এইচ আই ভি এবং এইডস কোনো নতুন শব্দ নয়। আবালবৃদ্ধবণিতা সবাই কমবেশি পরিচিত এই দুটি শব্দের সাথে। বেশি পরিচিত এইডস শব্দটির সাথে। এইডস সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে যে ধারণা আছে তা অনেক সময়ই ত্রুটিপূর্ণ এবং ভুল তথ্যে ভরা। এইডস কী তা সম্পর্কে মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে কী সব উত্তর পাওয়া যায় তার কিছু নমুনা দিচ্ছি:
১. কালাবিলাই(কালো বিড়াল) কামড়াইলে এইডস হয়। (প্রথম দিকের জনসচেতনামূলক বিজ্ঞাপনের ভুল ব্যাখ্যা)
২. জামাই-বউ ছাড়াই কারো লগে ঘুমাইলেই এইডস হইবো।
৩. আল্লাহ বা ভগবান বা ঈশ্বর (ধর্মানুযায়ী) শাস্তি। (সাধারণ মানুষের ধারণা, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণযোগ্য নয়, যতদূর জানি।)
৪. দুইজন এক জায়গায় মুতলেই এইডস হবে। (!!??)
৫. পতিতালয়ে গেলে অকাম করলেই হবে।
এই নোটে এইডস এবং এইচ আই ভি সম্পর্কিত তথ্য যথাসম্ভব সাধারণ ভাষায় লিখার চেষ্টা করেছি। আশার করি, অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর পাবেন। নতুন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানা উত্তর দেবার চেষ্টা করবো।
প্রথমেই আসি, এইচ আই ভি এবং এইডস এর মধ্যে পার্থক্য নিয়ে।
এইচ আই ভি:
এইচ আই ভি হচ্ছে একটি রেট্রোভাইরাস যে প্রধানত রক্তের শ্বেত রক্তকণিকার বিশেষ কোষ (CD4+ T cell) দিয়ে বংশবৃদ্ধি এবং বেঁচে থাকে। তবে অন্যান্য কোষেও এটি আক্রমণ এবং বেঁচে থাকতে পারে। এইচ আই ভি এর পূর্ণরূপ হচ্ছে হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা মানুষের রোগ-ক্ষমতা হ্রাসকারী ভাইরাস। এইচ আই ভি এর মানুষে দুটি প্রজাতি আছে এইচ আই ভি ১ & ২। এইচ আই ভি ১ সবচেয়ে মারাত্নক এবং রোগ সৃষ্টিকারী যার সবচেয়ে সম্ভাব্য উৎপত্তি শিম্পাঞ্জি থেকে। অপর প্রজাতিটি ধারণা করা হয় সুটি মাঙগাবে বানর থেকে এসেছে। বানরেও একইরকম ভাইরাস রয়েছে যার নাম এসআইভি যা অন্তত ৪৫ টি নন হিইম্যান প্রাইমেটকে আক্রান্ত করে যদিও এই ভাইরাস খুব কমই মারাত্নক অসুস্হতা তৈরি করে এইসব বানরে।
এইডস:
এইডস হচ্ছে শরীরের একটি অবস্হা যখন শরীরের কোন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না। এইডস এর পূর্ণরূপ হচ্ছে একোয়ার্ড ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম। এই অবস্হায় শরীরে রোগপ্রতিরক্ষাকারী(সংক্রমণ-ঘটিত) বিশেষ কোষ CD4+ T cellএর সংখ্যা দ্রুত কমে যায়। এই বিশেষ কোষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোষ যা শরীরের প্রতিরক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এই কোষের কার্যাবলী বলতে গেলে আলাদা ভাবে দু-তিনটা নোট লিখা লাগবে। যেহেতু এইচ আই ভি ভাইরাস এই কোষকে আক্রমণ করে এবং এর সংখ্যা কমিয়ে দেয়, তাতে আপনার শরীর সকল জীবাণুর কাছে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে যায়। অনেকটা আপনাকে খালি হাতে যুদ্ধের ময়দানে পাঠিয়ে দেয়া। এইডস নিজে এইডস রোগীকে মারবে না, কিন্তু অন্যান্য জীবাণুর জন্য ব্যবস্হা করে দেয়। এইডস রোগী তাই অন্যান্য সামান্য রোগে মারা যায়।
এইচ আই ভি কিভাবে ছড়ায়:
এইচ আই ভি রক্ত, বীর্য/কামরস, একই সিরিঞ্জ ব্যবহার, মায়ের দুধ এর মাধ্যমে ছড়ায়। এইচ আই ভি আক্রান্ত মানুষের রক্ত নিলে আপনার দেহেও এইচ আই ভি আসবে। এইচ আই ভি আক্রান্ত কারও(পুরুষ/মহিলা) সাথে দৈহিক সম্পর্ক (সেটা যোনাঙ্গ দিয়েই হোক আর পায়ু দিয়েই হোক) করলে, যদি বীর্য আদান-প্রদান হয় তবে এইচ আই ভি আক্রান্তের সম্ভাবনা থাকে। এর কারণ হচ্ছে, মেয়েদের যৌনাঙ্গ(ভ্যাজাইনা), ছেলেদের যোনাঙ্গ(পেনিস), পায়ুতে মিউকাস লেয়ার থাকে, যা দিয়ে এইচ আই ভি ভাইরাস সহজেই রক্তে পৌঁছে যেতে পারে । একই ব্যাপার কামরস (প্রিসেমিনাল ফ্লুইড) এর ক্ষেত্রেও। কামরস হচ্ছে, বীর্য বের হবার পূর্বে যে আঠালো তরল পদার্থ বের হয়। গর্ভবতী মা যদি এইচ আ্ই ভি আক্রান্ত হয়, তার সন্তানও এইচ আই ভি আক্রান্ত হবে। মায়ের দুধের মাধ্যমেও এইচ আই ভি ছড়ায়। একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে এইচ আই ভি এর সম্ভাবনা অনেক থাকে, এটা নির্ভর করে সিরিঞ্জে থাকা রক্তের অবস্হা এবং সময়। এই কারণে, যারা মাদকাসক্ত তাদের মধ্যে এইচ আই ভি এবং হেপাটাইটিস বি বেশি দেখা যায়। তবে, চুমু খেলে বা জড়িয়ে ধরলে বা একই গ্লাস-প্লেটে খাওয়াদাওয়ায় এইচ আই ভি ছড়ায় না। ফলের রস খেয়ে এইচ আই ভি ছড়ায় না। আমার এই পোষ্টটি পড়ে দেখতে পারেন এই সম্পর্কে। Link: 1
এইচ আই ভি এর প্রতিকার ওষুধ: এন্টিরেট্রোভাইভরাল থেরাপি (কার্ট এবং হার্ট) অত্যন্ত কার্যকর। এই থেরাপিতে বৃদ্ধিরত ভাইরাসকে ধ্বংস করা যায় এবং ভাইরাস এর সংখ্যা একদম নাই করে দেয়া যায়। তবে, এই থেরাপি দিয়ে ভাইরাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায় না। এইচ আই ভি শরীরে খুব চমৎকারভাবে লুকিয়ে এই থেরাপির ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। যখন থেরাপি বন্ধ বা অনিয়মিত হয়, এইচ আই ভি আবার বংশবৃদ্ধি শুরু করে। আরোও একটা সমস্যা হচ্ছে, এইচ আই ভির মিউটেশন করে এমন ভাইরাসে পরিণত হয় থেরাপি আর কাজ করে না। এই ঘটনাকে বলে ভাইরাল রেজিসটেন্স। তাছাড়া, এই্চ আই ভি অনেক প্রকার কোষকে আক্রান্ত করে তাই এদের ধরা মুশকিল। এইচ আই ভি এর কোনো ভ্যাকসিন নাই। ভ্যাকসিন তৈরি করাও মুশকিল (অনেকগুলো কারণ আছে)।
প্রশ্ন ১: এইচ আই ভি মশা দিয়ে ছড়াতে পারে? যদি না হয়, কেন?
– এইচ আই ভি মশা দিয়ে ছড়ায় না। আরবোভাইরাস এর বাহক হচ্ছে আর্থোপোড শ্রেণীর (মশা, কীট, ছাড়পোকা এই ফ্যামিলির), অন্য ভাইরাস না। আর মশা সিরিঞ্জের সূঁচ নয়, মশার হুল এর এনাটমি অনেক ভিন্ন। তাছাড়া মশা দিয়ে ছড়ানোর জন্য এইচ আই ভি কে তার বংশবৃদ্ধির একটি ধাপ অন্তত মশার পেটে সম্পন্ন করতে হবে। এইচ আই ভি মানুষের দেহের বাইরে বেশিক্ষণ বাঁচে না।
প্রশ্ন ২: ওরাল সেক্স কি এইচ আই ভি ছড়ায়?
– ওরাল সেক্স এর মাধ্যমে ছড়ায় না, বা একদম শুন্যের কাছাকাছি (যদি মুখে সে রকম আলসার থাকে তবে সম্ভাবনা থাকতে পারে)।
প্রশ্ন ৩: সেক্স বা যৌন মিলনের সময় কি করলে এইচ আই ভি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে?
– কমডম ব্যবহার করা উচিত। কনডমের সাথে লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা ভালো। কারণ, এতে কনডম ভাঙ্গার সম্ভাবনা কম। আরো একটা কারণ, মেয়েদের যোনাঙ্গে যৌনমিলনের সময় অনেক রস(ফ্লুয়িড) নি:সরণ করে, যা এইচ আই ভি আক্রান্তের সম্ভাবনা কমায় (তার মানে এই না, যে প্রতিরোধ করবে)।
প্রশ্ন ৪: ছেলেদের খাতনা থাকলে কি এইচ আই ভি কম ছড়ায়?
– খাতনা করা পুরুষাঙ্গে এইচ আই ভি পজিটিভ মেয়ে বা ছেলে থেকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা কম। (তার মানে এই না, খাতনা করা থাকলেই সুরক্ষিত। )
প্রশ্ন ৫: আমি বা আমার পার্টনার এইচ আই ভি আক্রান্ত। আমরা কি বাচ্চা নিবো?
– এই ব্যাপারে ডাক্তারের মতামত এবং আপনার এইচ আই ভি অবস্হা বিবেচনা করুন। বাচ্চা এইচ আই ভি আক্রান্ত হলে তার জীবনটা কেমন হবে, চিন্তা করে দেখুন।
প্রশ্ন ৬: আমি মাদকাসক্ত। কিভাবে এইচ আই ভি মুক্ত থাকবো?
– নতুন সূঁচ এবং সিরিঞ্জ ব্যবহার করুন। শুধু এইচ আই ভি না, আরো অনেক রোগের সম্ভাবনা থাকে একই সূঁচ এবং সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে।
প্রশ্ন ৭: এইচ আই ভি কি খোলা বাতাসে বেঁচে থাকে?
-এইচ আই ভি দেহের বাইরে বেশিক্ষণ বাঁচে না। এর কারণ হচ্ছে এটি এনভেলপড ভাইরাস। এটি তাপমাত্রা, অম্ল-ক্ষারক, শুষ্কতা এর প্রতি সংবেদী।
প্রশ্ন ৮: একই শেভিং ব্লেড ব্যবহার করলে এ কতটা সম্ভাবনা থাকে?
– একই শেভিং ব্লেড ব্যবহার এমনিতেই স্বাস্হ্যসম্মত নয়। এইচ আই ভি দেহের বাইরে বেশিক্ষণ বাঁচে না। তবে, ব্লেডের মসৃণ স্তরের তাপমাত্রা এবং সম্ভাব্য রক্ত/পানির মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ বাঁচার সম্ভাবনা আছে। একই ব্লেড ব্যবহারে হেপাটাইটিস বি এর সম্ভাবনাও থাকে।
প্রশ্ন ৯: কিভাবে এইচ আই ভি টেস্ট করবো? পজিটিভ হলে কি করবো?
– বিভিন্ন ক্লিনিকে অনেকদিন ধরেই এই টেস্ট করানো হয়। ভালো ক্লিনিক দেখে করাবেন। পজিটিভ হলে পুনরায় করাবেন। মিথ্যা পজিটিভ এর সম্ভাবনা থাকতে পারে। পজিটিভ হলে, অতি দ্রুত ডাক্তার দেখান। তাদের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
প্রশ্ন ১০: সমকামী হলে কি এইচ আই ভির সম্ভাবনা বেশি থাকে? আফ্রিকান হলে সম্ভাবনা থাকে?
– সবারই এইচ আই ভি আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। সমকামীদের মধ্যে প্রথমে এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে, সমকামী পুরুষের মধ্যে কনডম ব্যবহার খুবই কম। তাছাড়া, পায়ুতে কনডম ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা বেশি (ঘর্ষণ, যদি লুব্রিকেন্ট ব্যবহার না হয়; একই কথা নারীদের যৌনাঙ্গের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য)। এছাড়াও পায়ুকামে ইন্টার্নাল ইনজুরির সম্ভাবনা বেশি, তাতে ছড়ানোর সুযোগ বেশি (নারী পুরুষের মিলনের সময়ও একই কথা প্রযোজ্য, মেয়েদের যৌনাঙ্গেও একই ধরণের ইনজুরি হতে পারে, যেমন-ধর্ষণের বেলায়)। সমকামী নারীদের মধ্যে ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম, যেহেতু তাদের মধ্যে কোনো ফ্লুইড আদান-প্রদান হয় না, তবে একই ডিলডো বা সেক্স টয় ব্যবহার করলে সম্ভাবনা থাকতে পারে (এই প্রশ্নের উত্তর ইএমসি এর বিজ্ঞানীর কাছ থেকে প্রাপ্ত)।
বাংলাদেশে সংখ্যায় অনেক কম হলেও ভাল পরিমাণ এইচ আই ভি আক্রান্ত রয়েছে। আইসিডিডিআরবি এর বিজ্ঞানী ডা: তাসনিজ আজিম এর গবেষণায় উঠে আসে অনেক এইচ আই ভি আক্রান্ত লোক-লজ্জার ভয়ে এইচ আই ভি এর কথা অস্বীকার করে। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, অনেক এইচ আই ভি আক্রান্ত তাদের স্বামী/স্ত্রী এর সাথে অনিরাপদ যৌন মিলন স্হাপন করে। এর কারণ হচ্ছে, কনডম নিয়ে ভয়/অনিচ্ছা/সন্দেহ। অনেকে এইচ আই ভি বিশ্বাস করে না। তাছাড়া, বহু মাদক-সেবী রক্ত দিচ্ছে যাদের অনেকেই কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই রক্ত দিচ্ছে। Link: 2
এইচ আই ভি মানে এই নয়, ঐ ছেলে বা ঐ মেয়ে খারাপ, আপনার যেমন হেপাটাইটিস বি হতে পারে, তাদেরও একই অবস্হা। এইচ আই ভি আক্রান্তকে ভয় বা অবজ্ঞা নয় বরং তাদেরকে সহমর্মিতা দেখান। তারাও আপনার আমার মতো মানুষ। একটি ভাইরাস তাদের জীবনকে এলোমেলো করে দিচ্ছে যা তারা অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই কষ্টের জীবনে, আপনার অসহযোগিতা তাদের সামাজিক জীবনকে নষ্ট করে দেয়। ঘৃণা নয়, বরং আসুন তাদেরকে সাহায্য করি। তারা শুধুই অসুস্হ; যেমন আপনি আমি অসুস্হ হই। আপনার একটু ভালবাসামাখা দৃষ্টি, সাহায্যের হাত এবং বন্ধুত্বের হাসি দিতে পারে তাদের এইচ আই ভির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রেরণা। এইচ আই ভি আমাদের শত্রু, এইচ আই ভি আক্রান্ত মানুষ নয়।
পুনশ্চ:
১. সহজভাবে বোঝানোর জন্য সহজ ভাষায় লিখার চেষ্টা করেছি। অনেক সায়েন্টিফিক টার্ম বাদ দিয়েছি। যথাসম্ভব বাংলায় লিখার চেষ্টা করেছি।
২. আরো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে করতে পারেন বা মেসেজ জানাতে পারেন। জানার জন্য কোন লজ্জা বা ভয় থাকা উচিত না।
৩. বড় পোষ্টের জন্য দু:খিত। আশা করি, অধিকাংশ ভুল ধারণা দূর হবে।
৪. ভুল-ত্রুটি কমেন্টে উল্লেখ করলে খুবই খুশি হবো।
ধন্যবাদ
মীর মুবাশ্বির খালিদ
ইরাসমাস মেডিকেল সেন্টার, রটারডাম
দি নেদারল্যান্ডস
লেখকের অভিজ্ঞতা: ২০১৪ থেকে এখন পর্যন্ত এইচ আই ভি এর লেটেন্সী এর গবেষণায় যুক্ত।
পুনশ্চ তিন এর ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করছি। লেখা মোটেও বড় হয়নি। ‘টু দ্যা পয়েন্ট’ একেবার সরল ভাষায় অল্প কথায় বলেছেন সবকিছু।
এইচ আই ভি ভ্যাকসিন কি কারনে তৈরী করা মুশকিল তার কিছুটা ধারণা থাকলেও আরো বিস্তারিত জানার আগ্রহ আছে।
ধন্যবাদ। ভ্যাকসিনের সমস্যা নিয়ে লিখবো আশা রাখি। ল্যাবে ব্যস্ত থাকি তাই সময় হয়ে উঠে না।
এমন কি হতে পারে যে,
১সম্ভাব্য সমস্যার ৬ মাস পর পর্যন্ত কি এইচ ভাইরাস সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে???
২. এই ভাইরাস কি সম্ভাব্য সমস্যার ছয় মাস পরে,ধরা না পরে ২ বা ৪ বছর পর ধরা পড়তে পারে??? ( একজন আমাকে বলেছে ১০ বছর পরেও ধরা পরতে পারে)
আশাকরি উত্তর দিবেন।
কনডম কিভাবে এইচ আই ভি হতে রক্ষা করে??, ব্যাপার টা জানতে চাচ্ছি, আর কনডম ব্যবহার কি এইচ আই ভি হতে সম্পুর্ন রক্ষা করে??
কনডম ল্যাটেক্স/পলিইউরেথিন দিয়ে তৈরি। কনডম যৌনমিলনের সময় দুজনের যৌনাঙ্গের মাঝে বস্তুগত দেয়াল তৈরি করে। যার কারণে বীর্য, যোনীরস ,পায়ুরস আদান প্রদান হয় না। তাই এইচআইভির ছড়াতে পারে না। কনডম ব্যবহার করলে যৌনমিলনের মাধ্যমে এইচআইভি ছড়ায় না। আরো অনেক যৌনরোগ সম্পর্কিত ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকেও রক্ষা করে।
ধন্যবাদ প্রশ্নের জন্য। খুবই প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন।
এইচআইভি আক্রান্ত কোন ব্যক্তির হাতের আঙ্গুল কাটা থাকলে এবং এই কাটা স্থানে ধরলে এইচআইভি সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি?
ধরলে কিছু হবার সম্ভাবনা কম। কিন্তু সেই রক্ত আপনার শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমণ হবে।
এইচআইভি এইভাবে ছড়ানোর জন্য আপনার হাতেও ভয়ানক ভাবে ক্ষত থাকতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তে অধিক মাত্রায় এইচআইভি তৈরি হতে হবে – সোজা কথায় সম্ভাবনা নাই। নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাইরাস না থাকলে এইচআইভি কোষকে আক্রান্ত করে না। রক্ত যদি রক্তনালীতে পুশ না করা হয় (যেমন একই সিরিঞ্জ বারবার ব্যবহারের ক্ষেত্রে) বা রক্ত দেহের রক্ত সরবরাহ সিস্টেমে না গেলে সম্ভাবনা থাকে না। আর যেকোন সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে ভাইরাসের পরিমাণ ও ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত পুনরাবৃত্তি (বারবার এইচআইভি আক্রান্ত হবার কাজ) করলে সম্ভাবনা বাড়ে। এইচআইভি সংক্রান্ত আরো প্রশ্নের উত্তর সিডিসির এই লিংকে পাবেন। (লিংক: https://www.cdc.gov/actagainstaids/basics/transmission.html)
এডমিনকে ধন্যবাদ উত্তর দিবার জন্য।
চমৎকার উত্তর!
আপনার লেখাগুলো সবসময়ই দারুণ হয়।
আমি Furocef 250 mg ট্যাবলেট টি কয়েকদিন যাবৎ খাচ্ছি। আজ এইচ আই ভি রেপিড কিট এর মাধ্যমে সরকারী হাসপাতালে করাই এবং রেজাল্ট নেগেটিভ আসে।
আসার সময় আমার একটা বন্ধু আমাকে জানায় এন্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার পর এইসব রক্ত পরীক্ষার রেজাল্ট ভুল আসে? এই মতামতের সম্পর্কে মায়া আপনার কাছে বিস্তরিত জানতে চাই।
আলাদা কমেন্টে প্রশ্ন করা ভালো। অন্যের কমেন্টে প্রশ্ন করলে অন্যদের অযথা নোটিফিকেশনের বিড়ম্বনা সইতে হবে। প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে না। এন্টিবায়োটিক খেলে এইচআইভি এর টেস্ট ভুল বা প্রভাবিত করার প্রশ্ন আসে না। এন্টিবায়োটিক নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে। এন্টিবায়োটিক ভাইরাসের উপর কাজ করে না, ব্যাকটেরিয়ার উপরে (সব ব্যাকটেরিয়ার উপরে নয়!)। অনেক সময় ডাক্তার ভাইরাল জ্বরে এন্টিবায়োটিক দেয়, যাতে ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত রোগীর দূর্বল প্রতিরোধক্ষমতার কারণ সুযোগ সন্ধানী ব্যাকটেরিয়া যেন আক্রমণ না করে। Furocef এর জেনেরিক নাম হচ্ছে Cefuroxime Axetil, যা ব্যাকেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য। এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে, যা প্রধানত ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর ধ্বংস/ভাঙ্গে বা ব্যাকটেরিয়ার বেঁচে কার্যক্রম (ডিএনএ… আরো পড়ুন
ভাই আমি গত মাসে পতিতাতার সাথে সেকক্স করি ৩৩ দিন পর টেস্ট করাই রেজাল্ট নেগেটিভ বাট গায়ে রেশ আছে কিছু আর পিঠে ব্যাথা আছ্র প্লিজ বলেন কি করবো! আবার টেস্ট করাবো😥😥
অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক না করে থাকলে এইচআইভি টেস্ট করার কারণ দেখি না। রেশ ও ব্যাথা অন্য যেকোন ভাইরাসের লক্ষণ হতে পারে। এইসব লক্ষণ দেখে এইচআইভি আক্রান্ত কিনা সঠিক বলা যায় না। আপনার সন্দেহ থাকলে আপনি ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। এইসব বিষয়ে চর্ম ও যৌন ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন।
HIV ab 1&2 (ict) test এর window period এ 4 সপ্তাহের ফলাফল কি ৫ সপ্তাহের থেকে ভাল?
HIV ICT test সাধারণত ২-৬ সপ্তাহের মধ্যে টেস্টের ফলাফল দেয়।
খুবই উপকারী একটি ব্লগ লেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাইরলোজি বিষয়ে আমার বরাবরই জানার ব্যাপক আগ্রহ আছে। সেই আগ্রহ থেকেই এই এইচআইভি ভাইরাসটির ট্রান্সমিশন সম্পর্কে পড়তে গিয়ে একটু দ্বিধাদন্দের মধ্যে পড়ে গিয়েছি, যেহেতু তথ্যটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় এর ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া! সেখানে বলা হচ্ছে, এইচআইভি ঘামের মধ্যেও সামান্য পরিমানে পাওয়া যায়, এবং এর মাধ্যমে নাকি ট্রান্সমিশনও সম্ভব! University of California, Santa Barbara থেকে প্রাপ্ত তথ্য – ( ) ভাইয়া, অনুগ্রহ করে একটু বিস্তারিত ভাবে জানতে চাচ্ছি, মানব দেহের ঘামে কি আদৌ এইচাইভি ভাইরাস থাকতে পারে(কম বা বেশি যেটাই হোক?) এবং ধরুন, একজন সুস্থ ব্যাক্তির সদ্য কেটে যাওয়া ক্ষতের মধ্যে যদি এক… আরো পড়ুন
প্রতিটি ভাইরাস কাউকে সংক্রমিত বা ইনফেকশন করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সংক্রমণক্ষম ভাইরাস প্রয়োজন হয়। ঘামে সামান্য এইচআইভির অস্তিস্ত্ব থাকলেও এভাবে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা খুবই খুবই কম। এর কারণ হচ্ছে এইচআইভি শরীরের সকল তরল বা লিকুইডে থাকলেও এসকল তরল দিয়ে সমানভঅবে ছড়ায় না।সংক্রমণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে বা ধ্বংস হবার কারণে ছড়াতে পারে না। আপনি সান্তা বারবারার যে লিংক দিয়েছেন সেখানে লিখা রয়েছে। “Although small amounts of HIV have been found in body fluids like saliva, feces, urine, tears, and sweat, there is little scientific evidence to suggest that HIV can spread through these body fluids.” অর্থাৎ ঘাম দিয়ে এইচআইভি ছড়ানোর… আরো পড়ুন
দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটে মানব দেহের ঘামে এইচাইভির অস্তিত্ব থাকে(অতি অল্প), এবং সেটা দ্বারা সংক্রমন ও সম্ভব, এমন তথ্য পেয়ে কিছুটা বিভ্রান্ত হয়েছি। আপনার কাছে এটা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই। পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে, একজন এইডস আক্রান্ত ব্যাক্তির ঘাম সরাসরি একজন সুস্থ ব্যাক্তির ক্ষত স্থানে পড়ে রক্তে মিশে গেলো। এরুপ অবস্থায় কি সংক্রমন সম্ভব হবে? রেফারেন্স দুইটা প্রতিউত্তরে দেওয়ার চেষ্টা করছি। ধন্যবাদ।
Reference (1) http://studenthealth.sa.ucsb.edu/health-topics/hiv-and-aids
(2) https://www.healthline.com/health/hiv-aids#hiv-transmission
হাসপাতালে এক সিরিজ দিয়ে ২ জনের শরীর থেকে রক্ত নিলে কি HIV হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
একই সিরিঞ্জ ও সূঁচ দুটি ভিন্ন মানুষের রক্ত নিলে রক্তজনিত বিভিন্ন রোগ যেমন এইচআইভি, হেপ-বি, হেপ-সি ইত্যাদি ছড়াতে পারে। একই সূঁচ ও সিরিঞ্জ শেয়ার করা উচিত নয়।