বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় দৈনিক “বাংলাদেশ প্রতিদিন” পত্রিকার ৩১শে আগস্ট, ২০১৬ সংখ্যার রকমারি পাতায় (পৃষ্ঠা ৫) রণক ইকরাম “ভূত আছে নাকি নাই” শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। (পড়ুন এখানে। যদি বাংলাদেশ প্রতিদিনের লিংক কাজ না করে সেক্ষেত্রে পড়ার জন্য প্রবন্ধটির স্ক্রিনশট পেতে ক্লিক করুন এখানে।)
সেখানে তিনি কয়েকজন বিখ্যাত মানুষ আর বিভিন্ন সভ্যতার রূপকথায় ভূতের অস্তিত্বের কথা লিখেছেন, আর কিছু প্যারানরমাল ঘটনার তথ্য দিয়েছেন। মনোরঞ্জন পাতায় এসব কিছু থাকতেই পারে, সেটাই স্বাভাবিক। “যুগে যুগে” নামের অনুচ্ছেদে তিনি লিখেন-
ভূত মানে মৃত আত্মা বা অপচ্ছায়া। ভূতে বিশ্বাস সেই প্রাচীনকাল থেকেই। অসংখ্য প্রাচীন লোককাহিনীতে ভূতের উল্লেখ আছে। পৃথিবীর অধিকাংশ জাতিই ভূতে বিশ্বাস করে। তাদের মতে প্রাণীর শরীর থেকে আত্মা চলে গেলেই সে প্রাণহীন হয়ে পড়ে। কোনো কোনো আত্মা প্রাণীর শরীর থেকে বের হওয়ার পরও ফিরে আসে। আর এই ফিরে আসা আত্মাই হচ্ছে ভূত। ভূতের শরীরী রূপ তার থাকে না। সে থাকে অস্পষ্ট। কিন্তু তার চালচলন স্বাভাবিক জীবিত শরীরের মতো। তাকে স্পষ্ট দেখা যায় না। কিন্তু উপলব্ধি করা যায়।
তবে সমস্যা হচ্ছে তিনি একটি অনুচ্ছেদ লিখেছেন, যেটার নাম দিয়েছেন “বৈজ্ঞানিক যুক্তি“, যেখানে তিনি লিখেন-
ভূত সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলেই একদল মানুষের প্রবল আপত্তি— ‘আরে ধুর, ভূত বলে কিছু নেই।’ আবার আরেকদল মানুষ একটু বেশি উত্তেজিত হয়, কেউ কেউ আবার ভীতও হয়ে ওঠে। বিজ্ঞান বলে, মানুষ সাধারণত অবাস্তব কাহিনীর জন্ম দেয় তার কল্পনাশক্তির ওপর ভর করে। হাজার বছর ধরে ভূতের গল্প প্রচলিত থাকলেও বিজ্ঞানের কাছে তার ব্যাখ্যা নেই।
বৈজ্ঞানিক যুক্তি অনুসারে শক্তি বিভিন্নভাবে বিরাজমান থাকতে পারে। তার রূপ পরিবর্তন করতে পারে। যেমন— তাপ, আলো, রাসায়নিক শক্তি, বৈদ্যুতিক শক্তি। শক্তি যে কোনো পরিবর্তন আনতে পারে। থার্মোডিনামিক্সে আলোচনার বিষয় এই শক্তি। থার্মোডিনামিক্সের প্রথম সূত্র অনুসারে শক্তি এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে পরিবর্তিত হতে পারে। কিন্তু তা সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যাবে না। পৃথিবীর মোট শক্তি এবং পদার্থ সবসময় ধ্রুব থাকবে।
থার্মোডিনামিক্সের দ্বিতীয় সূত্র অনুসারে একই ব্যবস্থার মধ্যে শক্তির পরিবর্তনের সময় যদি নতুন কোনো শক্তি না ঢুকে বা কোনো শক্তি বের না হয়ে যায় তবে সম্ভাব্য শক্তি সবসময় প্রাথমিক শক্তির চেয়ে কম থাকবে। এটাকে এনট্রপি বলে। একসময় সম্ভাব্য শক্তি কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে তালাবদ্ধ হয়ে পড়ে যা গতিশক্তিরূপে রূপান্তর হয়। এই শক্তি পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় কিছু শক্তি তাপশক্তি রূপে উড়ে যায়। ফলে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় যা পরিমাপ করাই এনট্রপির কাজ। শক্তির প্রবাহ ক্রম এবং জীবন বজায় রেখে চলে।
থার্মোডিনামিক্সের সূত্র যদি বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করা যায় তবে প্রমাণ করা সম্ভব ভূত আছে। কেউ তা না মানলেও কিছু প্রশ্নের জন্ম হবে। প্রথম সূত্র মতে শক্তির কোনো বিনাশ নেই, শুধু এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় যায়। তাহলে, আমরা যদি শক্তি হই তবে মৃত্যুর সঙ্গে আমরা বিনাশ হব না, শুধু রূপ পরিবর্তন হবে।
আমাদের শরীর বিশ্লিষ্ট হয় মাইক্রোঅর্গানিজম দ্বারা এবং এভাবে মানুষের শক্তির রূপ পরিবর্তিত হয়। কিন্তু আমাদের বুদ্ধিমত্তার কী হয় যা দ্বারা আমরা একটা পরিচয় বহন করি। আমাদের মন কি হাওয়ায় উড়ে যায়? এই পরিবর্তন কি মেনে নেওয়া যায়? বিজ্ঞানের চোখ কী বলবে, আমাদের বাইরেও অনেক প্রাণ আছে? এ হিসাব করলে কিন্তু ভূতের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলে। তবে ভূত বিষয়ক সব ঘটনাকেই বিজ্ঞানীরা মানুষের উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা বলে চালিয়ে দেন। তবে বৈজ্ঞানিক যুক্তির বাইরেও জগৎ আছে, ভাবনা আছে। সে হিসাবে ভূত থাকলে দোষের কী আছে?
আসুন, এবার বিশ্লেষণ করি-
ভূত বিষয়ক আলোচনায় যারা প্রথমেই বলেন, “আরে ধুর! ভূত বলে কিছু নেই”, তারা ভুল করেন। কারণ প্রথমেই যারা কোনো বিষয় অস্বীকার করে ফেলেন, তারা পুরোপুরি বিজ্ঞানমনস্ক না। তাদের উচিত তথ্য-প্রমাণ দাবি করা। যদি এগুলো থেকে থাকে, তবে সেগুলো যাচাই করে নেয়া, তারপর পরীক্ষণ, এবং সবশেষে উপসংহার টানা। তবে তাদের পক্ষে বলা যায়, কখনোই এসব বিষয়ের নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। ভূতে বিশ্বাসীরা শেষ পর্যন্ত বলে দেন, “এটা বিশ্বাসের ব্যাপার।” না, এটা বিশ্বাসের ব্যাপার না, বিজ্ঞান বিশ্বাসের ব্যাপার না, বিজ্ঞান প্রমাণ নির্ভর জ্ঞান। সেখানে বিশ্বাসের মূল্য নেই।
অনুচ্ছেদের শেষ ভাগে এসে লেখক লিখলেন-
“বিজ্ঞানের কাছে তার ব্যাখ্যা নাই”!
অথচ বিজ্ঞান ভূত দেখার ব্যাখ্যা অনেকবার দিয়েছে। এটা কখনো দৃষ্টিভ্রম, কখনো হ্যালুসিনেশন বা অমূলপ্রত্যক্ষ। আমাদের ব্লগেই আছে ভূত বা ভৌতিক কাণ্ডকে বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করে লেখা দুই পর্বের সিরিজঃ
অলৌকিক ঘটনাবলী এবং তাদের বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যাসমূহ – প্রথম পর্ব
অলৌকিক ঘটনাবলী এবং তাদের বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যাসমূহ- শেষ পর্ব
মানুষের মস্তিষ্ক একটি জটিল বস্তু। জানা মহাবিশ্বের সবচেয়ে জটিল বস্তুটি হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক, বলেছেন পদার্থবিদ মিশিও কাকু। তবে এটি ভুল মুক্ত নয়, এটি অনেক ক্ষেত্রেই ভুল করে। মানুষের মস্তিষ্ক একটি pattern creating machine, বলেছেন স্কেপটিক ম্যাগাজিনের মাইকেল শার্মার। মস্তিষ্কের এই ক্ষমতাটি যদিও একটা সময় আমাদের পূর্বপুরুষদের অনেক কাজে এসেছিল, এটা এখন আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি ছোট প্রাইমেটের জন্য শিকারী প্রাণীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা অনেক জরুরী, এটা প্রাণীজগতে বাঁচা-মরা নির্ধারণ করতে পারে। প্রাইমেটদের মস্তিষ্ক তাই শিকারী প্রাণী আর বন্ধুভাবাপন্ন প্রাণীর আকৃতি খুব ভালো করে জানতো, আর সেটার আকৃতির কাছাকাছি কোনো বস্তু বা আকৃতি দেখলেই প্রাইমেটদের সতর্ক করে দিতো। এটা শুনতে হয়ত বোকামী মনে হতে পারে, তবে শিকার-শিকারীর জগতে এই ছোট্ট ভুল বুঝাবুঝির জন্য অনেক প্রাণ বেঁচে যেত, আর তাই প্রাকৃতিক নির্বাচন এই বৈশিষ্ট্যটিকে টিকিয়ে রাখলো।
যারাই ভূত দেখেন বলে দাবি করেন, তারা মানুষের মতো অবয়ব দেখেন, বা পরিচিত প্রাণীর মতো অবয়ব দেখেন। কারণ তাদের মস্তিষ্কের সেই ক্ষমতা। মস্তিষ্কের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে হিপোক্যাম্পাসে, আর তার খুব কাছে আছে অক্সিপিটাল লোব, যা চোখের দৃষ্টির জন্য দায়ী।
চোখে পড়া আলো প্রথমে অক্সিপিটাল লোবে যায়। সেটা হিপোক্যাম্পাসের খুব কাছাকাছি হওয়ায় অনেক সময় দৃষ্টির কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি উত্তেজিত হয়, আর পুরোনো কোনো স্মৃতির তথ্য নতুন প্রাপ্ত তথ্যের সাথে মিশে যায়। ভীতিকর অবস্থায় সাধারণত মানুষ ভূতের ছবি দেখতে পায়, কারণ তার মস্তিষ্ক সেই তথ্যই ব্যবহার করবে।
হুমায়ূন আহমেদ মিসির আলীকে দিয়ে বলিয়েছিলেন, ভূতেরা সাদা কাপড় পড়ে থাকে কেনো? মানুষ মরে হয়তো ভূত হয়, কাপড় কি মরে?
লেখক থার্মোডিনামিক্সের কথা বলেছেন ভূতের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে। তিনি লিখেছেন,
“আমরা যদি শক্তি হই তবে মৃত্যুর সঙ্গে আমরা বিনাশ হব না, শুধু রূপ পরিবর্তন হবে।”
তারপর লেখক মানুষ মারা যাবার পর দেহ নির্গত আত্মার রূপ পরিবর্তিত হয়ে ভূতে রূপান্তরিত হওয়ার কথা বলে থার্মোডাইনামিক্সের প্রমাণ দিতে চেয়েছেন। এখন, বিজ্ঞানীদের জানামতে শক্তি হচ্ছে দুই প্রকার-
১) বিভবশক্তি বা Potential Energy: এটি হচ্ছে বস্তুর মধ্যে সন্নিবিষ্ট শক্তি। এটি রাসায়নিক, আণবিক, মহাকর্ষীয় বা যান্ত্রিক হতে পারে।
২) গতিশক্তি বা Kinetic Energy: এটি হচ্ছে বস্তুর গতির কারণে প্রাপ্ত শক্তি।
রণক সাহেবের উচিত হবে আত্মা নামক শক্তি রূপান্তরিত হয়ে ভূত নামক যে শক্তিতে পরিণত হল, সেই শক্তি প্রকৃতপক্ষে কোন ধরণের শক্তি, সেটা পরিষ্কার করে বলা। কারণ বস্তুর রাসায়নিক শক্তি, আণবিক শক্তি, মহাকর্ষীয় শক্তি বা যান্ত্রিক শক্তি দিয়ে ভূতের অস্তিত্ব ব্যাখ্যা করতে পারার কথা না। আর অশরীরী আত্মার গতিশক্তি থাকারও কথা না, কারণ তার ভর নেই। এছাড়া বিজ্ঞানের কাছে শক্তি পরিমাপের পদ্ধতি আছে। রণক সাহেব যদি কোনোভাবে বলতে পারতেন কোন শক্তিমাত্রা থেকে কোন শক্তিমাত্রা পর্যন্ত ভৌতিক শক্তির বিচরণ, তবে হয়তো বিজ্ঞানীরা আরো ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারতেন বিষয়টা।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আত্মার ধারণাটাই বৈজ্ঞানিক না। এমন কোনো পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ নাই যা সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করে আত্মা আছে। ১৯০৭ সালে ম্যাকডুগ্যাল নামের এক ডাক্তার দাবী করেন আত্মার ওজন ২১ গ্রাম, তিনি জীবিত অবস্থায় যক্ষা রোগীর ওজন নেন, আবার সেই রোগীর ওজন মৃত্যুর অব্যবহিত পরে নিয়ে দেখতে পান রোগীর ওজন ২১ গ্রাম কমেছে। যদিও তিনি পরীক্ষাটি করেন ৬ জন রোগীর উপর, আর তাদের সকলের ক্ষেত্রে ভিন্ন ফলাফল আসে। এছাড়াও তিনি ১৫টি কুকুরের উপর একই পরীক্ষা চালিয়ে কোন ফলাফল পান নি।
তার ২১ গ্রাম আত্মার ধারণা তাৎক্ষণিকভাবে সমালোচিত হয়। তিনি বা অন্য কেউ এই পরীক্ষা আর করেননি। জনপ্রিয় অপবিজ্ঞান ঘাতক ওয়েবসাইট স্নোপস, ম্যাকডুগ্যালের এই পরীক্ষার ব্যাখ্যা এবং ভুলগুলো ধরিয়ে দিয়েছে।
বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় তাঁর “মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে” বইয়ে ‘আত্মা’ নিয়ে বলতে গিয়ে লিখেছেন,
মানুষ চিন্তা করতে পারে বলেই নিজের ব্যক্তিত্বকে নিজের মত করে সাজাতে পারে, সত্য-মিথ্যের মিশেল দিয়ে কল্পনা করতে পারে তার ভিতরে ‘মন’ বলে সত্যই কোন পদার্থ আছে, অথবা আছে অদৃশ্য কোন আত্মার আশরীরী উপস্থিতি। মৃত্যুর পর দেহ বিলীন হয়। বিলীন হয় দেহাংশ, মস্তিস্ক স্নায়ুকোষ। আসলে মস্তিষ্ক স্নায়ুকোষের মৃত্যু মানেই কিন্তু ‘মন’ এর মৃত্যু, সেই সাথে মৃত্যু তথাকথিত আত্মার। অনেক সময় দেখা যায় দেহের অন্যান্য অংগ প্রত্যংগ ঠিকমত কর্মক্ষম আছে, কিন্তু মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হারিয়ে গেছে। এ ধরনের অবস্থাকে বলে কোমা। মানুষের চেতনা তখন লুপ্ত হয়। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা হারানোর ফলে জীবিত দেহ তখন অনেকটা জড়পদার্থের মতই আচরণ করে।
ইকরাম শেষ অনুচ্ছেদে লিখেছেন-
“বুদ্ধিমত্তার কী হয়?”
মৃত্যুর পরে আমাদের বুদ্ধিমত্তার কী হয় তা নিয়েই প্রশ্ন রেখেছেন। তিনি কেন ধরে নিচ্ছেন যে, বুদ্ধিমত্তা একটি সত্ত্বা? মস্তিষ্কের দুইটি মেরুর সমন্বয়ই প্রাণীর বুদ্ধিমত্তার জন্য দায়ী। লেখকের সেটা জানার কথা। হয়তো তিনি জানেন কিন্তু লিখতে ভুলে গেছেন, বা ইচ্ছা করে এড়িয়ে গেছেন। তার যুক্তি অনুসারেই মরে যাওয়ার পর মস্তিষ্ক “বিশ্লিষ্ট হয় মাইক্রোঅর্গানিজমের দ্বারা“, মানে পুরো শরীরের মত মস্তিষ্কও পচে যায়। মৃত্যুর পরে শরীরের পচনের ধাপগুলো নিয়ে এই লেখাটি পড়ুন।
লেখক জানতে চেয়েছেন-
“মন কী হাওয়ায় উড়ে যায়?”
অথচ তিনি মনের কোনো সংজ্ঞা দেননি! মন বলতে কি ব্যক্তিত্ব বুঝিয়েছেন? সেটার জন্যও তো মস্তিষ্কই দায়ী। তিনি যদি ধরে নিতে পারেন মন হাওয়ায় উড়ে এসেছে, কারণ তিনি মনের কোনো উৎসের কথা লিখেননি, তিনি কি মেনে নিতে পারেন না যে মন হাওয়ায় উড়ে যায়?
তিনি এলিয়েনদের কথা বলেছেন-
“আমাদের বাইরেও প্রাণ আছে”!
প্রিয় পাঠক, আপনাদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম, ধরুন আপনি কয়েক আলোকবর্ষ আন্তঃনাক্ষত্রিক যাত্রা করে এসেছেন, অন্য একটি গ্রহে গিয়ে বুদ্ধিমান প্রাণের সন্ধানও পেয়েছেন, আপনি কী করবেন? তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করবেন, নাকি তাদের ভয় দেখাবেন?
কথার মত কথা রণক ইকরাম একটাই লিখেছেন,
“ভূত বিষয়ক সব ঘটনাকেই বিজ্ঞানীরা মানুষের উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা বলে চালিয়ে দেন।”
রণক কলামটির নাম দিয়েছেন “বৈজ্ঞানিক যুক্তি”। অথচ তিনি কলামটি শেষ করেছেন এই বলে,
“তবে বৈজ্ঞানিক যুক্তির বাইরেও জগৎ আছে, ভাবনা আছে। সে হিসাবে ভূত থাকলে দোষের কী আছে?”।
কোথায় বৈজ্ঞানিক যুক্তি আর প্রমাণ দিবেন তিনি, তা না করে তিনি বিজ্ঞানের অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে অপবৈজ্ঞানিক ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলেন!
এসব লেখাকে বলা হয় “Shit Sandwich”, দুইটা বৈজ্ঞানিক ধারণার মাঝে একটি অপবৈজ্ঞানিক ধারণা ঢুকিয়ে দিয়ে সেটা মানুষকে গেলানোর অপচেষ্টা! সব কিছুকে বৈজ্ঞানিক বানানোর একটা অপচেষ্টা বর্তমানে লক্ষণীয়। তবে আমাদের বোধ্যগম্য হয় না, কীভাবে একটি জাতীয় দৈনিকে এমন প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে পারে? প্রকাশিত যেহেতু হয়েছে, সেহেতু আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সেটার ভুল ধরিয়ে দিয়ে প্রতিবাদ করা। এবং আমরা সেটাই করতে চেষ্টা করেছি বিজ্ঞানযাত্রার এই প্রবন্ধটি দিয়ে। আশা করি, আপনারাও “বাংলাদেশ প্রতিদিন”-এ প্রকাশিত এই ভ্রান্ত প্রবন্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হবেন!
বিজ্ঞানের নামে সকল অপবিজ্ঞান আর ছদ্মবিজ্ঞানের বিরুদ্ধে আমাদের এই প্রতিবাদ চলবে।
#বিজ্ঞানযাত্রা_চলবে
দারুণ একটা লেখা! মূল ধারার মিডিয়ায় এমন একটা হালকা চালের লেখা গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিৎ নয়। ধন্যবাদ শোভন রেজা, পরিশ্রম করে এমন একটা তথ্যবহুল লেখা দাঁড় করাবার জন্যে।
বিজ্ঞানযাত্রা চলবে…..
সব ধন্যবাদ ইসমাইল ভাই আর রুথ দি পাবেন।
আপনি কই? অনেক মিস করি।