ভাইরোলজি পাঠশালা ৬.১: জলাতঙ্ক-রেবিজ ভাইরাসের অদ্ভুত কীর্তি

সময়টা ৬০-এর দশক। মন্তুর অবস্থা খারাপ, মুখে লালা জমে আছে, লোকে শিকল দিয়েছে। খিঁচুনি আসছে। প্রচণ্ড পিপাসা, কিন্তু পানি খেতে বড় ভয়। মাঝে মাঝে মৃত মাকে দেখে “মাগো মাগো” বলে কান্না করছে। ঢোক গিলতে খুব কষ্ট, একদিন আগেও বহু কষ্টে পানি খেয়েছে- পানির প্রতি ভীষণ ভয় তার। অথচ ছোটবেলায় সারাদিন পুকুরে দাপাদাপি করতো। লোকে বলতো হাঁসের ছাও মন্তু। পানি দেখলেই চেঁচিয়ে উঠছে। তিন সপ্তাহ আগে এক পাগলা কুকুরের কামড় খেয়েছিলো। পাশের গ্রামের শাম্মু কবিরাজ এসেছে, সে কি এক পথ্য পানিতে করে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করাচ্ছে। মন্তু শক্ত সামর্থ্য বিশালদেহী যুবক। শিকল দেবার পরেও আরো তিনজন তাকে ধরে রেখেছে। কবিরাজের দাবি- কুকুরে কামড় দিলে পেটে কুকুরের বাচ্চা হয়। তার এই পথ্য দিয়ে পেটের কুকুরের বাচ্চা মারবে কবিরাজ। সেই তরল পথ্য খাওয়াতে না পেরে কবিরাজ একটা মোটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মন্তুর পেটে শপাং শপাং বাড়ি দেয়। মুখ দিয়ে রক্ত বের হয় মন্তুর। কবিরাজ বলে, “এ্রই দেখেন, পেটের কুকুরের বাচ্চা মরে গেছে, কিন্তু ওরে আরো তিন দিন বেঁধে রাখেন”। পাঁচ সের চাল, আড়াই সের ডাল আর একটা লাউ সম্মানী হিসেবে নিয়ে গেলো কবিরাজ। পরেরদিন মন্তু নিস্তেজ হয়ে আসে। কয়েকবার খিঁচুনি হয়, তারপর সে মারা যায়।
মন্তু যে রোগে মারা গেলো, সেটাকে আমরা জলাতঙ্ক নামে জানি। এই রোগে আক্রান্ত রোগী পানি দেখে প্রচণ্ড ভয় পায়, তাই একে বাংলায় জলাতঙ্ক বলে। রোগটি ছড়ায় মূলত রেবিজ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কোনো প্রাণী, যেমন- কুকুর, বিড়াল, রেকুন, বাদুড়, গবাদিপশু ইত্যাদির কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে। আসুন জেনে নেই জলাতঙ্ক কী, কীভাবে ছড়ায়, কেন পানি দেখে আতঙ্ক আসে, প্রতিকার কী – ইত্যাদির ব্যাপারে।


জলাতঙ্ক কী?

জলাতঙ্ক শব্দ থেকেই বুঝতে পারছেন, এটি বলতে বুঝায় জল বা পানি দেখে আতঙ্কিত হওয়া। জলাতঙ্ক লক্ষণ প্রকাশ হলে মৃত্যু একেবারে অনেকখানি নিশ্চিত, অর্থাৎ লক্ষণ প্রকাশ পেলে বর্তমান যুগের ওষুধ দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর সম্ভাবনা বিরল। জলাতঙ্ক আসলে একটি ভাইরাসের কারণে হয়, যার নাম রেবিজ ভাইরাস। রেবিজ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাণী, যাকে ইংরেজিতে Rabid Animal বলে, তার কামড় বা আঁচড়ে অন্য প্রাণী বা মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। ভাইরাসটি অত্যন্ত ভয়ানক, যা আপনার পার্শ্বীয় স্নায়ুতন্ত্র (হাত বা পায়ে থাকা স্নায়ু) থেকে প্রধান স্নায়ুতন্ত্রে (যেমন- মস্তিষ্ক) পৌঁছাতে পারে, যার সংক্রমণের প্রকাশ আক্রান্ত প্রাণীতে দেখা যায়।

ছবির উৎসঃ https://media.eurekalert.org/multimedia_prod/pub/web/152967_web.jpg


জলাতঙ্কে কি মানুষের পেটে কুকুরের বাচ্চা হয়?

অন্যান্য রোগের মতোই জলাতঙ্ক নিয়ে ভুল ধারণা ও কুসংস্কার রয়েছে। কেউ কেউ দাবি করেন, জলাতঙ্কে কুকুর মানুষের প্রতি যৌন আকর্ষণে আকর্ষিত হয়ে কামড় দেয়াতে জলাতঙ্ক হয়, তাই পেটে কুকুরের বাচ্চা হবে। সেই কুকুরের বাচ্চা ছেলে মানুষের পেটে হলে পুরুষাঙ্গ দিয়ে বের হবে। পেটে বাচ্চা হবার কারণেই নারী-পুরুষ উভয়ই মারা যায় দাবি করেন অনেকে। এই ধারণাগুলো মূলত বাংলাদেশে ও ভারতের বেশ কিছু প্রদেশে প্রচলিত। একে বলা হয় পাপি প্রেগনেন্সি সিনড্রোম (Puppy pregnancy syndrome)। এগুলোর কোনোটাই সত্যি নয়।

জলাতঙ্ক আক্রান্ত রোগীর পেটে কুকুরের বা অন্য কোনো প্রাণীর বাচ্চা হবে না। গর্ভবতী মায়েদের জরায়ুতে মানুষের বাচ্চা হয়, পেটে নয়। আর সেই বাচ্চা একজন পুরুষের সাথে স্বাভাবিক কনডমবিহীন যৌনমিলনের কারণে হয়, কামড় বা আঁচড়ের জন্য নয়। জলাতঙ্ক রোগীর লক্ষণ প্রকাশ পেলে হ্যালুসিনেশনে ভোগে। যেহেতু বাংলাদেশে অধিকাংশ জলাতঙ্কের ঘটনার কারণ রাস্তায় থাকা ভ্যাকসিনহীন কুকুরের কামড়, সেজন্য জলাতঙ্ক রোগী ভয়ে অনেক সময় সবকিছুতেই কুকুর দেখতে পারে। Puppy pregnancy syndrome অনেকটা হিসটেরিয়ার মতো। লোকজন যা লোকমুখে শুনে এসেছে, সেটা সত্যি ভেবে আচরণ করে অনেক সময়।

চিত্র ১: রেবিস ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ে ভাইরাসটি মানুষকে সংক্রমিত করে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজে বাধা দেয়। (কপিরাইট চিত্রে উল্লেখ করা আছে)

মূল কথা হলো, জলাতঙ্ক রোগীর পেটে কুকুরের বাচ্চা হওয়া একটা ভুল ধারণা ও কুসংস্কার।

জলাতঙ্ক রোগী মারা যায়, কারণ ভাইরাসটি প্রধান স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করতে সক্ষম হয়ে শরীরের অনেক প্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ করে দেয়। তাতে রোগী কোমা, পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শেষে মারা যায়। প্রধান স্নায়ুতন্ত্র আপনার অনেক জরুরী কাজকর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে, যেমন- আপনার নিঃশ্বাস। জলাতঙ্কের ভয়ানক একটি পর্যায়ের লক্ষণ হলো নি:শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া। যেহেতু ভাইরাসটি রোগীর মস্তিষ্ককে আক্রমণ করতে সক্ষম, তাই মস্তিষ্কসহ বিভিন্ন অঙ্গে প্রদাহ, স্বাভাবিক কাজে বাধা ইত্যাদির কারণে বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে রোগী মারা যায় (এনসেফালাইটিসের মতো)।


জলাতঙ্ক রোগী পানি দেখে কি ভয় পায়?

জলাতঙ্ক রোগী (প্রায় ৭০-৮০%) পানি দেখে ভয় পায়। অনেকে মনে করেন পানিতে কুকুরের চেহারা দেখার কারণে ভয় পায় বা অনেকে কুকুরের মতো ডাক দেয়। আবার কেউ ভাবে, পানি যেহেতু পবিত্র বা জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তাই দুষ্টু আত্মা পানি দেখে ভয় পায়। পানি দেখে ভয় পাওয়ার কারণ পানিতে কোনো কিছু দেখে নয় বা পানিতে কোনো কিছু রয়েছে- সে জন্য নয়। আসল কারণ হলো, জলাতঙ্ক রোগীর ঢোক গিলতে না পারা। পানি পান করার জন্য আপনাকে ঢোক গিলতে হবে। জলাতঙ্ক রোগী ঢোক গিলতে গেলে সমস্যা বা ব্যাথা অনুভব করে। সেকারণে জলাতঙ্ক রোগী পানি দেখলে তার মস্তিষ্ক তাকে পানি পান করার চেষ্টায় ঢোক গেলার ভয়টা মনে করিয়ে দেয়। ধরুন, আপনি একবার পুলিশের হাতে অযথাই মার খেলেন। এরপর যেকোনো পুলিশ দেখলেই আপনার ভয় লাগবে। এখানেও সেই একই রকম ব্যাপার ঘটে। নিচের লিংকের ভিডিওতে দেখুন একটি জলাতঙ্কে আক্রান্ত শিশু পানি দেখে কেমন ভয় পাচ্ছে (সতর্কতা- জলাতঙ্ক রোগীর আচরণ দেখে ভীত হতে পারেন)https://www.youtube.com/watch?v=9A8-CkrvZlQ


জলাতঙ্ক কীভাবে ঘটে?

রেবিজ ভাইরাস স্নায়ুকে আক্রান্ত করতে পারে, যাকে আমরা বলি নিউরোট্রপিক ভাইরাস বা স্নায়ু-আকর্ষী ভাইরাস। ভাইরাসটি পাশ্বীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে আস্তে আস্তে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছে যেতে পারে। সেখানে ভাইরাসটি একটি নিউরাল নেটওয়ার্ক বা স্নায়ুর একটি জালের- যার নাম সেন্ট্রাল পেটার্ন জেনারেটর (কেন্দ্রীয় বিন্যাস তৈরিকারক), কাজে সমস্যা বাঁধায়। এই নেটওয়ার্ক শরীরের বিভিন্ন স্বাভাবিক কাজকর্ম, যেমন- হাঁটা, সাঁতার, প্রস্রাব-পায়খানা করা, চাবানো, ঢোক গেলা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে। ভাইরাস এই নিউরাল নেটওয়ার্কে কাজকে ব্যাহত করে বলে জলাতঙ্ক রোগীর ঢোক গিলতে সমস্যা হয়, যে কারণে পানি পান করার সময় জলাতঙ্ক রোগীর স্প্যাজম বা খিঁচুনি বা পেশী সংকোচন হয়। তাতে রোগী পানি গেলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না ও আতঙ্কে ভোগে। সেই কারণে পানি দেখলে বা পানি পান করানোর চেষ্টা করলে রোগী ভয় পায় ও পান করতে চায় না। এটিকে বলা হয় জলাতঙ্ক।

নিচের ইউট্যুব ভিডিওতে দেখতে পাবেন একজন জলাতঙ্ক আক্রান্ত রোগী পানি পান করতে গেলে কেমন আচরণ করে (সতর্কতা- জলাতঙ্ক রোগীর আচরণ দেখে ভীত হতে পারেন): https://www.youtube.com/watch?v=OtiytblJzQc

সুতরাং এই ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে স্নায়ুতন্ত্রের স্বাভাবিক কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা ব্যাহত হয়, যেমন- ঢোক গেলা। যেহেতু পানি খেতে গেলে ঢোক গিলতে হয় এবং জলাতঙ্ক রোগীর ঢোক গিলতে সমস্যা ও ব্যাথা হয়, তাই পানির প্রতি ভীতি তৈরি হয়। রেবিজ ভাইরাস উষ্ণরক্তবিশিষ্ট স্তন্যপায়ী, যেমন- কুকুর, শিয়াল, বাদুড়, রেকুন, স্কাঙ্ক, বিড়াল ইত্যাদিতে সাধারণত সংক্রমিত হতে পারে। যেকোনো স্তন্যপায়ী এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হয় । তবে যেসব প্রাণী মানুষের সংস্পর্শে আসে এবং ইতিহাস অনুযায়ী রেবিজ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত করার ঘটনা রয়েছে, সেসব প্রেক্ষিতে উপরের প্রাণীগুলোর নাম বলা হলো। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ৯০% এর বেশি জলাতঙ্কের ঘটনা ঘটে আক্রান্ত কুকুরের কামড় থেকে। এই অঞ্চলে জলাতঙ্ক নিয়ে ভুল ধারণা এবং সরকার ও জনগণের কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যায়।

আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ কুকুর, বিড়াল বা বাদুড় জাতীয় কোনো প্রাণীর কামড়, আঁচড় বা ক্ষতস্থানে লালার সংস্পর্শে আসলে ডাক্তারের (পশু ও মানুষের ডাক্তারের) শরণাপন্ন হবেন।

চিত্র ২: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জলাতঙ্ক বা রেবিজ নিয়ে সচেতনতামূলক লিফলেট।

 

জলাতঙ্ক ১০০% রোগমুক্ত করা যায়, যদি সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নেয়া হয় এবং ১০০% মরণব্যাধি, যদি দেরি করেন। সঠিক সময় হলো আপনি যখন জলাতঙ্ক আক্রান্ত পশুর সংস্পর্শে (কামড়/আঁচড়) এসেছেন ধারণা করছেন, তার এক সপ্তাহ বা তারও কম সময়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলা। একই সাথে কুকুরের আচরণ লক্ষ্য করুন। কুকুর যদি রেবিজ ভাইরাস আক্রান্ত হয়, তবে টিকা নিয়ে নেন, বা ঘটনার আগেও টিকা নিয়ে রাখতে পারেন।

কুকুরভীতি বাংলাদেশে খুবই প্রবল। আমার নিজেরও ছিলো ছেলেবেলায়। কুকুরের সাথে কীভাবে আচরণ করতে হয় সেগুলোর সহজ ইউট্যুব ভিডিও অনেক পাবেন। আমি যেটা মনে করি, আপনি কুকুর ভয় পেলে কুকুর সেটা আঁচ করতে পারে এবং ভাবে আপনি হয় অপরাধী না হয় তার প্রতি আক্রমণাত্মক। তাই কুকুরও পালটা আক্রমণাত্মক হবে। তবে জলাতঙ্কে আক্রান্ত কুকুর স্বাভাবিক কুকুর থেকে ভিন্ন আচরণ করবে।


জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়াতে রেবিজ ভাইরাসের সুবিধা কী?

আগেই বলেছি, জলাতঙ্কের কারণ রেবিজ ভাইরাস, যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুকে আক্রান্ত করতে পারে। কেন্দ্রীয় স্নায়ুর যে অংশ চাবানো, ঢোক গেলাসহ বিবিধ কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে তাকে ব্যহত করে ভাইরাসটি। এতে রোগীর ঢোক গিলতে সমস্যা হয়। ঢোক না গেলার কারণে মুখে লালার উপস্থিতি বেড়ে যায়। যেহেতু ভাইরাসটি লালার মাধ্যমে ছড়ায় তাই মুখে লালার উপস্থিতি থাকায় ভাইরাসটি ছড়ানোর সুযোগ বেশি থাকে। এদিকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুকে আক্রান্ত করার কারণে রোগী আগ্রাসী আচরণ করে। আক্রান্ত পশুতে এটা আরো বেশি। তাতে পশুর কামড়ানোর প্রবৃত্তি বেড়ে যায়।

এখন যেহেতু রোগী ঢোক গিলতে পারে না- তাই পানি খেতে পারে না (কুকুরের ক্ষেত্রেও পানি পানে সমস্যা দেখা দেয় অনেক সময়)। পানি পান করলে ভাইরাস লঘু বা ডাইলুট হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যে কোন ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক ভাইরাস (সংক্রমণক্ষম ভিরিয়ন) থাকলে কারো আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বাড়ে। রোগীর জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া তাই ভাইরাস ছড়াতে সাহায্য করে।

সংক্ষেপে, রেবিজ ভাইরাস> কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করা> ঢোক গিলতে সমস্যা করা> ঢোক গেলার সমস্যার কারণে জলাতঙ্ক> মুখে বেশি লালার উপস্থিতি, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ঝামেলার কারণে আগ্রাসী আচরণ (কামড় দেয়া)> ভাইরাসের উপস্থিতির পরিমাণ মুখের লালাতে বেড়ে যাওয়া> ভাইরাসের ছড়ানোর সুযোগ বেড়ে যাওয়া

রেবিজ ভাইরাসটি এমনভাবে বিবর্তিত হয়েছে যে এর সংক্রমণ ও ছড়িয়ে পড়া হোস্টের আচরণ পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে। অনুজীববিজ্ঞানে এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমনকি ভাইরাল সংক্রমণ একটি হোস্টকে বা পোষককে সম্পূর্ণ নতুন একটি বৈশিষ্ট্য দিতে পারে, যা হোস্টের বা পোষকের বিবর্তনকে ভিন্ন মাত্রা দেয়।

সহজে ভাইরাসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা। ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দিবেন। ভুল তথ্য বলা হলে অবশ্যই দয়া করে রেফারেন্স নিয়ে কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। পরের লেখাতে ভাইরোলজি পাঠশালা ৬.২-তে জলাতঙ্কের লক্ষণ কেন রেবিজ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়াতে সাহায্য করে, সেটা ভাইরাসের বিবর্তনগত আচরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করবো। কীভাবে তা ভাইরাসের জন্য সুবিধাজনক, সেটাও বুঝতে পারবেন। ভাইরাসের গঠন বুলেটের মতো, কী কী দিয়ে তৈরি, কেন আগে পেটে অতগুলো টিকা দেয়া হতো- সেগুলো ব্যাখ্যা করবো। পরের অংশ শীঘ্রই আসবে আশা রাখছি।

পুনশ্চ: লেখাটির অধিকাংশ তথ্য সিডিসি, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও ভাইরোলজি টেক্সটবই থেকে নেয়া। পুরো সিরিজটা লেখা শেষ হলে সোর্সগুলো দিবো। যথাসম্ভব জীববিজ্ঞানের কঠিন শব্দ বাদ দিয়ে সহজ করে লেখার চেষ্টা করেছি। ভিডিওগুলো দর্শকদের ভীত করতে পারে (সতর্কতা অবলম্বন করুন), দুঃখিত!

Comments

Avatar

mirmkhlaid

I am a postdoctoral researcher (Buck Institute, CA, USA) and did my Ph.D on Molecular Virology (SARS-CoV2 and ZIKV). Previously, background: Genetic Engineering & Biotechnology(BS & MS, DU, Bangladesh); Infection & Immunity (MSc, EUR, Netherlands). I have done research on molecular virology (HIV, Zika, HCV & HBV). My focuses are understanding host-viral interaction, viral evolution and disease modeling. Current research focuses are T-cell metabolism in HIV, and Immune Aging.

আপনার আরো পছন্দ হতে পারে...

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
জানান আমাকে যখন আসবে -
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x