মহাকাশযান, পর্ব ১ – শুরুটা যেভাবে

পূর্বকথা

আসলে আমি লেখাটা শুরুর আগে ভেবেছিলাম কেবলমাত্র ভবিষ্যতের প্রস্তাবিত মহাকাশযান ও তাদের গঠনপ্রকৃতি নিয়েই লিখব। কিন্তু পরে মনে হল লিখবই যখন তখন আগের ও বর্তমান মহাকাশযানগুলোর ব্যাপারেও খানিকটা লিখে ফেললে মন্দ হয় না। কার্ল সেগান বলেছিলেন, আমরা দাঁড়িয়ে আছি মূলত আমাদের পূর্বপুরুষদের কৌতুহলী মনোভাব ও অর্জিত জ্ঞানের উপর। আমরা আজ যা করছি তার ফলাফলটাই ভবিষ্যত প্রজন্মের আরো ভালো কিছু উদ্ভাবনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। পুরো লেখাটাকে তিনটা পর্বে লেখার ইচ্ছে আছে। টাইটেল পড়ে আশা করি বুঝে ফেলেছেন যে আজ কেবল শুরুর দিককার কিছু কথাই বলবো। আমার মনে হয় মহাকাশযানের শুরুর দিককার অনেক ব্যাপারই সবার ভালোভাবে জানা নেই। আর টাইটেলে শুধু মহাকাশযানের কথা থাকলেও কৃত্রিম উপগ্রহের কথাও খানিকটা রাখতে হচ্ছে , কারণ মহাকাশযানের পর্যায়ক্রমিক উন্নয়নে এদেরও কিছুটা ভুমিকা ছিলো।

মহাকাশযান

মহাকাশযানের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনায় যাবার আগে কিছু ব্যাপার জানিয়ে রাখি। পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে মোটামুটি একশো কিলোমিটার উপরের অঞ্চল থেকেই মহাকাশের শুরু বলে ধরে নেওয়া হয় । এটার নাম কারমান লাইন। বেশিরভাগ জেট প্লেন ১৫ কিলোমিটারের উপরে চলাচল করে না। সবচেয়ে নিচে চলাচল করা লিও স্যাটেলাইট (লো আর্থ অরবিট) ১৬০ কিলোমিটার উপরে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। সবচেয়ে উঁচুতে থাকা স্যাটেলাইট ফ্রিজেলের ক্ষেত্রে এই উচ্চতাটা প্রায় ৮০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। মহাকাশযানের গতি নির্ধারিত হয় এর নির্গমনকারী গ্যাসের গতির উপর। দূরপাল্লার যাত্রার ক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণজনিত বাধা অতিক্রম করার জন্য একটা নির্দিষ্ট বেগে অগ্রসর হতে হয়, যাকে বলা হয় মুক্তিবেগ। পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই মান ১১.২ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে। মহাকাশযানের গতি ও জ্বালানীর ব্যাপারগুলো বিভিন্ন অংশে আলোচনা করা হবে।

মহাকাশযানের কথা বলতে গেলে রকেটের কথা চলে আসে। রকেট বর্তমানে মূল যানের ফেরী হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ রকেট একটা নির্দিষ্ট অঞ্চল পর্যন্ত মূল মহাকাশযানকে বহন করে নিয়ে যায়। সবাই আশাকরি জানেন রকেট মূলত নিউটনের গতির তৃতীয় সুত্র অনুযায়ী কাজ করে।

rocket1

নিউটনের তৃতীয় সুত্র

অনেকেই ভাবতেই পারেন রকেট জিনিসটা বেশিদিন আগের চিন্তাভাবনা নয়, কিন্তু সত্যটা হলো একেবারে কাছাকাছি না হলেও রকেটজাতীয় বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনার জন্ম হয়েছে দুই হাজার বছর আগেই। আনুমানিক ৪০০ খ্রীস্টাব্দে গ্রীক এক ব্যক্তি প্রথম একটা কাঠের কবুতরকে তারের সাথে বেঁধে এর পেছন থেকে কোন কিছু দিয়ে ধোঁয়া তৈরী করে ওই ধোঁয়া দিয়ে কবুতরকে তারের একপাশ থেকে অন্যপাশে নিয়ে যাওয়াটা দেখিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন স্থানীয় লোকজনকে। এর তিনশো বছর পর আরেক গ্রীক যার নাম হিরো অব আলেকজান্দ্রিয়া, বাষ্পের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চমৎকার একটা মডেল তৈরী করেন। তার ওই মডেলে একটা কেতলির উপর রাখা একটা গোলক বাষ্প নির্গমনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটা অক্ষ বরাবর ঘুরতে পারতো।

history1

হিরো অব আলেকজান্দ্রিয়ার তৈরী মডেল

এই মডেলটার ব্যাপারে বেশিদূর আগাতে চাচ্ছি না। নাসার একটা পেইজে এই ব্যাপারে কিছু কথা আছে, পড়ে নিতে পারেন। এর পরের ধাপটা এগিয়েছে চীনা অ্যালকেমিস্টের হাত ধরে। তারা গানপাউডার জিনিসটা আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। তখন চীনাদের কাছে অগ্নিবাণ বা Fire arrow বলে একটা অস্ত্র থাকতো যেটাতে তীরের সাথে একটা বাঁশের তৈরী টিউবে গানপাউডার ভরা থাকতো । কিছুদিন পরেই তারা বুঝতে পারলেন যে গানপাউডারের বিষ্ফোরণে পেছনে নির্গত গ্যাস অপেক্ষাকৃত বড় ধরনের টিউবকেও দূরে ছুড়ে ফেলতে সক্ষম। চেঙ্গিস খানও এই জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার করেছেন বলে শোনা যায়।

images

চীনাদের পরে জার্মান, ব্রিটিশ ও ফরাসীরাও দূরবর্তী স্থানে হামলার জন্য এই ধরনের বিষ্ফোরক ব্যবহার করেছিল। বুঝতেই পারছেন আমাদের উন্নত মহাকাশযান তৈরির প্রথম ধাপটা মোটেও ভালো কোনো উদ্দেশ্য থেকে আসেনি। যুদ্ধবাজেরা হয়তো এটার ভালো দিকটা নিয়ে কখনোই ভাবেইনি। তবে তাদের মধ্যে একজন ছিলেন যিনি সম্ভবত একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করেছিলেন। ওয়ান হু নামের চীনা এক লোক তার একটা চেয়ারের সাথে সাতচল্লিশটা রকেটজাতীয় অস্ত্রগুলো বেঁধে তার সহকর্মীদের বলেছিলেন আগুন জ্বালিয়ে দিতে। চেয়ারের সাথে উনি বড় দুটো ঘুড়িসদৃশ পাখা লাগিয়েছিলেন।

history3a

যদিও ফলাফল ছিলো হতাশব্যাঞ্জক। সাতচল্লিশটা রকেটের বিষ্ফোরণের পর ধোঁয়ায় আছন্ন হয়ে পড়ে জায়গাটা। ধোঁয়া কমে আসার পর সহকর্মীরা সেখানে গিয়ে ওয়ান হু কিংবা তার চেয়ার কোনোটারই অস্তিত্ব খুজে পাননি।

নিউটনের গতির সুত্র, বিশেষ করে তৃতীয় সুত্রের আবির্ভাব রকেট নিয়ে গবেষণার পথকে মসৃণ করে তোলে। কিন্তু ভালো কাজে রকেটের ব্যবহার হয়নি মোটেও। আঠারোশ শতকের মাঝামাঝিতে যুদ্ধক্ষেত্রে রকেটের নাম দেয়া হল মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র। জার্মান ও রাশিয়ানরা ভারী ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে গবেষণা শুরু করে।

১৮৯৮ সালে এসে সিওলকোভস্কি নামের এক রাশিয়ান স্কুল শিক্ষক একটি রিপোর্টে তরল জ্বালানী (লিকুইড প্রোপ্যালান্টঃ প্রোপেল্যান্টের কোনো বাংলা অর্থ খুঁজে পাইনি। সাধারণত যে কোনো পদার্থ যেটা শক্তি উৎপন্ন করতে সক্ষম সেটাকে প্রোপেল্যান্ট বলা হয়। যেমন গ্যাসোলিন) ব্যবহার করে রকেট অনেক দূরে প্রেরণ করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন নিক্ষিপ্ত রকেটের গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এর থেকে নির্গত গ্যাসের পরিমাণ ও গতির পরিবর্তনের মাধ্যমে। সিওলভস্কির এই দূরদর্শী চিন্তাধারার কারণে তাকে আধুনিক অ্যারোনটিকস বা উড্ডয়নবিদ্যার জনক বলা হয়ে থাকে।

সিওলকোভস্কি তার চিন্তাভাবনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে না পারলেও বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে একজন আমেরিকান তা পেরেছিলেন। তার নাম রবার্ট গডার্ড। মূলত মহাকাশযান নির্মানের ক্রমধারায় এই ব্যাক্তির অবদানই ছিলো সবচেয়ে বেশী। অল্প বয়স থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন একদিন মানুষ এই কাদামাটির ছোট্ট পৃথিবী ছেড়ে অনেক দূরে পাড়ি জমাবে।

rhg-with-a-series-rocket

রবার্ট গডার্ড ও তার রকেট

গবেষণার জন্য রকেট নির্মাণের কাজটা সর্বপ্রথম তিনিই শুরু করছিলেন। প্রথমে তিনি কঠিন অবস্থার জ্বালানী (সলিড ফুয়েল) দিয়ে রকেট নির্মাণের চেষ্টা করলেও পরে বুঝতে পারেন যে তরল জ্বালানীই বেশী উপযোগী দূরপাল্লার যাত্রার জন্য। তার কাজটা ছিলো বেশ কঠিন কারণ সে সময়ে তার আগে এই ধরনের গবেষণা কেউ করেনি। এজন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা পেতে তার বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। দূরপাল্লার রকেটের পরীক্ষা তিনি বেশ কয়েকবার করেছেন এবং ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু দমে যাননি। কাজগুলো ছিলো বিরক্তিকর। প্রতিবার বিষ্ফোরণের পর নতুন করে ভাবতে হতো এবং নতুন কোনো পদ্ধতি ভেবে বের করতে হতো। গডার্ড বেশ সৌভাগ্যবান ছিলেন কারণ তার কখনোই তহবিলের অভাব হয়নি কারণ আমেরিকান সরকার সেনাবাহিনীতে ক্ষেপণাস্ত্রের আরো উন্নয়ন চাচ্ছিলো । বেশ কয়েকবার ব্যর্থতার পরে ১৯২৬ সালে গডার্ড তার রকেটের একটা প্রোটোটাইপ বানাতে সক্ষম হন যেটার জ্বালানী হিসাবে ছিলো তরল অক্সিজেন ও গ্যাসোলিন। তবে এটার প্রথম যাত্রা স্থায়ী হয় মাত্র আড়াই সেকেন্ড। এই আড়াই সেকেন্ডে এটি সাড়ে বারো মিটার উচ্চতায় উঠে ও ছাপ্পান মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। রাইট ভাতৃদ্বয়ের প্রথম বিমান উড্ডয়নের মত গডার্ডের রকেট অতটা ইমপ্রেসিভ না হলেও এটা রকেট গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা করে। গডার্ডকে আধুনিক রকেটিয় প্রকৌশলের জনক বলা হয়ে থাকে।

rocket

১৯২৬ সালের প্রথম সাফল্যের পর আমৃত্যু গডার্ড চেষ্টা করে গেছেন রকেটের উন্নয়নে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন মানুষ তার রকেটে চেপে অনেক দূরে যাবে। তিনি মঙ্গলগ্রহ পর্যন্ত গমনের স্বপ্ন দেখতেন তবে জনসম্মুখে সেই আকাঙ্খার কথা প্রকাশ করতেন না। কিন্তু তখন সেটা ছিলো অসম্ভব এক কল্পনা। মানুষ তার স্বপ্ন শুনে হাসিঠাট্টা করতে পারে এই ভেবে তিনি অনেক ছোট লক্ষ্য চাঁদের কথা বলতেন। ১৯৪০ সালের দিকে বড় পরিসরে আমেরিকা, জার্মানী ও সোভিয়েতভুক্ত বেশ কিছু দেশে মহাকাশ গবেষণা ও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির নিমিত্তে দূরপাল্লার রকেট নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমেরিকা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে রকেট গবেষণার দিক দিয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আমেরিকা প্রথম দিকে এটাতে বেশী গুরুত্ব দেয়নি। সোভিয়েতরা ১৯৫৭ সালে পুরো পৃথিবীকে চমকে দিয়ে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠায় মহাকাশে। স্পুৎনিক-১ শুধুমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়নের বড় সাফল্য না বলে পুরো মানবজাতিরই বড় এক সাফল্য বললেও ভুল হবে না। ৮৩ কেজি ওজনের গোলাকার স্পুৎনিক-১ যাত্রা শুরু করে ৪ঠা অক্টোবর ১৯৫৭ সালে। চারটা অ্যান্টেনার সাহায্যে এটা রেডিও সিগন্যাল প্রেরণ করতে পারতো। এতে ছিল তিনটি শক্তিশালী সিলভার-জিঙ্ক ব্যাটারী। টানা বাইশ দিন স্পুৎনিক-১ রেডিও সিগন্যাল পাঠিয়েছিলো এরপরে রেডিও ট্রান্সমিটারের ব্যাটারি শেষ হয়ে গেছিলো। এতে কোনো সেন্সর লাগানো না থাকলেও রেডিও ডাটা ব্যাবহার করে বেশ কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল।

স্পুৎনিক-১

স্পুৎনিক-১

স্পুৎনিক-১ এর গতিও ছিলো অনেক, মাত্র ৯৬ মিনিটে সে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পারতো। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল সেকেন্ডে ৮১০০ মিটার। বরাবর তিন মাস পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করার পর বায়ুমণ্ডলের সাথে সংঘর্ষে পুড়ে ছাই হয়ে পৃথিবীতে ঝরে পড়ার আগে স্পুৎনিক পাড়ি দেয় প্রায় ৭ কোটি কিলোমিটার। স্পুৎনিককে পাঠানো হয় একটা রকেটের সাথে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত। ওই রকেটটায় জ্বালানী হিসেবে কেরোসিন টি-১ , তরল অক্সিজেন ও শুষ্ক নাইট্রোজেন ব্যবহৃত হয়েছিলো।

স্পুৎনিক-১ শুধু যে মহাকাশ গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত করে এমনটা নয়, এটি পুরো বিশ্বজুড়ে সোভিয়েতের মানমর্যাদা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। আমেরিকার তা পছন্দ হয়নি। তারাও স্পুৎনিক-১ ধ্বংস হবার কিছুদিন আগে তাদের কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠায় যার নাম ছিলো এক্সপ্লোরার-১। কিন্তু এক্সপ্লোরার-১ মোটেও স্পুৎনিক-১ এর মত সফল ছিলো না। স্পুৎনিক-১ এর সফলতা আমেরিকা মোটেও ভালো চোখে দেখেনি। তারা মহাকাশ গবেষণায় আরো অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেয় । এরই ধারাবাহিকতায় গড়ে ওঠে নাসা। নাসা বর্তমানে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে তীর্থস্থানতুল্য। হতে পারে আমেরিকা নাসার জন্ম দিয়েছে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কিন্তু এর ফলাফলটা ছিলো অসাধারণ। নাসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ মহাকাশ অভিযান চালিয়েছে এবং অনেকগুলোই সফলতার মুখ দেখেছে। প্রতিষ্ঠার পনেরো বছরের মধ্যে বারোটি মহাকাশ অভিযান চালায়। এই সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও নাসার মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে কে কার আগে উন্নততর মহাকাশযান বানাতে পারে। এই প্রতিযোগিতাটা বলা যেতে পারে মহাকাশ গবেষণাকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছিলো। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জিতেছিলো নাসা। তাদের অ্যাপোলো সিরিজের যানগুলো মানুষ পরিবহনের সক্ষমতা ছাড়াও প্রথম সরাসরি টিভি সম্প্রচার, চাঁদকে প্রদক্ষিণ করা ইত্যাদিতে সফল ছিলো। এই সময় যানগুলোর গতি ছিলো ম্যাক ৬.৭ (৩৩২*৬.৭ মি/সেকেন্ড)। আর ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মানুষকে নিয়ে যায় চাঁদের বুকে।

অ্যাপোলো ১১

অ্যাপোলো ১১

অ্যাপোলো ১১ এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলো সেকেন্ডে বারো কিলোমিটারের কাছাকাছি। অ্যাপোলোকে বহন করা রকেটের নাম ছিল স্যাটার্ন-ভি যার জ্বালানী হিসেবে ছিলো তরল অক্সিজেন, হাইড্রোজেন ও বিশেষায়িত কেরোসিন। চন্দ্রবিজয় নিয়ে হয়তো আরো কথা লেখা যেত কিন্তু আমি মূল ফোকাসটা মহাকাশযানের দিকেই রাখছি তাই অন্য কোনো বিষয়ে লিখছি না।

চন্দ্রবিজয়ের পরেও আরো বেশ কয়েকটি সফল পরীক্ষা চালিয়েছে নাসা। এই সময়েই পাইওনিয়ার সিরিজের যানগুলোর বিকাশ হয় এবং এদের গতি প্রায় পূর্বেকার যানগুলোর দেড় গুণ ছিলো। মোটামুটি পরবর্তী এক দশকে বিশাল কোন উন্নয়ন সাধন হয়নি বলা চলে। নতুন ধরনের জ্বালানী পরীক্ষা ও কিছু নতুন নতুন সংবেদী যন্ত্র বসানো হয়েছিলো কেবল, সেগুলোও নিয়েও লেখার ইচ্ছা আছে। আর বিভিন্ন সময়ে মহাকাশযান নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষার একটা লিস্ট পাবেন এখানে।

আজ এতটুকুতেই শেষ করি। বর্তমানে মহাকাশযান নিয়ে কী রকম গবেষণা বা অভিযান চলছে সেটা নিয়ে দ্রুতই লিখবো আশা করি। আপনাদের কোনো মতামত থাকলে জানাতে ভুলবেন না।

Comments

Avatar

Md. Abdullah Al Zaman (Proyash)

লিখতে ভালোই লাগে। আর বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির জন্য বিজ্ঞানযাত্রা একটা চমৎকার জায়গা। তবে নিয়মিত লেখালেখি করা হয়ে ওঠেনা। চেষ্টা করি তবুও।

আপনার আরো পছন্দ হতে পারে...

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
জানান আমাকে যখন আসবে -
guest
2 Comments
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত
Inline Feedbacks
View all comments
প্রীতম
8 বছর পূর্বে

দারুন সিরিজ শুরু করেছেন প্রয়াস ভাই 🙂 আমার স্বপ্ন আমাদের দেশও স্পেস মিশনে নাম লেখুক। একদিন হয়তো হবে। আপনার লেখা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

S. A. Khan
8 বছর পূর্বে

You may get some information about the latest spaceships here for your next articles.
https://bigganjatra.org/orion_next_generation_spaceship/

2
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x