলে বুঝাচ্ছি যে সূত্রগুলোর গাণিতিক রুপ থেকে যে ফলাফল আসার কথা, পরীক্ষা করলে সেই ফলাফল আসে না।) আর এই সূত্রের আরেকটি সমস্যা হল তাঁদের সূত্রানুসারে তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমার কোনো সীমা নাই। কমতে কমতে শূন্যও হয়ে যেতে পারে। আর এরকমটা আসলে পদার্থবিজ্ঞানে বাস্তবসম্মত নয়। শূন্য তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কোনো তরঙ্গ থাকতে পারেনা, তাহলে তরঙ্গতত্ত্বই ভেঙ্গে পড়বে। আবার শূন্য না করেও তরঙ্গদৈর্ঘ্য যদি ইচ্ছামতো কমানো যায় তাহলে কিন্তু অতিবেগুনী বিপর্যয় ঘটার কথা। সেটা কী রকম? অর্থাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে করতে তরঙ্গদৈর্ঘ্য এতোটাই কমিয়ে ফেলা যা অতিবেগুনীর চেয়েও কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো বিকিরিত করা শুরু করবে। কিন্তু বাস্তবে এরকম কিছুরই দেখা মেলে না, অতিবেগুনী আর টপকাতে পারে না তরঙ্গ। অর্থাৎ সূত্র আর পরীক্ষালব্ধ ফলাফলে বিশাল বিরোধ! বিজ্ঞানীরা মাথায় হাত দিয়ে ঝিমাতে শুরু করলেন। অবশেষে এর সমাধান দেন এক যুগান্তকারী পদার্থবিদ ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক।
উন্নাসিক সুরতের যে ভদ্রলোককে দেখছেন উপরের ছবিতে, তাঁর নাম ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক। ৭ অক্টোবর, ১৯০০ সাল। তিনি তখন বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। হেনরিখ রুবেন্স ছিলেন তাঁর গবেষণা সহকর্মী। ওইদিন রুবেন্স আর তাঁর স্ত্রী বেড়াতে আসেন প্ল্যাঙ্কের বাড়িতে। সেখানেই রুবেন্স জানান কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণের পরীক্ষার কথা। পরীক্ষা থেকে কী ফল পেয়েছেন তাও বলেন। রুবেন্স বলেন, দীর্ঘ তরঙ্গের বিকিরণের ব্যাখ্যা ভীনের সূত্র দিয়েই করা যায়। কিন্তু ক্ষুদ্র তরঙ্গের জন্য সেটা অচল। আবার রেলে-জিনসের সূত্র দিয়ে ক্ষুদ্র তরঙ্গের বিকিরণ ব্যাখ্যা করা যায়। কিন্তু দীর্ঘ তরঙ্গে রেলে-জিন্স তত্ত্ব অচল। তারমানে কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ ব্যাখ্যার জন্য দুটো সমীকরণের দরকার হচ্ছে। অথচ সমীকরণ দুটি পরস্পর বিরোধী। রুবেন্স বিদায় নেবার পরেই খাতাকলম নিয়ে বসে গেলেন প্ল্যাঙ্ক। এবং আস্তে আস্তে ব্যাপারটার স্বরূপ বুঝতে পারলেন এবং একটা সমাধান হাজির করলেন।
তিনি ব্যাখা করেন যে কোনো বস্তু তাপ পাওয়ামাত্রই নগদ নগদ সবটুকু শক্তি বিকিরণ করে শুরু করে দেয় না, বরং তাপটা ছাড়ে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তির প্যাকেট আকারে। এই প্যাকেটগুলোর আবার শক্তি তরঙ্গের কম্পাঙ্কের সাথে সম্পর্কিত। কম্পাঙ্ক বেশি হলে এর শক্তিও বেশি হয়, আর কম থাকলে শক্তি কম থাকে। আগেই বলেছি লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশী তাই কম্পাঙ্ক কম আর তাই এর প্যাকেটের শক্তিও কম। তাই কম এনার্জি অর্থাৎ কম তাপেই সে নিজের তরঙ্গদৈর্ঘ্য কমতে দিতে রাজি হয়। কিন্তু বেগুনী বা অতিবেগুনি লেভেলে গেলে কম্পাঙ্ক অনেক বেড়ে যায়, আর প্যাকেটগুলোও সব লাট সাহেবের ব্যাটা হয়ে যায়, তাদের যতই এনার্জি দেওয়া হোক না কেন তারা নির্বিকারভাবে সব হজম করে চেতভেদ ছাড়াই বসে থাকে। একারণে অতিবেগুনী বিপর্যয় ঘটে না। আর তাই তরঙ্গদৈর্ঘ্যও কমতে কমতে শূন্যতে যাবার কোনোই সম্ভাবনা নাই! প্ল্যাঙ্ক একটা সমীকরণ দাঁড় করালেন – E=hv. এখানে E হল যে পরিমাণ এনার্জি বিকিরণ হবে, h হল প্ল্যাঙ্ক ধ্রুবক আর v হল কম্পাঙ্ক। প্ল্যাঙ্ক নিজে থিওরিটা পরীক্ষা করে কোন ত্রুটি খুঁজে পেলেন না। তিনি দেখলেন তাঁর থিওরি যে কোনো কম্পাঙ্কেই কৃষ্ণবস্তুকে নিখুঁতভাবে ব্যাখ্যা করছে ; ভীন বা রেলে-জিন্সের মতো অর্ধেক অর্ধেক না। কিন্তু এরকম বা এর ধারেকাছের কোনো ধারণা তিনি বহুত ঘাঁটাঘাঁটি করেও আর খুঁজে পেলেন না পদার্থবিজ্ঞানে। তবে কি তিনি সম্পূর্ণ মৌলিক একটি শাখারই জন্ম দিয়েছেন?
প্রকৃতপক্ষে হ্যাঁ। তিনি শক্তির ক্ষুদ্রতম প্যাকেটগুলোর নাম দিয়েছিলেন কোয়ান্টা। এবং সেখান থেকেই কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সূত্রপাত। আজ দরজা খোলা পর্যন্তই থাকুক। আগামীতে কোয়ান্টামের জগতে প্রবেশের চেষ্টা করবো, আমরা আশা রাখি। তবে যেতে যেতে বিখ্যাত উদ্যোক্তা ওয়ারেন বাফেটের একটা উক্তি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই – ‘কিছু কিছু জিনিসের জন্য সময় দিতেই হবে, তা সে আপনার অর্থ বা ক্ষমতা যতই থাকুক না কেন। আপনি চাইলেই ৯ জন মহিলাকে প্রেগন্যান্ট বানিয়েও ১ মাসের মধ্যে কোনো বাচ্চার জন্ম দিতে পারবেন না!’ কোয়ান্টাম মেকানিক্স ঠিক এরকমই। আপনি যত প্রতিভাবান বা মেধাবীই হোন না কেন, সময় না দিলে বুঝতে পারবেন না, শিখতে পারবেন না।