শিরোনাম পড়ে হয়তো আপনাদের অনেকের মনেই খটকা লাগছে, গণিত আবার ভাষা হয় কী করে? তাও সার্বজনীন! হ্যাঁ, গণিত একটা ভাষাই বটে। পৃথিবীতে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি যেমন বিশেষ জাতি-গোষ্ঠীর কিংবা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের ভাষা, গণিতও তেমনি। তবে এর নির্দিষ্ট জাতি-গোষ্ঠী নেই, নেই নির্দিষ্ট ভূখণ্ড। এটি পুরো মানবগোষ্ঠী তথা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ভাষা। প্রকৃতির সৌন্দর্য বা ভারসাম্য বুঝতে হলে, কিংবা এই চিরচেনা পৃথিবী ছাড়িয়ে বিস্তৃত মহাবিশ্বকে চিনতে হলে, অথবা বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের যে এতো অবদান তার গোড়ার কথা জানতে বা বুঝতে হলে গাণিতিক ভাষার মাধ্যমেই বুঝতে হবে।
এবার আসা যাক ভাষার প্রসঙ্গে। ভাষা বলতে আসলে কী বুঝায়?
ভাষা হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্কজাত একটি মানসিক ক্ষমতা যা অর্থবাহী বাকসংকেতে রূপায়িত হয়ে একজন মানুষের মনের ভাব প্রকাশে সাহায্য করে থাকে। আরো সহজ ভবে বলতে গেলে, ভাষা হচ্ছে ভাব প্রকাশের একটি মাধ্যম। এক গোষ্ঠীর ভাষা যে অন্য গোষ্ঠীকে বুঝতেই হবে, এমন বাধ্যবাধকতা ভাষার সংজ্ঞাতে নেই। তাই পশুপাখির ভাষা মানুষের বোধগম্য না হলেও সেটি ভাষার কাতারে পড়ে। কিন্তু ভাষা হতে হলে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে। ভাষাবিদরা ভাষাকে চেনার উদ্দেশ্যে কিছু বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এর মধ্যে কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলঃ
১. ভাষা হতে হলে অবশ্যই একটি সমৃদ্ধ শব্দ ভাণ্ডার কিংবা অর্থবহ প্রতীকী চিহ্ন-সমষ্টি থাকতে হবে।
২. প্রত্যেক ভাষারই একটি ব্যাকরণ থাকতে হবে, যা ওই ভাষার সুন্দর প্রয়োগ ও স্বকীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
৩. সব ভাষাতেই ব্যাকরণিক পদশ্রেণী বা ক্যাটেগরি যেমন বিশেষ্য, ক্রিয়া ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়।
৪. কথ্য ভাষাগুলির ধ্বনি ও অর্থের মধ্যে সম্পর্ক এবং প্রতীকী ভাষাগুলির ইঙ্গিত ও অর্থের মধ্যে সম্পর্ক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাদৃচ্ছিক।
৫. মানুষের বিভিন্ন ভাষার মধ্যে যে পার্থক্য, তার কোনো জৈবিক কারণ নেই। যেকোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানবশিশু পৃথিবীর যেকোনো ভৌগোলিক, সামাজিক, জাতিগত বা অর্থনৈতিক পরিবেশে যেকোনো ভাষা শিখতে সক্ষম।
এখন দেখা যাক গাণিতিক ভাষা এই বৈশিষ্ট্যগুলো মেনে চলে কিনা।
প্রথমে দেখি, গণিত কী। গণিত হচ্ছে পরিমাণ, সংগঠন, পরিবর্তন ও স্থান বিষয়ক গবেষণা। সংখ্যা ও অন্যান্য পরিমাপযোগ্য রাশির মধ্যে যে সম্পর্ক, সেটাই গণিতে বর্ণনা করা হয়। গণিতের শব্দ ভাণ্ডার কতগুলো অংক, সংখ্যা, প্রতীকী অক্ষর এবং প্রক্রিয়া-চিহ্ন দিয়ে সমৃদ্ধ। একটি গাণিতিক বাক্যে, যেখানে আমরা কতগুলো অংক, সংখ্যা বা রাশি দেখি, সেখানেও যে ক্রিয়া পদ, বিশেষ্য পদ থাকে আর সেগুলো যে সামগ্রিকভাবে নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, তা আমরা খেয়াল করি না বলে বুঝতে পারি না। যেমন, ১২+৯=২১ একটা গাণিতিক বাক্য। এটি প্রকাশ করছে যে, বারোর সাথে নয় যোগ করলে যোগফল একুশ হয়। এখানে বারো এবং নয় বিশেষ্য পদ, আর যোগ করা হল ক্রিয়া পদ।
গাণিতিক বাক্য যে কেবল ভাব প্রকাশ করে তা নয়, এটি ‘দ্রুত’ ভাব প্রকাশে সাহায্য করে। মনে পড়ে স্কুল পর্যায়ের সেই লিচু ভাগাভাগির অংকগুলো? সেখানে বলা হতো, 20 টি লিচু তুমি দুজনের মাঝে এমনভাবে ভাগ করে দিবে যেন দ্বিতীয়জন প্রথমজনের চাইতে 5 টি লিচু বেশি পায়। আমরা ধরে নিতাম, প্রথমজন পাবে X টি লিচু এবং দ্বিতীয়জন পাবে Y টি লিচু, যেখানে Y=X+5. তাহলে তাদের মোট লিচুর সংখ্যা দাঁড়াবে X+Y=20. শেষের গাণিতিক সমীকরণ বা বাক্য উপরের কথাগুলোকে শুধু দুটি চলক ও একটি সংখ্যার মাধ্যমে প্রকাশ করে ফেলতে পারছে, যা স্পষ্টই দ্রুত ভাব প্রকাশে সাহায্য করছে।
গাণিতিক ভাষায় যে ব্যাকরণ, সেখানে উল্লেখ আছে কী করে অংক করতে হয়, কী করে চলক দিয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়া-চিহ্নের মাধ্যমে নতুন নতুন রাশি তৈরি করতে হয়। আবার রাশিতে ব্যবহৃত দশ ভিত্তিক অংক কিংবা সেগুলোর প্রক্রিয়া-চিহ্ন পৃথিবীর সব দেশে, সব ভূখণ্ডে, সব গোষ্ঠীর মানুষের কাছে একই। এই বৈশিষ্ট্য অন্য কোনো ভাষাতে দেখা যায় না। তাই গণিত শুধুমাত্র ভাষা নয়, এটি সার্বজনীন ভাষা।
চলকের মাধ্যমে গাণিতিক বাক্যের ব্যবহার ও প্রয়োগ আমরা আগেই দেখেছি। এবার দেখবো সেট ও ভেনচিত্রের মাধ্যমে গাণিতিক বাক্য কী করে প্রকাশ করা যায়।
ধরুন, প্রাণ কোম্পানি আম দিয়ে আমের আচার, আমের জুস, জেলি ইত্যাদি তৈরি করে থাকে। আবার ময়দা দিয়ে রুটি, কেকও তৈরি করে থাকে। কিন্তু সেই ময়দা প্রাণ কোম্পানি অন্য কোম্পানি থেকে সংগ্রহ করে। এখানে আম আর ময়দা হলো কাঁচামাল, যেগুলোকে যন্ত্র দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে আচার, জুস, জেলি কিংবা রুটি, কেক উত্পাদন করা হচ্ছে। প্রক্রিয়া দুটিকে ফাংশনের আওতায় নিয়ে আসলে দাঁড়ায় –
প্রাণ কোম্পানির যন্ত্র_১ = F (আম) = { আচার, জুস, জেলি }
অন্য কোম্পানির যন্ত্র_২ = G (গম) = { ময়দা }
প্রাণ কোম্পানির যন্ত্র_৩ = H (ময়দা) = H(G(গম)) = { রুটি, কেক }
সুতরাং এখানে প্রাণ কোম্পানির কাঁচামালের সেট = { আম, ময়দা }
এবং উৎপন্ন পণ্যের সেট = { আচার, জুস, জেলি, রুটি, কেক}
আমরা নিশ্চয় বুঝে গেছি যে, কাঁচামাল থেকে পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াটি নিজের ভাষাতে বর্ণনা করতে গেলে খরচ করতে হবে অনেক শব্দ। কিন্তু গাণিতিক ভাষায় পুরো প্রক্রিয়াটি যেমন দ্রুত প্রকাশ করা সম্ভব, তার সাথে বর্ণনা করাও সহজ, যেখানে F, G, H অক্ষরগুলো যন্ত্রের মত কাজ করছে।
দৈনন্দিন জীবনে গণিতের অনেক ব্যবহার রয়েছে। সকাল কয়টায় ঘুম থেকে উঠবো, কয়টায় স্কুল/কলেজ শুরু হবে, কয়টায় বাড়ি ফিরবো কিংবা জিনিসপত্র কেনা-বেচার হিসেব – সবকিছুই গণিতের মাধ্যমে করতে হয়। একজন মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন কাজের দক্ষতাও গণিতের মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব। দক্ষতার এই গাণিতিক পরিমাপক ভাষাকে আমরা বিভেদাঙ্ক বলি। এই বিভেদাঙ্কের সব থেকে বড় প্রয়োগ দেখা যায় বিভিন্ন খেলার আসরে। কেন তাসকিনের বদলে কোনো ক্রিকেট ম্যাচে রুবেলকে নামানো হলো, এই নিয়ে আমরা যতই যুক্তি-তর্ক করি না কেন, এর পেছনে কাজ করে বিভেদাঙ্ক, কাজ করে গণিত।
এবার একটু সুন্দরের খোঁজ করা যাক। প্রকৃতির সৌন্দর্যে আমরা কে না মুগ্ধ? ছুটির দিনে তাই আমাদের চেষ্টা থাকে শহুরে কোলাহল থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার। কতো কবি কতোভাবেই না প্রকৃতির রূপ বর্ণনা করেছেন! তবুও কি তারা পেরেছেন প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য প্রকাশ করতে?
সৌন্দর্যের আসল প্রকাশ ও পরিমাণ কেবল গণিতের ভাষাতেই দেয়া সম্ভব, একটা অনুপাতের মাধ্যমে, যে অনুপাতকে বলা হয় ‘গোল্ডেন রেশিও’। এটি একটি অমূলদ সংখ্যা কিন্তু এর অস্তিত্ব সম্ভবত পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সুন্দর। যেকোনো কিছুর অনুপাত যতই এর কাছাকাছি যেতে থাকে, তার সৌন্দর্য ততই বাড়তে থাকে। নায়িকা মৌসুমির থেকে ঐশ্বরিয়াকে কেন বেশি সুন্দর ও আকর্ষণীয় লাগে, তার উত্তরও সম্ভবত গোল্ডেন রেশিও।
বলা হয়ে থাকে, লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি তার শিল্পকর্মে সবচেয়ে বেশি গোল্ডেন রেশিও প্রয়োগ করেছিলেন। এজন্য তাঁর আঁকা “মোনালিসা” চিত্রটি এতকাল পরেও মানুষকে সমানভাবে আকর্ষণ করে যাচ্ছে। এছাড়া পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে পিরামিড, আইফেল টাওয়ার, আর তাজমহলে গোল্ডেন রেশিওকে সব থেকে বেশি পরিমাণে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ একজন শিল্পী কিংবা স্থপতি যদি তার শিল্পকর্ম বা স্থাপনাকে আরও সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে চান, তবে অবশ্যই গণিতে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
বর্তমান যুগকে বলা হয় বিজ্ঞানের যুগ, তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির এত যে সাফল্য, সেগুলো দাঁড়িয়ে আছে কতগুলো গাণিতিক সমীকরণ ও হিসাব নিকাশের উপর। এই যে আমরা সুইচ টিপে ফ্যান চালাই, রিমোট দিয়ে এসি চালু করি, টেলিভিশনকে নিয়ন্ত্রণ করি, এগুলো হচ্ছে কী করে? আমরা কি ভেবে দেখি, কীভাবে এগুলো আমাদের নির্দেশনা মেনে চলছে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে? এর পেছনে কাজ করে গণিত, যাকে বলে বুলিয়ান গণিত। মাত্র দুটি সংখ্যা, 0 এবং 1 এর জন্য দায়ী। 0 মানে বন্ধ করা বা OFF এবং 1 মানে চালু করা বা ON.
আবার বিদ্যুতের (A.C) চলার পথ হলো সাইনের গ্রাফের মতো, যা প্রতি সেকেন্ডে 50 বার দিক পরিবর্তন করে।
বর্তমান যুগে মানুষের বিকল্প হিসেবে দিন দিন রোবটের ব্যবহার বাড়ছে। রোবটকে কোনো নির্দেশনা দিলে সে মোতাবেক সেটি কাজ করে। তাই বলে যে তারা মানুষের মতো কথা বুঝে, তা নয়। তারা বুঝে গাণিতিক কিছু সংকেত। তাদের যে নির্দেশনাই দেয়া হোক না কেন, তারা কম্পিউটার প্রোগামের মাধ্যমে সেটিকে গণিতে রূপান্তর করে, রূপান্তরিত করে কিছু বাইনারি ডিজিটে। এইসব রূপান্তরিত গাণিতিক বাক্য বা Statement কেবল দুটি অবস্থাই নির্দেশ করে। হয় সত্য/TRUE, নয় মিথ্যা/FALSE। তাই যারা বলিউডের ‘রোবট’ চলচ্চিত্রটি দেখেছেন, তাদের নিশ্চয়ই মনে আছে রোবট চিট্টি কখনো মিথ্যা বলে না!
এবার পৃথিবী ছাড়িয়ে একটু মহাকাশে যাই। মহাবিশ্ব যে এতোটা বিশাল, এর সীমা আছে কেবল গণিতেই। মহাবিশ্বের অস্তিত্বকে আমরা অন্ধের হস্তী দর্শনের মতো করে চিনতে চেয়েছি। অন্ধের কাছে দুটি হাতিয়ার থাকে হাতি চেনার জন্য – তার হাত আর তার অনুভূতি।
মহাবিশ্বকে চেনার জন্য আমাদের হাত হলো পদার্থবিজ্ঞান, আর অনুভূতি হলো গণিত। বিজ্ঞানীরা মহাকাশ বিজ্ঞানে সবসময় তাই অনুভূতিকেই আগে গুরুত্ব দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মহা বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের কথা উল্লেখ করা যাক। আইনস্টাইনই সম্ভবত একমাত্র বিজ্ঞানী, যিনি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বাস্তব পরীক্ষালব্ধ জ্ঞানের থেকেও গণিতের সত্যতার উপর বেশি নির্ভরশীল ছিলেন৷ আপনারা যারা আপেক্ষিকতা নিয়ে পড়েছেন, তারা সম্ভবত আইনস্টাইনের এই দিকটি বুঝতে পেরেছেন। মহাবিশ্ব নিয়ে আইনস্টাইন তার গবেষণা সাধারণ আপেক্ষিকতায় বর্ণনা করেছেন। মহাবিশ্ব নিয়ে আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার গাণিতিক ভাষাটি ছিলো অত্যন্ত জটিল। একটা নির্দিষ্ট সমাধান এর কোনোকালেই ছিলো না, একালেও নেই। তবুও এর যে কোনো সমাধান বের হয়নি, তা কিন্তু নয়। প্রতিটি সমাধান, সমীকরণ জন্ম দিয়েছে নতুন নতুন মহাবৈশ্বিক সিস্টেমের ভবিষ্যত বাণীর। আইনস্টাইনের গণিত বলেছিল, মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে কিন্তু আইনস্টাইন নিজে তা মানেননি। তাই তিনি নিজের গণিতকে নিজেই রুখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তবুও পারেননি মহাবিশ্বের প্রসারণ থামাতে। তাহলে দাঁড়াল কী? আইনস্টাইনের গণিত নয়, আইনস্টাইনই ভুল!
এবার সৌরজগতের সমস্ত শক্তির উৎস সূর্যের কথাতে আসা যাক। সূর্যের সমস্ত শক্তি আসে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া হতে, যার পুরোটাই E=mc² সমীকরণ মেনে চলে। E=mc² সমীকরণের উপর ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ধারণা করা হয়, আগামী দিনগুলোয় যখন জীবাশ্ম জ্বালানি শেষ হয়ে যাবে, তখন এই পারমাণবিক শক্তিই হবে পৃথিবীর প্রধান শক্তি। আবার এই সমীকণের উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে পারমাণবিক বোমা, যার ভয়ংকর বিধ্বংসী রূপ আমরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে দেখেছি। সুতরাং গণিতের ভাষার সুব্যবহার যেমন সুন্দর ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেয়, তেমনি এর অপব্যবহার ডেকে আনতে পারে মারাত্মক পরিণতি।
অতীতকালে, এমনকি বর্তমানেও মানুষের কাছে গণিত একটা ভয়ের বিষয়। দেখা যায় আমরা বিজ্ঞানকে ভালোবাসি কিন্তু গণিতকে সহ্য করতে পারি না। অনেকে আছেন বিজ্ঞান বিষয়টিকে ছেড়ে দেন কেবল গণিত ভীতির জন্য। এই ভীতি তৈরির একমাত্র কারণ হল গণিতকে ভাষা হিসেবে গ্রহণ না করা। কোনোকিছুর গতি, প্রকৃতি, বিবর্তন বুঝতে হলে আগে তার ভাষাটা বুঝতে হয়। গণিতই একমাত্র ভাষা, যেটা কিনা ভাব প্রকাশের সাথে সাথে ভাবের পূর্ণতা দানে সাহায্য করে।
তাই সবশেষে বিজ্ঞানী গ্যালিলিওর ভাষায় বলতে হয়, “আমাদের মহাবিশ্ব আসলে বিরাট এক গ্রন্থ। এর পরতে পরতে মিশে আছে দর্শন। গ্রন্থটা আমাদের চোখের সামনেই পড়ে আছে, কিন্তু একে বুঝতে হলে এর ভাষা আয়ত্ত করা চাই; ওই বর্ণগুলো চেনা চাই, যা দিয়ে লেখা হয়েছে এই বই। এটি লেখা হয়েছে গণিতের ভাষা দিয়ে, আর এর বর্ণ হল ত্রিভুজ, বৃত্ত ও অন্যান্য জ্যামিতিক চিত্র। এগুলো বাদ দিয়ে এর একটা শব্দও বুঝা সম্ভব নয়।”
তথ্য উৎসঃ
১) https://bn.m.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE?
২) fbclid=IwAR3Mqgz37MvyaU7O1gNWMekH4qRoHy4OVVHHcW9E-BTjKqmCD-jJP-tF43o
৩) https://www.thoughtco.com/why-mathematics-is-a-language-4158142
৪) https://futurism.com/why-math-is-the-language-of-the-universe-2
অনিন্দ্য সুন্দর