|| পর্ব ১ ||
ডেভিড ফিঞ্চার পরিচালক হিসাবে বরাবরই আমার খুব পছন্দের। ব্র্যাড পিটের সাথে তাঁর দুটো কাল্ট মুভি আছে – Se7en আর Fight Club। দুটো মুভিই আমার অত্যন্ত প্রিয়। এই দুটো ছাড়াও পিটের সাথে তাঁর আরেকটা মুভি আছে, নাম ‘দ্য কিউরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটন‘ যেখানে পিট জন্মই নেয় ৮০ বছর বয়স নিয়ে! মাঝেমাঝে আমার নিজেকে বেঞ্জামিন বাটনের মতো মনে হয়। কোন এক অজ্ঞাত কারণে আমি ছোটবেলা থেকেই বয়স্কদের মতো উন্নাসিকতা নিয়ে বড় হয়েছি। কার্টুন বা এই জাতীয় জিনিস আমাকে কখনোই আকৃষ্ট করতে পারেনি। এমন না যে কার্টুন না দেখে জগত সংসার উদ্ধার করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেছি বসে বসে, কিন্তু কার্টুন বা অ্যানিমেটেড কিছুই আমাকে কখনো টানতে পারেনি। তাই এই টাইপ জিনিস আমার দেখা হয়নি বললেই চলে। তবে এক অ্যানিমেখোর বন্ধুর পাল্লায় পড়ে ‘ডেথ নোট‘ নামক এক অ্যানিমি দেখতে বসেছিলাম বছর দুয়েক আগে। কাহিনী যথেষ্ট ভালো হওয়া সত্ত্বেও যথারীতি আমি এটা শেষ করতে পারিনি ১২–১৩ পর্ব দেখার পরই। তবে এটার কেন্দ্রীয় দুই ক্যারেক্টারের একটা লাইট ইয়াগামিকে বেশ লেগেছে মানতেই হবে। ব্যাটা বহুত ধুরন্ধর, ধরা দিয়েও যেন দেয় না। অনেকটাই বাস্তবের লাইট অর্থাৎ আলোর মতো।
এই আলো বস্তুটা বরাবরই খুব প্যাঁচালো প্রজাতির। তার স্বভাব চরিত্র বোঝার জন্য যুগের পর যুগ বহু বিজ্ঞানী বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছে, মাথার চুল ছিঁড়েছে, কিন্তু আলো থেকে গিয়েছে অন্ধকারেই! স্যার আইজ্যাক নিউটনের মতো মহারথী অবশ্য এই ঝামেলার উর্ধ্বে ছিলেন। তিনি নির্বিকারভাবে মেনে নিয়েছিলেন যে আলো আসলে কণিকা। অবশ্য তাঁর একটা বড় সুবিধা ছিল যে তাঁর সময় আলোর যেসব বৈশিষ্ট্য মানুষের জ্ঞানে ছিল সেসবের অনেককিছু কনাতত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেত। যেমন প্রতিফলন বা প্রতিসরণ। অপবর্তনের বেলায় অবশ্য তিনি বেশ উদাস ছিলেন, তাঁর মত ছিল অপবর্তনও আসলে এক ধরণের প্রতিসরণই, শুধু ইতালিয়ান প্রিজম দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করলে দুই নম্বুরি রেজাল্ট দেয় আর ব্রিটিশ প্রিজম ব্যবহার করলে একদম তাঁর মনের মতো রেজাল্ট পাওয়া যায়! ইতালিয়ানরা কুটিল, তারা তো এসব করবেই, নিউটন হাতেনাতে সব ধরে ফেলেন ! ব্রিটিশ রয়াল সোসাইটির সবাই অবশ্য এই অতি সরল ব্যাখ্যায় ভজলনা, অনেক বজ্জাত বিজ্ঞানীই গাইগুই শুরু করে দিলেন। ওলন্দাজ বিজ্ঞানী হাইগেন (নামখানা যে সুবিধার না অস্বীকার করার উপায় নেই !) আবার আরেক কাঠি সরেস, তিনি গোটা একখান বিকল্প তত্ত্বই নিয়ে হাজির হলেন ময়দানে। পদার্থবিজ্ঞানের জগতটাই আসলে এরকম, সবার পেটে পেটে প্যাঁচ, কোনকিছুই সহজে কেউ মানতে চায়না। ১৬৭৮ সালে হাইগেন ভ্রু কুঁচকে বললেন ‘দূর দূর সব নিউটন সাহেবের বুজরুকি, কিসের কণা? আলো হইল তরঙ্গ!’ খুব দ্রুত এই তত্ত্বের অনুসারীও জুটে যায় বিজ্ঞানমহলে। কিন্তু সমস্যা হল আলো যে তরঙ্গ এটা বাস্তবে প্রমাণ করা যাচ্ছিলো না। আবার আলোর কণাতত্ত্বও কোনোভাবেই ফেলে দেওয়া যাচ্ছিলো না , কারণ আলোর কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য তরঙ্গ দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না। ফলে বিজ্ঞানীদের মধ্যে জোরশোর বিতর্ক শুরু হয়ে যায় আলো কণা নাকি তরঙ্গ তা নিয়ে। এভাবে শতাব্দী পার হয়ে যায় কিন্তু বিতর্কের কোন সুরাহা হয় না।
অতঃপর উনবিংশ শতাব্দীর একদম গোড়ার দিকে এক ব্রিটিশ পদার্থবিদ থমাস ইয়ং ভাবলেন এর একটা এসপার ওসপার করেই ছাড়বেন। তিনি ছিলেন তরঙ্গতত্ত্বের সমর্থক। ১৮০১ সালে তিনি একটা এক্সপেরিমেন্ট করেন যা ইয়ং‘স ডাবল স্লিট এক্সপেরিমেন্ট বা ইয়ং এর দ্বিচির পরীক্ষা নামে পরিচিত। এক্সপেরিমেন্টটা খুব সরল ছিল। তিনি অন্ধকার একটা ঘরে আরেকটা ছোট ঘর বানান কাঠের বোর্ড দিয়ে। বোর্ডের পিছে রেখে দেন একটা সাদা পর্দা। তারপর বোর্ডে সামান্য দূরত্বে দুটো ছিদ্র করেন। তারপর বোর্ডের সামনে একটা টেবিলের উপর একটা মোমবাতি রাখেন। মোমবাতিটা এমন উচ্চতায় রাখেন যেন সেটা দুটো ছিদ্রের ঠিক মাঝামাঝি উচ্চতায় অবস্থান করে। এর ফলে দুটো ছিদ্র একই সমান আলো পায়। তিনি এমন ব্যবস্থা রাখেন যেন বোর্ডের পিছনের পর্দায় আলো কিভাবে পড়ছে সেটা পর্যবেক্ষণ করা যায়। অতঃপর আসে এক্সপেরিমেন্টের ফলাফলের পালা । আলো যদি শুধু কণা হত তাহলে পেছনের পর্দায় আলোর রূপ হত নিচের চিত্রের মতো –
কারণ আলো সবসময় সরল রেখায় চলে আর তাই ছিদ্র বরাবর দুই জায়গায় কণাগুলো আঘাত করে উজ্জ্বল বিন্দু সৃষ্টি করার কথা। কিন্তু ইয়ং ফলাফল পেলেন অন্যরকম। তিনি দেখলেন যে পর্দায় শুধু দুইটা বিন্দু উজ্জ্বল নয় বরং অনেকগুলো উজ্জ্বল বিন্দু সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রতিটি উজ্জ্বল বিন্দুর নিচেই যেন অবধারিতভাবে অন্ধকার বিন্দুর সৃষ্টি হয়েছে। অনেকটা নিচের চিত্রের মতো –
এরকম হয় একমাত্র যখন দুইটা তরঙ্গ ব্যাতিচারে(Interference) সৃষ্টি করে। ব্যাতিচার এমন একটি ঘটনা যখন দুটি তরঙ্গ পরস্পরের সংস্পর্শে আসে তখন তারা একত্রে মিলিত হয়ে কখনো কখনো শক্তিশালী হয় আবার কখনো কখনো পরস্পরের ক্ষমতা নাকচ করে দিয়ে একদম শূন্য করে ফেলে। শক্তিশালী হবার ঘটনাকে বলা হয় গঠনমূলক ব্যাতিচার(Constructive Interference) আর শূন্য করে দেবার ঘটনাকে বলা হয় ধ্বংসাত্মক ব্যাতিচার(Destructive Interference)। উপরের এক্সপেরিমেন্টে ঠিক এই ঘটনাটিই ঘটেছে। ছিদ্র দুটি খুব কাছাকাছি হবার কারণে তারা পরস্পরের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পেয়েছে আর ব্যাতিচার ঘটেছে। যেখানে যেখানে গঠনমূলক ব্যাতিচার ঘটেছে সেখানে উজ্জ্বল বিন্দু পাওয়া গিয়েছে আর যেখানে যেখানে ধ্বংসাত্মক ব্যাতিচার ঘটেছে সেখানে অন্ধকার পাওয়া গিয়েছে। এতো কথার সারমর্ম এটাই যে আলোর মধ্যে তরঙ্গের গুণাবলী আছে বলেই একমাত্র এরকম ফলাফল পাওয়া গেছে পরীক্ষা থেকে। এভাবেই আলোর তরঙ্গতত্ত্ব প্রতিষ্ঠা পায়। এবং বিজ্ঞানীরা একমত হন যে আলো দ্বৈত চরিত্রের অধিকারী। সে একই সাথে তরঙ্গ এবং কণা।
এই এক্সপেরিমেন্টের কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে সরাসরি কোন লেনাদেনা নেই। তবে এটার মোডিফায়েড ভার্সন ক্ষুদ্রজগতের কিছু কিছু অদ্ভুতুড়ে ঘটনা ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করা হয়। যেমন ধরা যাক ফটোইলেকট্রিক এফেক্ট।
বোরের পরমাণু মডেল থেকে আমরা জানতে পারি যদি কোনো নিম্নশক্তিস্তরের ইলেকট্রনকে যথেষ্ট পরিমাণ এনার্জি সাপ্লাই দেওয়া যায় তাহলে সেটা উচ্চশক্তিস্তরে লাফ মারতে পারে। আর এভাবে যদি অনেক পরিমাণ এনার্জি পায় তাহলে ইলেকট্রনটি লাফ মেরে পরমাণুটির বাইরেও চলে আসতে পারে । এভাবে কোন ইলেকট্রনের পরমাণুর বাইরে চলে আসার ঘটনাকে বলা হয় ফটোইলেক্ট্রিক এফেক্ট আর সেই ইলেকট্রনকে বলা হয় ফটোইলেক্ট্রন। আমরা কোন ধাতব পরমাণুতে আলো ফেলেও কিন্তু এই ঘটনাটি ঘটাতে পারি, কারণ আলোও এক ধরণের এনার্জি। উপরে আমরা ইয়াং এর দ্বিচির পরীক্ষা থেকে দেখলাম আলো এক ধরণের তরঙ্গ। কাজেই আলোকে আমরা এনার্জির একটা স্রোত হিসাবেও বিবেচনা করতে পারি। এবং এখানেই একটা বিরাট গোলমাল বেধে যায়। সেটা কী রকম বোঝার জন্য একটা উদাহরণের সাহায্য নেওয়া যাক।
ধরা যাক একটা জ্বলন্ত চুলার উপর একটা পাতিল রাখা আছে এবং আমরা সেটাকে ট্রাম্পের নির্বাচিত হবার খবরের মতো গরম করতে চাচ্ছি। এখন দুই সেকেন্ডের মাথায় যদি আমরা পাতিলটা নামিয়ে নিই তাহলে কিন্তু সেটা খুব বেশি গরম হবে না, অনেকটা হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খবরের মতো হবে। কিন্তু যদি এক ঘণ্টা পর খালি হাতে নামাতে যাই তাহলে সমূহ সম্ভাবনা আছে গরমে শোলে সিনেমার ‘ইয়ে হাত মুঝে দে দে, ঠাকুর‘ টাইপ অবস্থা হয়ে যাবার। এরকম কেন হয়? কারণ যত সময় যাবে তাপশক্তি পাতিলে জমা হতে হতে তার তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। ফলে দু–এক সেকেন্ডে যা সম্ভব না, সময় দিলে তা সম্ভব, চাই শুধু শক্তির নিরবিচ্ছিন্ন যোগান। একই অবস্থা তাহলে ফটোইলেকট্রিক এফেক্টের জন্যও সত্য হবার কথা। আমরা যদি কোন পরমাণুর উপর অনবরত আলো ফেলতে থাকি তাহলে সেটা পরমাণু থেকে লাফ মেরে বেরিয়ে আসার কথা তা সে যত দুর্বল আলোই ফেলিনা কেন! কিন্তু বাস্তবে এরকম হয়না। নুন্যতম একটা নির্দিষ্ট তীব্রতার আলো না ফেললে ইলেকট্রন উদাস নয়নে বিড়ি ফোঁকা ছাড়া কোন কাজ করেনা, নড়াচড়া তো দূর দূরান্তের ব্যাপার! ব্যাপারটা চিরায়ত পদার্থবিদদের রাতের ঘুম হারাম করে ফেলে।
১৯০৫ সালে জুরিখ পেটেন্ট অফিসের ২৬ বছর বয়সী এক সামান্য ক্লার্ক তার ‘অ্যানুস মিরাবিলিস‘ পেপার পাবলিশ করে রাতারাতি সাড়া পৃথিবীতে হৈচৈ ফেলে দেন। এই পেপারের ৪ টা টপিকসের একটা ছিল এই ফটোইলেক্ট্রিক এফেক্টের ব্যাখ্যা। ভদ্রলোকের নাম আলবার্ট আইনস্টাইন। তিনিই প্রথম উপলব্ধি করেন যে চিরায়ত পদার্থবিদ্যা যেভাবে ইলেকট্রনকে এনার্জির স্রোত গেলানোর চেষ্টা করে ইলেকট্রন আসলে সেভাবে এনার্জি গেলে না। আগের পর্বে আমি লিখেছিলাম কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ নিয়ে, সেখানে দেখেছিলাম ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক কিভাবে সমস্যাটির সমাধান করেছিলেন। স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন অনেকটা সেভাবেই সমস্যাটির সমাধান করেছিলেন। তিনি তাঁর ব্যাখ্যায় বলেন যে আলো প্রকৃতপক্ষে ক্ষুদ্রতম কণিকা দিয়ে গঠিত যার নাম ফোটন। এই ফোটনগুলোই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্যাকেট আকারে আলোর এনার্জি বহন করে। কাজেই কোন ইলেকট্রনের উপর যখন আলো ফেলা হয় তখন সেটা সমগ্র তরঙ্গের সাথে একসাথে মিথস্ক্রিয়া (Interaction) না করে বরং পর্যায়ক্রমে শুধুমাত্র একটা করে ফোটনের সাথে করতে থাকে। প্রথম ফোটন যে পরিমাণ এনার্জি সাপ্লাই দেয় সেটা ইলেকট্রনে জমা থাকে না, ফলে পরের ফোটনকেও শূন্য থেকেই চেষ্টা শুরু করতে হয়। উচ্চকম্পাংকের আলোর এনার্জি থাকে বেশি তাই ফোটনগুলোও থাকে শক্তিশালী, নিম্নকম্পাঙ্কের ক্ষেত্রে উল্টোটা সত্য। তাই দুর্বল আলো আমরা যতই ফেলতে থাকি না কেন ইলেকট্রনের উপর, দুর্বল ফোটনের কারণে সেটা ইলেকট্রনকে যথেষ্ট পরিমাণ এনার্জির জোগান দিতে পারে না, তাই ইলেকট্রন শক্তিস্তর পরিবর্তন করতে পারে না বা পরমাণু থেকে বেরিয়েও আসতে পারে না। অথচ যথেষ্ট শক্তিশালী আলো ফেলা মাত্র বেরিয়ে আসে। ব্যাখ্যাটা অনেকটা যেন প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টার মতো ব্যাপার। প্রকৃতপক্ষে স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন যতই কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বিরোধী থাকুন না কেন, তিনি নিজেও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বেসিক গড়তে অনেক সাহায্য করেছিলেন জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতে। যা হোক, এই ফটোইলেক্ট্রিক এফেক্টের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্যার আইনস্টাইন একটা জিনিস আমাদের সামনে তুলে ধরেন যে আলোর গতি হলো তরঙ্গের মতো, কিন্তু বস্তুজগতের সাথে এর মিথস্ক্রিয়া কণার মতো। একেই বলা হয় ওয়েভ–পার্টিকেল ডুয়ালিটি।
আলফ্রেড নোবেল যখন নোবেল পুরস্কারের উইল করে যান তখন তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে শুধুমাত্র মানবকল্যাণে ভূমিকা রাখার জন্য নোবেল পুরস্কার দেওয়া হবে। স্যার আলবার্ট আইনস্টাইন যতই যুগান্তকারী বিজ্ঞানী হন না কেন তাঁর আসলে সরাসরি মানবকল্যাণে লাগে এমন কোনো কাজ নেই। নোবেল কমিটির মাথায় হাত পড়ে যায়। কারণ নোবেল পুরস্কার আইনস্টাইনের জন্য সম্মান নয় বরং আইনস্টাইনই নোবেল পুরস্কারের জন্য সম্মানজনক! এমনিতেই সর্বকালের সেরা সাহিত্যিক মানা হয় যাকে সেই কাউন্ট লিও তলস্তয়কে নোবেল পুরস্কার না দেওয়ায় বিস্তর সমালোচনা শুনতে হয় কমিটিকে, আরেক কিংবদন্তি মার্ক টোয়েনকেও দেওয়া হয়নি নোবেল, এখন আইনস্টাইনও মিস হয়ে গেলে পুরস্কারটির জৌলুসই যেন কমে যায় অনেকটা! এমন অবস্থায় কমিটির কোনো এক সদস্য আনন্দের সাথে আবিষ্কার করে যে ফটোইলেক্ট্রিক এফেক্ট ব্যবহার করে অনেক কাজ করা হচ্ছে যা সরাসরি মানুষের কাজে লাগে। ব্যাস! আর কি লাগে! ১৯২১ সালে ফটোইলেক্ট্রিক এফেক্টের ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য স্যার আলবার্ট আইনস্টাইনকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার থেকে প্রাপ্য টাকা অবশ্য আইনস্টাইনের কাজে আসেনি, তিনি পুরস্কার পাবার বেশ কয়েক বছর আগেই ডিভোর্সের সময় তাঁর প্রথম স্ত্রীকে কথা দিয়েছিলেন ভরণ–পোষণ বাবদ তিনি ভবিষ্যতে নোবেল পুরস্কার পাবার পর যে টাকাটা পাবেন সেটা দিয়ে দিবেন! পুরাই থাগ লাইফ! বর্তমানে নোবেল কমিটি আবার একই রকম সংকটে আছে স্টিফেন হকিংকে নিয়ে। বেচারাদের ভালোই জ্বালা!
যা হোক, আগামী পর্বে আমরা আরেকটু অ্যাডভান্সড লেভেলের কোয়ান্টাম মেকানিক্স শিখব । ততদিনের জন্য বিদায় । ভালো থাকুন, বিজ্ঞানের সাথে থাকুন।
তথ্যসূত্র –
১। https://farside.ph.utexas.edu/teaching/302l/lectures/node151.html
২। http://hyperphysics.phy-astr.gsu.edu/hbase/mod2.html