IMDB Rating- 9.1
নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রানুযায়ী, এই মহাবিশ্বের প্রতিটা বস্তুই একে অপরকে আকর্ষণ করে। ছোট ছোট বস্তুর মধ্যে আকর্ষণ এর প্রভাব টের পাওয়া যায় না তেমন । কিন্তু বড় বড় জিনিসের আকর্ষণ সহজে টের পাওয়া যায়। চাঁদের আকর্ষণে পৃথিবীর এক প্রান্তের সব পানি উঁচু হয়ে যায়। তৈরি হয় জোয়ার ভাটার।
আরো বড় বড় জিনিসের আকর্ষণ আরো বেশি। ধরুন, বৃহস্পতি গ্রহ এবং এর উপগ্রহ ইউরোপার কথা। ইউরোপাকে বৃহস্পতি প্রচণ্ড আকর্ষণে টানে। কিন্তু ওদের কারো মধ্যেই জোয়ার ভাটা হতে পারে না। কারণ কারো শরীরেই পানি নেই।
বৃহস্পতি পুরোটাই গ্যাসে তৈরি। আর ইউরোপা পুরোটা পাথর। ফলে যেটা ঘটে, ইউরোপার পাথরের মধ্যে জোয়ার ভাটা শুরু হয়। উপগ্রহটার পাথরের মধ্য দিয়ে বিশাল আকারে ফাটল হয়। কিংবা এক পাথরের স্তর আরেক স্তরের সাথে এসে জোয়ারের ধাক্কা দেয়, উঁচু পাহাড় তৈরি হয়ে যায়। একে বলে Tidal flexure.
আরো সাংঘাতিক জোয়ার ভাটাও ঘটতে পারে। শনি গ্রহের পাশে সুন্দর একটা উপগ্রহ ছিলো। পাথর আর বরফ দিয়ে তৈরি। শনির আকর্ষণে উপগ্রহটা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। এখন সেই টুকরোগুলো শনির চারপাশে বলয় হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সৌরজগতের বিভিন্ন এলাকার এই রকম আজব আজব গল্প নিয়ে বানানো হয়েছে The Planets সিরিয়ালটা। সৌরজগতের সবগুলো গ্রহ- বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মংগল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুনের গল্প ছাড়াও বোনাস হিসেবে আছে বামন গ্রহ প্লুটো, গ্রহাণু সিরিস (Ceres) এবং ধূমকেতুদের গল্প। একটি মাত্র সিজন। ৫ টা এপিসোড। সাথে আছে ৫টা মিনিসোড।
সিরিয়াল দেখার আগে ধারণা ছিলো, সব গ্রহই কমবেশি আমাদের পৃথিবীর মতো হবে। কোনোটায় হয়তো পানি নেই, কোনোটার তাপমাত্রা হয়তো বেশি-এইটুকু পার্থক্য। কিন্তু সিরিজটা দেখার পর আপনার ধারণা পালটে যেতে বাধ্য। প্রতিটা গ্রহের সিস্টেম আমাদের থেকে পুরো আলাদা। কোনো কোনো গ্রহে হয়তো মাটিই নেই, পুরোই গ্যাস । কোনো গ্রহ হয়তো সূর্যের মতোই প্রায় একটা নক্ষত্র, ভুল করে গ্রহ হয়ে বসে আছে। কোনো ধূমকেতু হয়তো ভেঙ্গেচুরে এখন গ্রহ সেজে ঘাপটি মেরে বসে আছে। কোনো স্বাধীন গ্রহাণু হয়তো এখন কারো উপগ্রহ হয়ে সংসার করছে। কোনো গ্রহে বায়ুমণ্ডলই নেই, কোনো গ্রহের বায়ুমণ্ডল ফুটো হয়ে সব পানি মহাশূন্যে চলে গেছে, আবার কোনো গ্রহে পুরোটাই বায়ুমণ্ডল, আর কিছুই নেই। বিচিত্র সব জগত একেকটার!