সে অনেককাল আগের কথা। মাউন্ট অলিম্পাস পর্বতের মাথায় দেবতাদের যুদ্ধ লেগেছে। দেবতারা বিএনপি-আওয়ামী লীগের মতো করে দুই ভাগ হয়ে মারামারি করছে। তাদের এক দলের নাম অলিম্পিয়ানস, এই দলে আছে জিউস, হেরা, এ্যাথেনা, এ্যাপোলো এবং আরো গণ্যমান্য দেবতা । আরেক দলের নাম খুলনা টাইটান্স, থুড়ি, শুধু টাইটান্স। দলে আছে এটলাস, ইউরেনাস, ক্রোনাস ইত্যাদি হার্ড হিটার ।
১০ বছর ধরে Titan war চলার পরে যুদ্ধ থামল । অলিম্পিয়ানরা জিতলো, আর টাইটানরা হেরে গেলো। টাইটান দেবতাদের অনেককে ফাঁসি দেওয়া হল, অনেককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড বা অন্য শাস্তি দেওয়া হলো।
দেবতা এটলাস কে আজব একটা শাস্তি দেওয়া হলো। সে ঘাড়ে করে পুরা স্বর্গ ক্যারি করে দাঁড়িয়ে থাকবে পৃথিবীর সর্ব পশ্চিমের জায়গায়।
এই এটলাসের ছিলো ৭ মেয়ে । মাইয়া, ইলেক্ট্রা, এ্যালসিওন, টাইগেট ,সেলেনাও, স্টেরোপ আর মেরোপ (বাংলায় – সন্নতি, সম্ভূতি, অনসূয়া, লজ্জা, প্রীতি, দেবসেনা)। এটলাস শাস্তি পালন করতে চলে গেছে । বাসায় যেহেতু বাবা নেই, এটলাসের এই ৭ টা মেয়েকে এলাকার বখাটে ছেলে অরায়ন অনেক বিরক্ত করা শুরু করলো।
৭ মেয়ে তখন দেবতা জিউসের কাছে দোয়া করলো। দেবতা যাদু মন্ত্র দিয়ে এই ৭ কন্যাকে ঘুঘু বানিয়ে দিলো। অরায়ন বলল, ঘুঘু দেখেছো, ঘুঘুর ফাঁদ দেখোনি। সে তখন ঘুঘু-রুপী মেয়েদেরকে শিকার করার চেষ্টা করলো। মেয়েরা জিউসের কাছে দোয়া করলো। ”ঘুঘু হয়েও তো আমরা শান্তিতে থাকতে পারছি না। আমাদের একটা সাস্টেইনেবল সল্যুশন দেন। দেবতা হয়ে কী করেন ? সব কিছু এ্যাডহক বেসিসে সল্ভ করলে হবে,এ্যা ? ”
জিউস তখন বললো, যা তোদেরকে আকাশের তারা বানিয়ে দিলাম। এইবার তোরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমা ।
৭ টা মেয়ে আকাশের ৭ টা তারা হয়ে একসাথে বসে থাকলো। একসাথে এদের নাম হল প্লাইডিস (Pleiades)। ইংরেজিতে Seven Sisters. বাংলায় কৃত্তিকা । আরবিতে সুরাইয়া । ফার্সিতে পারভিন।
অরায়ন তখন প্লাইডিসকে ধরার জন্য সে ও আকাশের তারা হয়ে গেল । রাতের আকাশে প্লাইডিস-এর একটু দূরেই দেখা যায় অরায়ন (বাংলায় কালপুরুষ) নক্ষত্রমণ্ডলী হাত পা উচিত প্লাইডিসকে ধরার জন্য দৌড়াচ্ছে।
২.
আকাশের তারকাগুলোর কোনো মা বাপ নেই। একদম বানের জলে আসার মতো অবস্থা । কয়েকটা তারা একসাথে দেখে যে যেমন পারে তেমন প্যাটার্ন বানায়। কেউ সেখানে বাঘ-সিংহ দেখে, কেউ সাপ-বিছা দেখে, আবার কেউ সেখানে সুন্দরী মেয়ে, নর্তকী ইত্যাদি দেখে । যার মনে যা আছে আর কী! তারকাগুলোর এই প্যাটার্ন দেখে একেকজন একেক রকম গল্পও বানায় । কারো গল্প যদি বেশি লাইক পায়, তাহলে সেই গল্প বেশি বেশি শেয়ার হয়। বেশি বেশি মানুষ সেই গল্পে বিশ্বাস করা শুরু করে।
প্লাইডিসকে নিয়ে বিকল্প গল্পও আছে। টরাস (বাংলায় বৃষ) নক্ষত্রমণ্ডলী এই প্লাইডিসকে ধরার জন্য ছুটছে। আর অরায়ন (কালপুরুষ) লাঠিসোটা, ঢাল, তলোয়ার দিয়ে টরাসকে ঠেকানোর চেষ্টা করছে –এইরকম গল্পও জনপ্রিয়।
আরো একটা গল্প শুনাই। এইটা মিডল ইস্টের গল্প । সুরাইয়া (মানে প্লাইডিস/কৃত্তিকা) ৭টা মেয়ে নয়। সুরাইয়া হচ্ছে মাত্র ১টা মেয়ে। এই মেয়ের বয়ফ্রেন্ডের নাম হচ্ছে আল দাবরান (ইংরেজি Aldebran, বাঙলা হলদীবরণ)। এই নায়ক আল দাবরান নায়িকা সুরাইয়াকে দাবড়াচ্ছে। মানে, ধাওয়া করছে ।
মোরগ যখন মুরগীকে ধাওয়া করে, মুরগী তখন লোক দেখানোর জন্য কিছুক্ষণ দৌড়ায়। দৌড়াতে দৌড়াতে ভাবে, আমি কি বেশি জোরে দৌড়াচ্ছি? একটু পরে ১০ মিটার স্প্রিন্ট শেষ করে মোরগের কাছে রেসে হেরে যায় সে, ইচ্ছা করেই! আল দাবরানের দাবড় খেয়ে সুরাইয়া কতদূর পরে দৌড় শেষ করে, সেটাই দেখার বিষয়। তবে গত কয়েক হাজার বছর ধরে এদের মিলন হচ্ছে না । সুরাইয়ার পিছনে আল দাবরান ছুটেই যাচ্ছে, মেয়েটা ধরা দিচ্ছে না এখনো।
৩.
প্রাচীন সব সভ্যতার জ্যোতিষীরাই সুরাইয়াকে দেখেছিলেন। সুরাইয়াকে নিয়ে তাদের নিজেদের মত গল্প-মিথ বানিয়েছেন। গ্রীক, রোমান, আরব, ভারতীয় থেকে শুরু করে, চায়না,জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ল্যাটিন আমেরিকাতেও সুরাইয়াকে নিয়ে গল্প পাওয়া যায়। বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্টে প্লাইডিস এর নাম আছে।
কোরান শরীফের সূরা নজমে এক নক্ষত্রের কথা আছে, অনেকে দাবি করেন, সেটা সিরিয়াস নক্ষত্র, অনেকে বলেন সেটা সুরাইয়া ।
সাম্প্রতিককালে সুরাইয়া তারা নিয়ে নতুনভাবে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছিলো। একটি হাদিস পাওয়া গেছে, সেখানে বলা হয়েছিলো , আকাশে সুরাইয়া উঠলে মহামারী থাকবে না। এই হাদিসকে সূত্র ধরে, অনেকে দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে বলছেন ,রাতের আকাশে সুরাইয়া উঠলে (এ্যাপ্রোক্সিমেটলি ১২ মে) করোনো মহামারী পুরাপুরি চলে যাবে।
৪.
আকাশের তারা কে নিয়ে বানানো গল্প, এমনকি তারাদের নিয়ে বানানো প্যাটার্ন বা ছবিও ভিন্ন হতে পারে। আমি তারাগুলাকে যেভাবে লাইন টেনে মিলিয়ে মিলিয়ে গরু আঁকাচ্ছি, আপনি হয়তো সেটাকে ঘোড়াও আঁকাতে পারেন। আপনার দৃষ্টিভংগি বা ক্রিয়েটিভিটির উপর নির্ভর করে।
দেখা গেছে, আকাশের একই তারা বা নক্ষত্রমণ্ডলীকে বিশ্বের সব মানুষই দেখছে, কিন্তু এর সাথে তারা একেক ধরনের ছবি/প্যাটার্ন মিলাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ উত্তর আকাশের ধ্রুব তারার পাশের ৭ টা উজ্জ্বল তারাকে ধরুন।
ভারতীয়রা একে সপ্তর্ষিমণ্ডল বলে। তাদের বিশ্বাস, ৭ জন ঋষি এখানে তারা হয়ে বসে বসে ধ্যান করছেন । নিজেদেরকে তারা একটা প্রশ্নবোধক চিহ্নের মত করে সাজিয়েছেন ।
নর্থ আমেরিকানরা একে হ্যান্ডেলওয়ালা রান্নার পাত্র হিসেবে কল্পনা করেছে। একে নাম দিয়েছিল Big Dipper.
ফ্রেঞ্চরাও একে রান্নার পাত্র হিসেবেই দেখেছে । তারা এর নাম দিয়েছে la casserole. ফ্রেঞ্চ ভাষায় ক্যাসারোল মানে পাত্র।
ইংল্যান্ডের কৃষকরা এই একই তারকাগুলাকে কল্পনা করেছে তাদের ফসলের ক্ষেতের লাঙ্গল হিসেবে । আমাদের জাতীয় পার্টির লাংগলের মত দেখতে না এটা । ওদের দেশের কাস্টমাইজড লাংগল।
গ্রীকরা এটাকে দেখেছে একটা ভাল্লুক (Ursa major) এর ল্যাঞ্জা হিসেবে।
উত্তর ইউরোপের লোকেরা এটা দেখে বলেছে, ঘোড়ায় টানা রথ/চ্যারিয়ট/ ওয়াগন যাচ্ছে আকাশ দিয়ে।
চাইনিজরা দেখেছে আরেকটু বেশি। তারা দেখেছে, আকাশের রাজা রাজ সিংহাসনে বসে বিচার করতেছে । তার সামনে ২ জন বিচারপ্রার্থীও আছে।
মিশরের মানুষজন আরেকটু বেশি মাত্রায় হাই হয়ে গেছিলো । তারা এখানে দেখেছে প্রথমে একটা ঘোড়া। ঘোড়ার সাথে দড়িতে বেধে এক কয়েদীকে ছেঁছড়াতে ছেঁছড়াতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর পিছনে একজন শিকারী ঘোড়াটাকে ধাওয়া করছে। শিকারীর পিঠে আবার একটা মরা কুমীর।
বিশ্বকবি রোদ্দুর রয়ের পক্ষেও সম্ভব না এত হাই হওয়া!
৫.
আকাশে এইরকম ৮৮টা তারামন্ডলী আছে । একেকটায় একেক রকম কাল্পনিক ছবি । কোনো মণ্ডলী সারা বছর থাকে আকাশে । কোনোটা নির্দিষ্ট মাসেই শুধু ওঠে।
এই ৮৮টা মণ্ডলীর মধ্যে ১২টা মণ্ডলীর মাঝেই শুধু সূর্য আসা যাওয়া করে। সেই ১২টা মণ্ডলীকে নিয়ে কমার্শিয়াল জ্যোতিষীরা রাশিচক্র বানিয়েছেন । মেষ, বৃষ, মিথুন, কর্কট, সিংহ, কন্যা, তুলা, বৃ্শ্চিক, ধনু, মকর, কুম্ভ ও মীন– এই ১২টা রাশিকে ১২ মাসে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
জ্যোতিষীরা দাবি করেন, কোনো ব্যক্তি যে তারিখে জন্মগ্রহণ করেন, সেই তারিখে আকাশে যে তারা মণ্ডলী বেশি উজ্জ্বল থাকে, ওই ব্যক্তি সেই রাশির মধ্যে পড়েন এবং সেই রাশির তারকাগুলোই তার ভবিষ্যত জীবন নিয়ন্ত্রণ করে।
ইউজুয়ালি, তারা অতীতের কোনো ঘটনা রেকর্ড করে। তারপর সেই ঘটনার সাথে আকাশের চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র মিলায় । এরপরে আবার আকাশে সেই সিকুয়েন্সে চন্দ্র-সূর্য-গ্রহ-নক্ষত্র যদি মিলে যায়, তখন তারা ভবিষ্যতবাণী করে যে এখন এই ঘটনা ঘটবে।
একটা উদাহরণ দেই। ধরুন, রাজা আকবরের জন্ম হয়েছিলো পূর্ণিমা রাতে । তখন ধরুন, আকাশে বৃশ্চিক তারামণ্ডলী ছিলো। এখান থেকে জ্যোতিষী সূত্র বানালো, বৃশ্চিক মণ্ডলের পূর্ণিমাতে যার জন্ম হবে, সে অনেক বড় রাজা/মন্ত্রী/এমপি/চেয়ারম্যান/চাউল চোর/ঘুষখোর হবে। অনেক টাকা জীবনে আয় করতে পারবে , বৈধ-অবৈধ বিবিধ উপায়ে।
আবার মনে করুন, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি যখন বাঙলা দখল করেন , তখন আকাশে কর্কট রাশি আর চাঁদের অষ্টমী । এই ঘটনা থেকে জ্যোতিষীরা সূত্র বানালেন , কর্কটের অষ্টমী তিথিতে সব সময় খারাপ কিছু ঘটবে/মারা যেতে পারেন/এ্যাক্সিডেন্ট করবেন/দূরের যাত্রা অশুভ/টাকা পয়সা খোয়া যেতে পারে/শেয়ার মার্কেটে লস হবে/ফেসবুকে ক্রাশ আপনাকে ব্লক করে দিবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
৬.
প্রাচীণ যুগে রাজা বাদশা কিংবা সাধারন মানুষ এই জ্যোতিষীদের কথা বেশ গুরুত্ব দিয়ে শুনতেন। দীপ্ত টিভিতে ১৫০০ সেঞ্চুরির অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস নিয়ে বানানো ‘সুলতান সুলেমান’ টিভি সিরিয়াল দেখাচ্ছে এখন। এই সিরিয়ালে দেখা যায়, রাজা সুলেমান জ্যোতিষীর কাছ থেকে খবর নিচ্ছেন যে কবে সূর্যগ্রহণ হবে। সূর্যগ্রহণের সময় কী কী ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হবে।
সেই সময়ে মানুষ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অনেক ঘটনারই কারণ খুঁজে পেতো না। কলেরা, ডাইরিয়া,ইনফ্লুয়েঞ্জা কিংবা প্লেগ কেন হয়– সেই কারণ তাদের জানা ছিলো না (আজ আমরা জানি যে, রোগজীবাণু এক জনের কাছ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়িয়ে পড়লে রোগ হয়। কিন্তু ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে অনুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কারের আগে কেউ জীবাণু সম্পর্কে কিছুই জানতো না)। তারা তখন মনে করতো, আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের কোনো প্রভাবের ফলে এই রোগ হচ্ছে।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং সম্পর্কে আজ আপনি জানেন । বঙ্গোপসাগরে উম্পুন নামক সাইক্লোন তৈরি হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই আমরা জানতে পারি যে সাইক্লোন আসছে। সবাই তৈরি থাকি। কিন্তু প্রাচীন মানুষ জানতো না। তারা হঠাৎ করে চলে আসা ঝড়-বন্যা-শিলাবৃষ্টিকে মনে করতো আকাশের নক্ষত্রের কারসাজি।
গ্লোবাল পলিটিক্স সম্পর্কে আজ আপনি-আমি কমবেশি বুঝি। কিম জং উন আমেরিকাকে আসলেই বোমা মারবে, নাকি হুমকি-ধামকি দিয়ে চুপ করে থাকবে, কিংবা কাসেম সোলায়মানিকে খুন করার পরে ইরান কি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুন করার জন্য দৌড় দিবে নাকি ঠাণ্ডা থাকবে, সেটা আমরা কমবেশি অনুমান করতে পারি। কিন্তু প্রাচীন মানুষ এত বুঝত না। তারা হঠাৎ লেগে যাওয়া যুদ্ধের পেছনে মনে করতো আকাশের তারাদের হাত আছে ।
সেই সময়কার কমার্শিয়াল জ্যোতিষীরাও তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য এই বিশ্বাসগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতো।
৭.
বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে এখন আমরা বুঝতে পারছি , পৃথিবীর মানুষদের অসুখবিসুখ, জন্ম, মৃত্যু, ঝড়, বন্যা, সাইক্লোনের পিছনে আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের কোনো ভূমিকা নেই। কিংবা অতীতে আকাশের অমুক চিপায় তমুক নক্ষত্র থাকার সময়ে যে ঘটনাটা ঘটেছিল, আজকের আকাশে সেই তারকা উঠলে একই ঘটনা ঘটার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
অতীতে একবার সুরাইয়া নক্ষত্র উঠলে মহামারী সেরে গিয়েছিলো বলেই এবারও সুরাইয়া উঠলে করোনা বন্ধ হয়ে যাবে– এই সূত্রের কোনো ভিত্তি নেই। মধ্যযুগে ইউরোপে প্লেগ তো চলেছিল কয়েক বছর ধরে (1347-1351) । প্রতিবছরই সুরাইয়া উঠত নিয়মমতো, প্রতি মে মাসেই। কোথায়, সুরাইয়া ওঠার পরে প্লেগ তো বন্ধ হয়নি! ইউরোপের এক তৃতীয়াংশ মানুষ মারা গিয়েছিলো এই প্লেগে।
বেশি দূর যেতে হবে না। ২০১৩ তে আফ্রিকায় ইবোলা মহামারী শুরু হলো। ৩ বছর পরে ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের পরে সেটা থামলো। মাঝের ৩ বছর আকাশে সুরাইয়া থেকেও কিছু করতে পারেনি।
কাজেই সুরাইয়া কিংবা আকাশের অন্য কোনো গ্রহ-নক্ষত্র অতীতে যেমন সূত্র মেনে কোনো ঘটনা ঘটাতে পারেনি, তেমনি ভবিষ্যতেও পারবে না। এদের নিজেদের সাইজ বড়, ওজন বেশি । কিন্তু তাপ, আলো দেওয়া ছাড়া আর কোনো ক্ষমতা নেই এদের। মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করার তো প্রশ্নই আসে না।
৮.
বিজ্ঞানমনস্ক হোন। যুক্তিবাদী হোন। রাশিচক্র হিসাব না করে ঘটনাগুলোর কার্যকারণ বোঝার চেষ্টা করুন। আকাশের তারার দিকে না তাকিয়ে নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে পরিশ্রম করুন। মাথাটা কাজে লাগান। আপনার ভাগ্য আপনার হাতে, আকাশে না।
————
তথ্যসূত্র –
১। তারা পরিচিতি -আব্দুল জব্বার
২। Cosmos-A personal Voyage -by Carl Sagan (1980 ) -Episode 3