প্রবন্ধটি ফরহাদ হোসেন মাসুমের সাথে যৌথ উদ্যোগে লিখিত
সায়েন্টিফিক পোস্টার কী?
সায়েন্টিফিক পোস্টারের সাইজ এবং উপাদানসমূহ
সায়েন্টিফিক পোস্টার পোট্রেট বা ল্যান্ডস্কেপ এই দুই সেট-আপেই করা যায়। এটা নির্ভর করে কনফারেন্স বা যেখানে আপনার কাজ প্রদর্শিত হবে সেই ক্ষেত্রের সামর্থ্য-সুযোগের উপর। সায়েন্টিফিক পোস্টারের সাইজও নির্ধারণ করেন যারা কনফারেন্স আয়োজন করেন তাদের উপর। তবে প্রচলিত সাইজ হলো ৪৮ ইঞ্চি বাই ৩৬ ইঞ্চি (প্রস্থে ৪ ফুট, লম্বায় ৩ ফুট ) বা ৩৬ ইঞ্চি বাই ৪৮ ইঞ্চি। তবে আরো বড় কিংবা ছোট পোস্টারও করা যেতে পারে।
পোস্টারে কী কী থাকবে, তা নির্ভর করে প্রেজেন্টারের উপর, কে কিভাবে ডিজাইন করবেন তার উপর। আজকাল অনেকেই অনেক ইন্টারেকটিভ উপায়ে নিজের কাজকে উপস্থাপন করেন। একটা সায়েন্টিফিক পোস্টারে যে অংশগুলো থাকে তার একটা জেনারালাইজড ফরম্যাট উপস্থাপন করলাম নিচের চিত্রে (চিত্র ১)। জেনারালাইজড মানে এখানে পোস্টারভেদে সামান্য পরিবর্তন লক্ষণীয়। আর কনটেন্টের মধ্যে ছবি, গ্রাফ, টেবিল, লেখা ইত্যাদি অর্ন্তভুক্ত।
Title – পোস্টারের জন্য লাগবে একটা নজরকাড়া টাইটেল। Font size – 48 to 54.
Authors and institution – কারা কারা এই পোস্টারের জন্য কাজ করেছেন, তাদের নাম এবং তারা কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত, সেগুলো লিখতে হবে। সাথে অন্তত একজনের (সাধারণত প্রথম যার নাম থাকে, তার) ইমেইল এড্রেস দিতে হবে। Font size – 36 to 40.
Abstract – গবেষণার সারাংশ, কী করলাম, কিভাবে করলাম, কী পেলাম, ইত্যাদি লিখে ফেলতে হবে ২০০ শব্দের মধ্যে। ABSTRACT শব্দটার ফন্ট সাইজ হতে পারে 32. আর সারাংশের মূল টেক্সটের ফন্ট সাইজ 24. তাহলে সামান্য দূরত্ব থেকে দাঁড়িয়ে সুন্দরভাবে পড়া যাবে।
Introduction – কেন করলাম এই গবেষণা, কেন এটা জরুরি, গবেষণার ফলাফল কী কাজে লাগতে পারে, ইত্যাদি লিখতে হবে। বেশি না লেখাই শ্রেয়। কারণ, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তেমন কেউই লেখাগুলো পড়বে না। দর্শকরা সামনে এলে মুখেই বলতে হবে। ফন্ট সাইজ abstract সেকশনের মত।
Content 1,2,3 – এগুলোতে কীভাবে কাজটা করলেন, সেটার বিস্তারিত লিখতে পারেন, কিন্তু কম কথায়; এই সেকশনের নাম মেথডলজি। আর কী পেলেন, সেই ফলাফলটাকে টেবিল বা গ্রাফ বা ফ্লো-চার্ট বা অন্য কোনো সৃজনশীল উপায়ে তুলে ধরতে পারেন। ফন্ট সাইজ abstract সেকশনের মত।
Acknowledgement – এই সেকশন দিতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। গবেষণার ফান্ডিং কোথা থেকে আসছে, অনেক সময় তাদেরকে ধন্যবাদ জানানো হয় এই সেকশনে। অথবা, যাদের নাম পোস্টারের লেখক তালিকায় নেই, অথচ গবেষণার টুকিটাকিতে তাদের সাহায্য/অবদান আছে, তাদের নাম দেয়া হয় এখানে।
Reference – পোস্টারে যদি কোথাও অন্য কোনো গবেষণা প্রবন্ধের উল্লেখ করে থাকেন, তাহলে এখানে সেই রেফারেন্স উল্লেখ করতে হয়। রেফারেন্স লেখার উপযুক্ত বা সঠিক উপায় নিয়ে আরেকটা বিশাল লেখা লিখে ফেলা যাবে। আজ আর সেদিকে যাচ্ছি না।
কীভাবে বানাবেন?
সায়েন্টিফিক পোস্টার তৈরির জন্য অনেককেই বিভিন্ন প্রিন্টিং প্রেসে বা ব্যানার তৈরি করে এমন দোকানে ছুটতে হয়। তাও যে ব্যাক্তি ডিজাইন করেন তাকে তোয়াজ করে চলতে হয়, মন-মর্জি বুঝে বলতে হয়, ব্যস্ততা থাকে, এটা ওটা চেঞ্জ করতে গেলে প্রায়ই বিরক্তিবোধ দেখা যায় তাদের মধ্যে। ইলাস্ট্রেটরের কাজটা (প্রধানত পেন টুল) শেখা খুব কঠিন নয়, তবে বেশ সময় লাগে শিখতে। কিন্তু আপনি সামান্য চেষ্টা করলেই মাইক্রোসফট অফিস প্যাকেজের পাওয়ারপয়েন্ট দিয়েই সায়েন্টিফিক পোস্টার ডিজাইন করে সেটা প্রেসে দিয়ে কোন ঝামেলা/কথাবার্তা ছাড়াই প্রিন্ট করতে পারবেন। এই ট্রিকটা হয়তো অনেকেই জানেন আবার অনেকেই হয়তো জানেন না। এটা যারা জানেন না তাদের জন্যই। আর এই ট্রিক দিয়ে শুধু সায়েন্টিফিক পোস্টারই নয়, যেকোন আকারের ব্যানার বা ম্যাগাজিনও ডিজাইন করা সম্ভব যদি আপনার আগ্রহ থাকে।এবং এটা বেশ সোজা।
প্রথমে মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্টের একটা নতুন ফাইল ওপেন করুন।
এরপর পেইজ সেট-আপ এ ক্লিক করুন।
এরপর আপনি চাইলে ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা রেখে কাজ শুরু করতে পারেন বা ভিন্ন কালার সেট করে নিতে পারেন ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাইলে গিয়ে। (লাল বৃত্ত দ্বারা দেখানো হয়েছে) । ব্যাকগ্রাউন্ড ফর্ম্যাটে ক্লিক করলেই আপনার ইচ্ছামত কালার দিতে পারবেন।
এরপর আপনি ইনসার্টে গিয়ে শুধুমাত্রা বিভিন্ন কালারের স্কোয়ার বা রেকট্যাঙ্গল শেপ ব্যবহার করেই আপনার পোস্টারটা সাজিয়ে তুলতে পারেন। (লাল বৃত্ত দিয়ে দেখানো)। কিভাবে ডিজাইন করলে আপনার পোস্টার মনোমুগ্ধকর দেখাবে, সেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। বানিয়ে ফেলুন চোখ ধাঁধানো পোস্টার। চাইলে একেক বক্সের একেক রঙ দিতে পারেন – বক্সে ক্লিক করে FORMAT মেনুতে যান, সেখানে SHAPE FILL থেকে রঙ নির্বাচন করুন।