এই জায়গাটা মধ্য-আটলান্টিক মহাসাগরের খাঁড়ির একটা অংশ যেটা এসে পৌঁছেছে আইসল্যান্ডে – আমাদের এই পৃথিবীর দৃশ্যমান টেকটোনিক প্লেটগুলোর সবচেয়ে সুস্পষ্ট উদাহরণের মধ্যে এটা একটা। এখনকার ভূ-পৃষ্ঠে তো এই প্লেটগুলোর আনাগোণা বেশ ভালোই, কিন্তু ইতিহাসের কোনো না কোনো একটা মুহূর্তে এটার অস্তিত্ব ফুটে ওঠা শুরু করেছিলো।
প্রথমদিকের পৃথিবী ছিলো লাভায় আবৃত, ম্যাগমার তৈরি একটা সাগর, যেটা এতো উত্তপ্ত ছিলো যে এই প্লেটগুলোর টিকে থাকা সম্ভব ছিলো না। সেই ম্যাগমার সাগর ঠাণ্ডা হওয়া থেকে খুব সহজেই পৃথিবীর গঠন ব্যাখ্যা করা যায়, কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই প্লেটগুলো কীভাবে তৈরি হলো, সেই কাহিনী ব্যাখ্যা করাটা সেরকম জটিল। ভেনাস বা মঙ্গলে তো টেকটোনিক প্লেট দেখা যায় না, তাহলে পৃথিবীতে কেন করলো, এটা পৃথিবীর সবগুলো জাতির বিবেকের কাছেই প্রশ্ন।
হোয়াই দিস ফাইজলামি?
কয়েকদিন আগেই একটা আর্টিক্যাল ছাপা হলো “নেচার” পত্রিকায়, যেটাতে ইয়েল ইউনিভার্সিটি এর ডক্টর বার্কোভিচ্চি প্রস্তাব করলেন যে পৃথিবী গঠিত হওয়ার এক বিলিয়ন বছর পর শুরু হয়েছিলো Subduction, যখন পৃথিবীর চামড়া (ভূ-ত্বক) সংকুচিত হওয়া আরম্ভ করেছিলো।
Subduction = যখন একটা প্লেট আরেকটার কাছে এসে সেটার নিচে চলে যায় এবং পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ ম্যান্টলে গিয়ে পৌঁছে। যে জায়গাতে এই সিনেমা (ঘটনা) চলে, সেই থিয়েটারকে (স্থানকে) বলে Subduction Zone.
উনি প্রথমদিকের পৃথিবীর অবস্থাগুলো নিয়ে অনেকগুলো মডেল দাঁড় করিয়েছেন। অবস্থাগুলোর মধ্যে এটাও বিবেচনা করা হয়েছে যে সংকুচিত হওয়ার সময় খনিজ পদার্থগুলো ভেঙ্গে যাবে অথবা উত্তাপ পেলে আকারে বড় হয়ে যাবে। মডেলগুলোতে যে বস্তুর চাক ভূ-ত্বকের চেয়ে ঘন, সেটা ডুবে যেতে থাকবে। আর ভেসে থাকলে আশেপাশের শিলার সাথে ফস্টি-নষ্টি করবে, দুর্বল বা ক্ষতিগ্রস্থ করবে। সময়ের সাথে সাথে সেই দুর্বল জায়গাগুলোর মধ্য দিয়ে গলিত শিলা বয়ে চলার সুযোগ পাবে, এবং ধীরে ধীরে একটা ফুল স্কেল সাবডাকশন জোন তৈরি হবে, যখন শিলা যথেষ্ট ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।
এই মডেল ব্যাখ্যা দেয় যে কেন ভেনাসে টেকটোনিক প্লেট নেই। যেহেতু ভেনাস একটু দেমাগী এবং তার চামড়া (ভূ-ত্বক) বেশি উত্তপ্ত, ক্ষতিগ্রস্থ খনিজ পদার্থগুলো সেখানে অপেক্ষাকৃত জলদিই আবার স্ফটিকাকার ধারণ করে।
অনেক বিজ্ঞানীই পৃথিবীর প্রথমদিকের সাবডাকশন এর মডেল তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। এই মডেলটা জোস, কারণ এটা এখনকার দিনের সাবডাকশনের মত রেজাল্ট দেখাচ্ছে। এখনো আরো যেসব প্রশ্ন বাকী আছে, সেগুলো হলো – প্রথমদিকের ভূ-ত্বক কী দিয়ে নির্মিত ছিলো অথবা সেটার বৈশিষ্ট্য কী কী ছিলো। তবুও এই মডেলটা জিওলজি আর টেকটোনিক প্লেট-এর একদম বেসিক পদ্ধতি বোঝার জন্য সামনের দিকে বিশাল একটা পদক্ষেপ!
Written by -JBB, The Earth Story
Image credit: Jason Eppink (creative commons).
আরো জানতে চাইলে:
১) Nature.
২) Huffington Post.