১
তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে কণা পদার্থবিদ্যার প্রমিত মডেল। কণা পদার্থবিদ্যা একটি জটিল ও বিস্তৃত বিষয়। এই মডেলের ব্যাখ্যা নির্ভর বই বা প্রবন্ধ পড়তে গেলে অনেক সময় হতাশ হতে হয়। তবে জটিল সবকিছুরই সহজবোধ্য উপায় বিজ্ঞানীরা বের করে ফেলেন যেন খুব সহজে ও কম সময়ে বিশাল এক তথ্যভাণ্ডার সম্পর্কে জানা যায়। এ যেন ঘরের ছোট্র একটি শো পিস, ভূ-গোলক দেখার মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবী সম্পর্কে একটা ধারণা নেয়া। আমরা আমাদের আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হিগস বোসনে যাবার আগে কণা পদার্থবিদ্যার প্রমিত মডেলটি সম্পর্কে প্রাথমিক একটি ধারণা নেয়ার চেষ্টা করবো।
২
নিচের সম্পূর্ণ বক্সটি দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত। বাঁ দিকের তিনটি কলাম তথা ৩ × ৪ = ১২ টি বর্গ যাদের দখলে তারা সবাই ফার্মিওন। এরা পদার্থ সৃষ্টিতে অংশগ্রহণ করে। ডান পাশের একটি মাত্র কলাম বোসনের দখলে। এরা বল সৃষ্টিতে অংশগ্রহণ করে। এদেরকে বলা হয় বল বহনকারী কণা। কারা পদার্থ সৃষ্টি করে সেটা আমরা সকলেই জানি। যারা পরমাণু গঠন করে তারাই তো পদার্থ তৈরি করবে। পরমাণু কি দিয়ে গঠিত? হ্যা, ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন। সুতরাং বাঁ দিকের ঘরগুলিতে ইলেকট্রন ও এদের জ্ঞাতি ভাই যেমন, মিউওন, টাও ও এদের বিপরীত কণাগুলো অবস্থান করবে। এ পর্যন্ত কোন সমস্যা নেই কারণ ইলেকট্রনকে আর ভাঙা যায় না। কিন্তু বাঁ পাশের প্রথম ৬টি বর্গে কিছু অদ্ভুত কণার নাম দেখা যাচ্ছে এবং এরা সবাই কোনো না কোনো কোয়ার্ক। আমরা তো আশা করেছিলাম এখানে প্রোটন ও নিউট্রন থাকবে। কোয়ার্ক কেন? কারণ, প্রোটন ও নিউট্রন তৈরি হয়েছে কোয়ার্ক দিয়ে। অর্থাৎ প্রোটন ও নিউট্রনকেও ভাঙা যায়। যেমন, প্রোটনকে ভাঙলে পাওয়া যাবে দুটি আপ কোয়ার্ক ও একটি ডাউন কোয়ার্ক। আবার নিউট্রনকে ভাঙলে পাওয়া যাবে দুটি ডাউন কোয়ার্ক ও একটি আপ কোয়ার্ক। কোয়ার্ক পরিবারে আপ ও ডাউন কোয়ার্ক ছাড়াও আছে চার্ম, টপ, স্ট্রেঞ্জ ও বটম কোয়ার্ক। এই কোয়ার্ক ও তাদের অ্যান্টিকোয়ার্ক মিলে গঠন করে আরো বহু কণা। এরা আবার দুই রকম- মেসন ও ব্যারিয়ন। এদের সম্পর্কে বলতে গেলে আরো বহু কণার কথা চলে আসবে। তাছাড়া আমরা এখানে কণা পদার্থবিদ্যার প্রমিত মডেলের একটি নতুন সদস্য, হিগস বোসন নিয়ে আলোচনা করবো। তবে একটি কথা এখনও বলা হয়নি যে, ইলেকট্রন ও এর জ্ঞাতি ভাইদের একত্রে লেপটন বলে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বাঁ দিকের ১২টি ঘর কোয়ার্ক আর লেপটন এর দখলে। আর কোয়ার্ক ও লেপটনগুলোকে একত্রে বলে ফার্মিওন।
৩
এবার উপরের চিত্রের ডান দিকের কলামটিতে নজর ফেরানো যাক। এখানে স্থান করে নিয়েছে মৌলিক বলের বলবাহী কণারা। তড়িৎচৌম্বক বলের জন্য ফোটন, সবল বলের জন্য গ্লুওন (gluon), দুর্বল বলের জন্য ডব্লিউ ও জেড কণা এবং খুব বেশি দিন হয়নি আমরা খুঁজে পেয়েছি হিগস বোসন। গ্লুওন বিনিময়ের মাধ্যমে কোয়ার্কগুলো একে অপরের সাথে শক্ত হয়ে লেগে থাকে। প্রোটনগুলোর চার্জ অভিন্ন হলেও নিউক্লিয়াসের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকে এই কণা বিনিময়ের কারণে। এদিকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের জন্য দায়ী মূলত ডব্লিউ ও জেড কণা। নিউট্রন থেকে প্রোটন তৈরি হওয়ার কারণও এই কণা। ইলেকট্রনগুলো পরমাণুর কক্ষপথে টিকে থাকে তড়িৎচৌম্বক বলের জন্য। সুতরাং পরমাণুর স্থায়িত্ব প্রদানে সবল ও তড়িৎচৌম্বক বলের বিশেষ অবদান রয়েছে। আর হিগস ক্ষেত্রের সাথে ক্রিয়া করে কণাকে ভরযুক্ত করার গুরু দায়িত্বটি পালন করে হিগস বোসন। অনেকে হয়তো চিন্তা করছেন, আমি মৌলিক বলের বলবাহী কণার কথা বলছি অথচ গ্র্যাভিটি কোথায়? গ্র্যাভিটির বলবাহী কণাকে বলা হয় গ্র্যাভিটন। আমরা যে বলবাহী কণার কথা আলোচনা করেছি তার প্রায় সবগুলোরই পারমাণবিক রেঞ্জে উল্লেখযোগ্য ক্রিয়া আছে। নেই শুধু মহাকর্ষের। কণা পদার্থবিদ্যা পুরোপুরি কোয়ান্টাম বলবিদ্যা নির্ভর। মহাকর্ষের কোয়ান্টাম তত্ত্ব সম্পর্কে এখনও আমরা অন্ধকারেই রয়ে গেছি। আর সেটা না হলে তো আমরা গ্র্যাভিটন সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। সেজন্যই অনেকে স্ট্যান্ডার্ড মডেলে গ্র্যাভিটন রাখতে চান না বা আরো সঠিকভাবে বললে বলা যায়, রাখা সম্ভব হয় না।
৪
হিগস বোসনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় ২০১২ সালে এবং ২০১৩ সালের ১৪ই মার্চ সার্ন এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে। এরূপ কণা থাকার ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য ব্রিটিশ পদার্থবিদ পিটার হিগস ও বেলজিয়ান পদার্থবিদ ফ্রাসোয়া অ্যাংলার্টকে ২০১৩ সালে
নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। হিগস বোসন আবিষ্কার হওয়ার পর বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বেশ মাতামাতি হয়। বাংলাদেশে বিজ্ঞানের কোনো একটি আবিষ্কার নিয়ে এতোটা মাতামাতি কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। তবে এর একটি কারণও আছে এবং সেই কারণটা লুকিয়ে আছে “বোসন” শব্দটিতে। লক্ষ্য করে দেখুন, হিগস শব্দের সাথে বোসন শব্দটি জড়িয়ে আছে। আর এই বোসন শব্দটি নেয়া হয়েছে গত শতাব্দীর বিশের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক সত্যেন বোস এর নাম থেকে। তিনি এমন কী করেছিলেন যে, মহাবিশ্বের তাবৎ কণাগুলোর দুটি ভাগের একটি ভাগের নাম তাঁর নামে হলো? তিনি এবং আইনস্টাইন বোস-আইনস্টাইন সংখ্যায়ন নামক এমন একটি কোয়ান্টাম সংখ্যায়নের প্রবর্তন করেন যে সংখ্যায়ন নীতি এই ভাগের কণাগুলো মেনে চলে। তাই এইসকল কণাকে বলা হয় বোসন। তবে এগুলো বলবাহী কণা হিসেবেই অধিক পরিচিত। হিগস কণা এই ভাগের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করে বিধায় নাম হয়েছে হিগস বোসন। আমাদের উপরের আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা নিশ্চয়ই এতোক্ষণে বুঝে ফেলেছেন যে, কণা পদার্থবিদ্যার প্রমিত মডেলের প্রধান দুই ভাগের এক ভাগের কৃতিত্ব আমাদের বাঙলার গর্ব সত্যেন বোস এর। অনেকেই আবার সত্যেন বোসকেই হিগস বোসনের আবিষ্কারক বানিয়ে ফেলেছিলেন। হিগস বোসনের আবিষ্কারকের নাম আমি প্রথমেই উল্লেখ করেছি। সত্যেন বোস হিগস বোসনের আবিষ্কারক ছিলেন না। হিগস বোসন তার চরিত্র মোতাবেক কণা পদার্থবিদ্যার প্রমিত মডেলের যে ভাগে গিয়ে পড়েছে সেই ভাগের আবিষ্কারক ছিলেন সত্যেন বোস।

২০১২ সালে হিগস বোসন আবিষ্কৃত হওয়ার পর পিটার হিগস (ডানে) ও ফ্রাসোয়া অ্যাংলার্ট (বাঁয়ে) একত্রে সার্ণের সংবাদ সম্মেলনে
৫
এই মহাবিশ্বে আমাদের অস্তিত্বের একটা বড় কারণ হচ্ছে ভর। বস্তু কণা দ্বারা গঠিত, আবার এই মহাবিশ্ব গঠিত বস্তু দ্বারা। সুতরাং বস্তু তথা কণার ভর না থাকলে মহাবিশ্বের বৃহদাকৃতির বস্তু যেমন, তারা, গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সিপুঞ্জ ইত্যাদিও গঠিত হতে পারতো না। তবে সব কণারই যে ভর আছে তা কিন্তু নয়। যেমন, তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গের বলবাহী কণা ফোটনের ভর শূন্য। কোন কণার ভর থাকবে আর কোন কণা হবে ভরহীণ তা নির্ধারিত হয় একটি ক্ষেত্রের মাধ্যমে। এটাকে বলা হয় হিগস ক্ষেত্র। লক্ষ্য করুন, আমরা শুরু করেছিলাম হিগস নামক কণিকা দ্বারা (এবং আমাদের এই লেখার মূল শিরোনামও এটাই) এবং ধীরে ধীরে এই কণার সাথে সম্পর্কযুক্ত ক্ষেত্রে প্রবেশ করছি। কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব অনুসারে, ক্ষেত্রের সাথে কণার সৃষ্টিরহস্য জড়িত। তবে এ বিষয়ে প্রবেশ করার আগে ভরের সাথে ক্ষেত্রের একটা সম্পর্ক তৈরি করা যাক।
৬
পদার্থবিদ্যায় ভরের সংজ্ঞা দেয়া হয় জড়তার পরিমাপ থেকে। বল = ভর × ত্বরণ থেকে লেখা যায়, ভর = বল/ত্বরণ; একক ত্বরণ সৃষ্টিতে যে বল প্রয়োগ করা হবে তাই ভরের পরিমাপক। অভিকর্ষজ ত্বরণের ক্ষেত্রে ভর = অভিকর্ষ বল/অভিকর্ষজ ত্বরণ। এই সমীকরণে ভর, অভিকর্ষজ ত্বরণ এর মাধ্যমে অভিকর্ষ বল এর সাথে সম্পর্কিত। মহাকর্ষের সাথে সম্পর্কিত ভরকে বলা হয় মহাকর্ষজনিত জড়তা। কারণ মহাকর্ষজনিত জড়তা, মহাকর্ষজনিত ভরের সমতুল্য। একটি এলিভেটর যখন উপরের দিকে উঠতে থাকে তখন এই জড়তা যুক্ত হওয়ার কারণে ভারী বোধ হয়। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্বে মহাকর্ষকে ক্ষেত্ররূপে দেখা হয়। সুতরাং উপরের কথাটিকে একটু পরিবর্তন করে আমরা বলতে পারি, মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে চলার সময় কোনো একটা কিছুর সাথে আন্তঃক্রিয়ার কারণে আমরা ভারী বোধ করি। সেই কোনো একটা কিছুকে বলা হলো গ্র্যাভিটন। তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গের বাহক যেমন ফোটন তেমনি গ্র্যাভিটন হচ্ছে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের বাহক। সুতরাং আমরা দেখলাম ভরের বৃদ্ধির সাথে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের সম্পর্ক আছে অথবা বলা ভালো একটি সম্পর্ক তৈরি করে নেয়া যায়। ক্ষেত্রকে উত্তেজিত করলে ঐ ক্ষেত্রের সাথে জড়িত কণা পাওয়া যায়।
৭
উপরোক্ত নীতিটিই আমি ব্যবহার করবো হিগস বোসনকে ব্যাখ্যা করার জন্য। কণা পদার্থবিদ্যার একটি মৌলিক নীতি হচ্ছে- সমগ্র মহাবিশ্ব বিভিন্ন ধরনের ক্ষেত্র দ্বারা আবৃত এবং এই ক্ষেত্রগুলো একে অপরের সাথে আন্তঃক্রিয়ায় লিপ্ত থাকে; যার ফলস্বরূপ বিভিন্ন ধরনের কণা পাওয়া যায়। সুতরাং কণা পদার্থবিদ্যা অনুসারে হিগসের জন্যও একটি ক্ষেত্র থাকবে এবং এই ক্ষেত্রের সাথে জড়িত কণার নাম হবে হিগস বোসন। হিগস ক্ষেত্রকে উত্তেজিত করলেই পাওয়া যাবে হিগস বোসন। ভরহীন কণাগুলো যখন এই ক্ষেত্র অতিক্রম করে (এবং অনবরত করছেও) তখন হিগস ক্ষেত্রের সাথে এই কণাগুলোর আন্তঃক্রিয়া ঘটে। তবে সব কণাই যে এই ক্রিয়া ঘটাবে তা কিন্তু নয়। যেমন, ফোটন কোনো প্রকার আন্তঃক্রিয়া না করেই এই ক্ষেত্রকে অতিক্রম করে চলে যেতে পারে। পক্ষান্তরে টপ কোয়ার্ক বা ডব্লিউ, জেড কণা ইত্যাদি এই আন্তঃক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে এবং মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে যেমন মানুষ ভর যুক্ত হওয়ার অনুভূতি অর্জন করে তেমনি এই ক্ষেত্রের আন্তঃক্রিয়ায় উক্ত কণাগুলোরও ভরপ্রাপ্তি ঘটে। সেজন্যই এই কণাগুলোকে ফোটন বা নিউট্রিনোর তুলনায় ভারী মনে হয়।
৮
হিগস বোসনকে প্রায়ই একটি উদাহরণ দিয়ে প্রকাশ করা হয়। আমি উদাহরণটি একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছি। হিগস বোসন বুঝতে উদাহরণটি বেশ কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে। ধরুন আমাদেরই কেউ একজন কোনো একটা ওয়ার্কশপে মহাবিশ্বের সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে একটি লেকচার দিচ্ছি। রুমে প্রবেশ করার সময় আমি কোনো রকম বাধা না পেয়েই বক্তৃতা মঞ্চে গিয়ে উঠতে পারবো। এখন ধরুন কিছুক্ষণ পর রুমে প্রবেশ করলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার। স্বভাবতই আপনারা তাঁকে পেয়ে উতলা হয়ে উঠবেন। তাঁকে ঘিরে ধরবেন অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য, সেলফি তোলার জন্য, কুশল বিনিময় করার জন্য ইত্যাদি। এতে মঞ্চ পর্যন্ত আসতে জাফর ইকবাল স্যারের একটু বেশি সময় লাগবে। সময় বেশি লাগার সাথে ভারের একটা সম্পর্ক আছে। যেমন, লক্ষ্য করে দেখবেন অধিক ভরের মানুষগুলো চলাফেরায় কিছুটা ধীর প্রকৃতির হয়, আর হালকা পাতলা গড়নের মানুষগুলো যেন হাওয়ার বেগে চলতে পারে। আমাদের উদাহরণে জাফর ইকবাল স্যার যেন হঠাৎ করেই ভারী হয়ে উঠলেন। কাদের কারণে ভারী হয়ে উঠলেন? আপনাদের কারণে। আর আপনারাই হচ্ছেন একেকজন উত্তেজিত ক্ষেত্রের ফল তথা হিগস বোসন। আর পুরো লেকচার রুমটির সকলে মিলিত হয়ে যে জাল সৃষ্টি করে ছিলেন (জাফর ইকবাল স্যার আসার পূর্বে) সেটা ছিলো হিগস ক্ষেত্র। রুমে যখন জাফর ইকবাল স্যার ছিলেন না তখন কিন্তু হিগস বোসনের দেখা পাওয়া যায় নি। । আপনারা একেকজন হিগস বোসনে রূপান্তরিত হলেন যখন তিনি রুমে প্রবেশ করলেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে হিগস বোসন হচ্ছে হিগস ক্ষেত্রের উত্তেজনার ফল। সার্ণ এর বিজ্ঞানীরা যখন ঘোষণা দিলেন যে, তারা হিগস বোসন খুঁজে পেয়েছেন তখন তাঁরা মূলত প্রমাণ করে দিলেন যে, হিগস ক্ষেত্রের অস্তিত্ব রয়েছে। এজন্য তাঁরা প্রোটন-প্রোটন সংঘর্ষ ঘটিয়ে হিগস ক্ষেত্রকে উত্তেজিত করেছেন এবং সেই ক্ষেত্র থেকে হিগস কণা বেরিয়ে এসেছে। আমরা আমাদের উদাহরণে প্রোটন-প্রোটন সংঘর্ষকে জাফর ইকবাল স্যার এর রুমে প্রবেশের সাথে তুলনা করতে পারি।
৯
হিগস কণাকে অনেকেই গড পার্টিকেল বা ঈশ্বর কণা নামে চিনেন। বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারছিলেন যে, হিগস কণার অস্তিত্ব অবশ্যই আছে কেননা তা না হলে কণা পদার্থবিদ্যার প্রমিত মডেল পূর্ণতা পায় না। অথচ কোনোভাবেই কণাটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। এদিকে কণা পদার্থবিদ লিও ল্যাডারম্যান হিগস বোসন এর উপর ভিত্তি করে একটি বই লিখেন এবং নাম দেন “দি গডড্যাম পার্টিকেল”। প্রকাশক ড্যাম অংশটি কেটে বাদ দিয়ে বইটির নাম রেখে দিলেন “দি গড পার্টিকেল”। সেই থেকে হিগস বোসনকে অনেকেই গড পার্টিকেল বা ঈশ্বর কণা নামে অভিহিত করেন।
খুব ভালো লেগেছে।