১) এটা পৃথিবী। এখানেই আপনার বাস!
.
২) আর এটা হল আমাদের সৌরজগৎ। কি, খুঁজে পেলেন পৃথিবীকে?
.
৩) এখানে দেখছেন পৃথিবী আর চাঁদের মধ্যবর্তী দূরত্ব। খুব একটা বেশি নয়, তাই না?
.
৪) তাহলে আরেকবার ভাবুন!
কারণ এই দূরত্বের ভেতরেই সাঁটিয়ে দেওয়া সম্ভব সৌরজগতের সব কয়টা গ্রহকে [প্লুটোকে গ্রহ হিসেবে ধরা হয় নি]।
.
৫) ছবির সবুজ দাগ দিয়ে বৃহস্পতি গ্রহের গায়ে উত্তর আমেরিকার ক্ষেত্রফল বুঝানো হচ্ছে।
.
৬) এখানে দেখুন শনি গ্রহের তুলনায় পৃথিবীর আকার [একটা নয়, দুটো নয়, ছয় ছয়টা পৃথিবী!]
.
৭) যদি শনির বলয় পৃথিবীর চারপাশে থাকতো, কেমন হত দেখতে?
.
৮) নীচের ছবির দানবীয় আকৃতিটা একটা ধূমকেতু! লস এঞ্জেলেস শহরের তুলনায় ধূমকেতুটি দেখতে কেমন লাগবে, সেটাই দেখানো হয়েছে।
.
৯) কিন্তু এই ধূমকেতুর আকার দেখে ভয় পেলে চলবে না। অপেক্ষা করছে সূয্যি মামা!
.
১০) কখনো ভেবেছেন, চাঁদ থেকে পৃথিবীকে কেমন দেখায়?
ঠিক এমনই…
.
১১) মঙ্গল থেকে এমন…
.
১২) আর শনির বলয়ের পেছন থেকে?
এমন।
.
১৩) এখন আসুন চার বিলিয়ন মাইল দূরের গ্রহ নেপচুনে। এখান থেকে আপনাকে আদৌ দেখা যাচ্ছে কি?
.
১৪) আবারও আসুন সূর্যের কাছে। এবার স্পষ্ট করে সূর্যের সাথে তুলনা করে পৃথিবীর আকার দেখানো হলো।
বেশ ভয়ংকর দৃশ্য, তাই না?
.
১৫) সেই একই সূর্যকে দেখুন মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশ থেকে।
.
১৬) কিন্তু এ আর এমন কী? কার্ল সেগান তন্ময় হয়ে ভেবেছিলেন, পৃথিবীর সকল সাগর সৈকত মিলিয়ে যত বালুকণা আছে, তার চেয়েও বেশি নক্ষত্র আছে আমাদের ব্রহ্মাণ্ডে! আপনিও কথাটার মর্মার্থ বুঝতে পারবেন, নিচের ছবিগুলো দেখতে থাকলে।
.
১৭) আমাদের সূর্যের চেয়ে হাজার গুণ বড় নক্ষত্র আছে ব্রহ্মাণ্ডে। দেখুন, আমাদের সূর্যটাকে কেমন গোবেচারা লাগছে VY Canis Majoris নামক হাইপারজায়ান্ট লাল নক্ষত্রের তুলনায়!
.
১৮) কিন্তু একটা ছায়াপথের (গ্যালাক্সি) আকারের কাছে এদেরকে চুনোপুঁটি বললেও ভুল হবে। বলা দরকার আণুবীক্ষণিক জীব! কেন বলছি এমন, তাই ভাবছেন তো?
জানেনই তো, রক্তের একটা কণা কত ছোটো, তার মধ্যে শ্বেত রক্তকণিকা আরো কত ছোটো! আমাদের ছায়াপথটা যদি যুক্তরাষ্ট্রের সমান হয়, সেই অনুপাতে সূর্যের আকৃতি দাঁড়াবে একটা শ্বেত রক্তকণিকার সমান।
.
১৯) কারণ, আকাশগঙ্গার আকার বি-শা-আ-আ-আ-ল। নীচে দেখুন এই ছায়াপথের কোথায় আপনি থাকেন!
.
২০) মন খারাপ হয়ে গেলো? আহা! তাহলে নীচের ছবিটা না দেখাই ভালো।
কারণ এই ছবির হলুদ বৃত্ত থেকে বুঝা যায়, বিশাল ছায়াপথের কত ক্ষুদ্র একটা পরিসর আমাদের চোখে পড়ে মাত্র!
বলে রাখা ভালো, এটা আকাশগঙ্গার ছবি নয়।
.
২১) মাথা ঘুরাচ্ছে? এখনও না ঘুরালে দেখুন এই ছবিটি।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রথমে আমাদের মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা, এরপর এন্ড্রোমিডা, এরপর M87, এবং এরপর IC 1011 ছায়াপথ!
IC1011 এর অবস্থান, পৃথিবী থেকে ৩৫০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে।
চিন্তা করে দেখুন তো, IC 1011-এর ভেতরে কী আছে!
.
২২) চলুন, আরেকটু বড় পরিসরে চিন্তা করি।
নীচের ছবিটা হাবল টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা, যেখানে হাজার হাজার ছায়াপথ তাদের মিলিয়ন মিলিয়ন নক্ষত্র নিয়ে বসে আছে। এসব নক্ষত্রের আছে আবার আবার নিজস্ব গ্রহ!
.
২৩) এখানকার একটা ছায়াপথ হল UDF 423, যেটা পৃথিবী থেকে দশ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আপনি যখন এই ছবিটার দিকে তাকাচ্ছেন, তখন কী দেখতে পাচ্ছেন জানেন?
বিলিয়ন বিলিয়ন বছর আগের দৃশ্য! কেন? কারণ, ওখান থেকে আলো আমাদের কাছে এসে পৌঁছাতে লেগে যায় বিলিয়ন বিলিয়ন বছর!
শ্বাসরুদ্ধকর, তাই না?
.
২৪) রাতের আকাশে আমরা যতগুলো নক্ষত্র দেখি, এই ব্রহ্মাণ্ডের মোট নক্ষত্রের তুলনায় সেগুলোর সংখ্যা যে কতোটা তুচ্ছ! যে জায়গাটা আপাতদৃষ্টিতে শূন্য মনে হয়, ওখানে ভালো করে দেখলে এতগুলো ছায়াপথ দেখা যায়! যাদের প্রত্যেকটাতে আছে বিলিয়ন নক্ষত্র!
.
২৫) আর জানেনই তো, কৃষ্ণগহ্বর বলে একটা ব্যাপার আছে। বিশাল (মানে, বেশিই বিশাল) কোনো নক্ষত্রের মহাকর্ষ যখন এতো বেশি বেড়ে যায় যে সে আলোকেও নিজের ভেতর থেকে বের হতে দেয় না, সেটাকে কৃষ্ণগহবর বলে।
আমাদের ধরণীর কক্ষপথের সহিত তুলনা করিয়া তাহার আকারের ছবিটা দেওয়া হইল আপনাকে ভড়কাইয়া দিবার নিমিত্তে।
তাই, নিজের উদ্দেশ্য, নিজের আশা-আকাংক্ষা, এগুলো নিয়ে মারামারি করার কোনো মানে নেই। এগুলো অত্যন্ত তুচ্ছ ব্যাপার। তাহলে, অসীম এই মহাবিশ্বে, অতি ক্ষুদ্র এই আমাদের মূল্য কোথায়?
মূল্য হচ্ছে অন্যের কল্যাণার্থে কাজ করার মধ্যে, একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকার মধ্যে। আলবার্ট আইনস্টাইন বলে গেছেন, “Only a life lived for others is a life worthwhile”।
.
ও হ্যাঁ, আরও কিছু ছবি। দেখে নিন বিশ্বজগতের তুলনায় কতোটা মামুলি মনে হয় আমাদের!
এই গ্রহটা আপনার বাসভূমি।
.
যখন আপনি পৃথিবী থেকে বের হয়ে পুরো সৌরজগৎটাকে দেখবেন।
.
যখন সৌরজগৎ থেকে বের হয়ে আশেপাশে, উপর নিচে তাকাবেন।
.
এবং আরও বাইরে গিয়ে তাকাবেন আকাশগঙ্গা ছায়াপথের দিকে…
.
আরও বাইরে যেতে থাকুন… দেখবেন ছায়াপথদের মেলা!
.
আরও যাবেন? দেখবেন হাজার হাজার ছায়াপথ মিলে তৈরি করেছে এক একটা ক্লাস্টার!
.
আরও যান… দেখবেন অনেকগুলো ক্লাস্টারের সমারোহ।
ব্যস শেষ! এখন দেখুন পর্যবেক্ষণযোগ্য বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ছবি।
.
একটা কুইজ দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছি নাঃ আপনি কোথায়, খুঁজে বের করুন তো দেখি?
.
মূল ফিচারঃ এখানে
অনুলিখনঃ নির্ঝর রুথ।
শেয়ার অপশন দেয়া নেই কেন?
ফেসবুক থেকে? লগিন করা আছে তো ফেসবুকে? থাকলে বন্ধুদের জানান অপশনটা আসার কথা।
আইনস্টাইন তো এখনকার লোক, মহানবী (স.) এর জীবনে শত শত উদাহরণ ছড়ানো আছে যে, আমাদের কি করা উচিৎ।
আর একটু বললে বলতে হয়, ‘জ্ঞানীদের জন্য রয়েছে নিদর্শন’- আল-কোরআন।