দু’দিন আগে (২৯ জুলাই, ২০১৫) মাইক্রোসফট তাদের নতুন এবং চূড়ান্ত অপারেটিং সিস্টেম, Windows 10 প্রকাশ করেছে। চূড়ান্ত বলছি এই কারণে যে মাইক্রোসফট ঘোষণা দিয়েছে যে এটিই হবে তাদের শেষ পূর্ণাঙ্গ অপারেটিং সিস্টেম। নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কারে এই সিস্টেমটিকেই পরিমার্জিত করা হবে শুধু। এখন যে সিস্টেমটি প্রকাশ পেল, সেটি স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও খুঁটিনাটি কাজ চলছেই। যে কোন সফটওয়ারের বাগ-ফিক্সিংয়ের কোন শেষ হয় না, উইন্ডোজ ১০-ও তার ব্যতিক্রম নয়।
প্রথম প্রশ্ন হলো, এটি আপনি কীভাবে পাবেন? সুসংবাদ হলো, যারা উইন্ডোজ ৭ বা তার পরের যে কোন সিস্টেম ব্যবহার করছেন (৮, ৮.১ ইত্যাদি) তারা বিনামূল্যে* উইন্ডোজ ১০ পেতে পারবেন। আগামী বছর ২৮ জুলাই পর্যন্ত যে কোন দিনই আপনি এটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এই আপগ্রেডে ডাউনলোডের ডেটা খরচ ছাড়া আপনাকে আর কিছুই দিতে হবে না। আর সেই টাকাটুকু তো আপনি প্রতিমাসেই ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের দিচ্ছেন, তাই না? শর্ত আছে একটা যদিও, শর্তটি হলো আপনার বর্তমান উইন্ডোজটি হতে হবে বৈধ।
এবার দেখা যাক কী পদ্ধতিতে বর্তমান উইন্ডোজ থেকে উইন্ডোজ ১০-এ আপগ্রেড করবেন। মাইক্রোসফট সকল ব্যবহারকারীকে Get Windows 10 অ্যাপের মাধ্যমে “নিমন্ত্রণ” জানিয়েছিল। এর মাধ্যমে অ্যাপটি আপনার কম্পিউটারে সক্রিয় হয়ে গিয়েছিল। আপনি সেখানে নিজ উইন্ডোজ ইমেইল (লাইভ কিংবা হটমেইল) দিয়ে নিবন্ধন সেরে রাখলে অ্যাপটিই উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড করে আপনাকে জানাবে। নিজে থেকে কিছুই করতে হবে না।
উইন্ডোজ ১০ ইতোমধ্যেই প্রকাশ পেয়ে গেছে। ধরুন অ্যাপ কতদিনে নামাবে আর আপনাকে জানাবে, সেজন্য আপনি অপেক্ষা করতে চাচ্ছেন না। কিংবা প্রকাশের আগে অ্যাপটি চালু করেন নি। আপনার জন্য তাই সরাসরি উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড করার উপায় আছে।
- উইন্ডোজ ১০-এর ডাউনলোড পেজে চলে যান।
- এখানে গিয়ে প্রথমেই আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো যাচাই করে নিন। আপনার কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১০ খাপ খাবে কি না তা দেখে নিন।
- তারপর ৩২-বিট বা ৬৪-বিট (যেটা আপনার বর্তমান উইন্ডোজের সাথে মেলে) ডাউনলোড লিংকে ক্লিক করুন।
- এখন উইন্ডোজের ‘মিডিয়া ক্রিয়েশন টুল’টি ডাউনলোড হবে। যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে উইন্ডোজ ১০ এর ইনস্টলার নামাতে শুরু করবে। আপনি উইন্ডোজের যে ভার্সন ব্যবহার করছেন (প্রো, হোম ইত্যাদি), সেটাই উইন্ডোজ ১০-এ পাবেন। যদি উইন্ডোজ আল্টিমেট ব্যবহার করতেন, তাহলে অবশ্য প্রো-তে চলে যেতে হবে। উইন্ডোজ ১০-এর কোন আল্টিমেট ভার্সন নেই।
- বাকি প্রক্রিয়া খুবই সহজ। ডাউনলোড শেষ হলে ইনস্টলার নিজেই কাজ শুরু করে দিবে। যদিও হিসেবমতে হার্ড ডিস্কের কিছুই বদলানোর কথা না, তবুও সাবধানের মার নেই। জরুরি ফাইলপত্র বা অন্যান্য মিডিয়া নিরাপদ কোথাও কপি করে তবেই এই কাজে বসবেন।
পুরো প্রক্রিয়া নির্ভর করছে কম্পিউটারের প্রসেসিং শক্তি ও ইন্টারনেটের গতির ওপর। ১৫ মিনিট থেকে ঘন্টা তিনেক অবধি সময় লাগতে পারে। ইনস্টল তো হলো। এবারে দেখা যাক উইন্ডোজ ১০-এ নতুন কী কী আছে।
১। স্টার্ট মেনুবাবুর প্রত্যাবর্তন!
সবচেয়ে বড়ো সুখবরের একটি হলো উইন্ডোজ ৮-এ হারিয়ে যাওয়া স্টার্ট মেনু বাটনের ফিরে আসা। উইন্ডোজ ৭ পর্যন্ত সকল অপারেটিং সিস্টেমের অপরিচ্ছেদ্য অংশ এই বাটনটিকে উইন্ডোজ ৮-এ বাদ দেয়া হয়েছিল। যে কারণেই হোক না কেন, এই সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়েছিলেন অনেকেই। স্টার্ট মেনুর অভাবে বিভিন্ন স্পর্শযন্ত্র (ফোন, ট্যাব ইত্যাদি) ব্যবহারকারীরা হয়তো অতটা ঝক্কি পোহান নি, কিন্তু ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের জন্য স্টার্ট মেনুর অপশনে যেতে ডেস্কটপ থেকে অ্যাপ পেইজে যাওয়া লাগতো। তাও সবকিছু খুঁজে পাওয়াও ছিল দুষ্কর। এখন সেটি ফিরে এল। উইন্ডোজের বাম কোনায় নিচে আইকনের ওপর বাম ক্লিকে স্টার্ট মেনু ওপেন হবে। মেনু মূলত দুই কলাম করা হয়েছে। উইন্ডোজ ৭-এর মতো অপেক্ষাকৃত বেশি ব্যবহৃত টুলসগুলো বামের কলামের উপরে (উপরের ছবিতে যে জায়গাটা খালি আছে, কারণ নিজের পছন্দের অ্যাপ/প্রোগ্রামগুলো রাখব বলে খালি করে ফেলেছি! হা হা!) আছে। আর অন্যান্য সকল প্রোগ্রাম, পাওয়ার বাটন ইত্যাদি বামের কলামের নিচে রাখা হয়েছে। ডানের কলামে যোগ করা হয়েছে উইন্ডোজ ৮-এর অ্যাপ টাইলস। সুতরাং বলা যায় উইন্ডোজ ১০-এর স্টার্ট মেনু আসলে ৭ এবং ৮-এর সেরা ফিচারগুলোর মিশ্রণ।
ওহ! বলতে ভুলে গেছি, স্টার্ট মেনুর আইকনের ওপর রাইট ক্লিক করলে কন্ট্রোল প্যানেল, ডিভাইস ম্যানেজার, কমান্ড প্রম্পট ইত্যাদি অপেক্ষাকৃত “টেকি” অপশনগুলো দেখতে পাবেন।
আর উইন্ডোজ ৮/৮.১-এর বিরক্তিকর হট কর্নার (মনিটরের ডান দিকে মাউস নিলে যে প্যানেলটি বের হয়ে আসে/আসতো) বাদ দেয়া হয়েছে। হট কর্নারের সবকিছুকে নোটিফিকেশন সেন্টারে জায়গা দেয়া হয়েছে।
২। নোটিফিকেশন সেন্টার
স্টার্ট মেনুর ফিরে আসা নিঃসন্দেহে বড় খবর। কিন্তু তার চেয়েও ভাল লেগেছে টাস্ক বারের ডান কোনার নোটিফিকেশন বাটনটি, তারিখ ও সময়ের পাশে, দেখতে অনেকটা মেসেজ আইকনের মতো। এখানে ক্লিক করলে একটি উইন্ডো উঠে আসে, যেখানে সেটিংস, ওয়াই-ফাই, ভলিউম কন্ট্রোল, ব্রাইটনেস কন্ট্রোল, ট্যাবলেট/ফোন-মোড ইত্যাদি বিবিধ অপশন দেখা যায়। এছাড়াও যদি কোন অ্যাপ মেসেজ থাকে, যেমন ‘মেইল’ অ্যাপ থেকে নতুন ইমেইলের খবর তাহলে সেটাও এই উইন্ডোতে দেখতে পাবেন। সেটিংস অপশনটিও খুব কাজের, কারণ কন্ট্রোল প্যানেলের বিভিন্ন অপশনের চেয়ে শুধুমাত্র কম্পিউটার ম্যানেজমেন্টের অপশনগুলো এখানে রাখা হয়েছে।
৩। ফাইল এক্সপ্লোরারঃ
উইন্ডোজ এক্সপ্লোরারের নতুন ভার্সন। মূলত ক্লাউড সার্ভারের ফোল্ডার এখন লোকাল কম্পিউটারে চলে আসায় সম্ভবত তারা নামটি বদলে দিয়েছে। স্টার্ট মেনু খুললেই ‘ফাইল এক্সপ্লোরার’ চোখে পড়বে, যা আপনাকে লোকাল ফাইলের উইন্ডোতে নিয়ে যাবে। সেখানে যেমন কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কের ফাইল দেখতে পাবেন, তেমনি পাবেন ড্রপবক্স বা ওয়ানড্রাইভের মতো ক্লাউডের ফোল্ডারগুলো। সাধারণত যেসব ফোল্ডারে বেশি যাওয়া হয়, সেগুলোকে ‘ফেভারিট’ না বলে ‘কুইক এ্যাক্সেস’ নাম দেয়া হয়েছে। চাইলে সহজেই সেটা বদলে কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কে সেট করে নিতে পারেন।
৪। স্ন্যাপঃ
এটি মূলত মাইক্রোসফট সারফেস ট্যাবগুলোর একটি আকর্ষণীয় ফিচার। যখন একইসাথে একাধিক প্রোগ্রাম বা ফাইল রান করছে, তখন বারবার মিনিমাইজ/ম্যাক্সিমাইজ করার বদলে পাশাপাশি তাদেরকে রেখে কাজ করার উপায়কে স্ন্যাপ বলা হচ্ছে। যে কোন প্রোগ্রামকে মনিটরের বাম কোনায় নিয়ে ছেড়ে দিলে তা মনিটরের বাম অর্ধেকে ‘স্ন্যাপ’ হয়ে সেঁটে যাবে। আরেকটা প্রোগ্রাম খোলার পর সেটাকে মনিটরের ডান অর্ধেকে একইভাবে স্ন্যাপ করা যাবে। মোট চারটা ভাগে মনিটরে চারটি উইন্ডোকে এভাবে স্ন্যাপ করা যায়। যাদের একাধিক ডকুমেন্টে একসাথে কাজ করতে হয়, তাদের জন্য এটি একটি জরুরি ফিচার।
৫। টাস্ক ভিউঃ
একাধিক উইন্ডো ম্যাক্সিমাইজ করা থাকলে টাস্ক ভিউ অপশনটি দারুণ দ্রুত কাজে সহায়তা করে। টাস্ক বারে অবস্থিত এই আইকনে ক্লিক করলে সকল ওপেন প্রোগ্রাম ও ফাইলকে সম্মিলিতভাবে জুম আউট হয়ে দেখা যায়। তারপর যে প্রোগ্রামে ফোকাস করা দরকার, সেটিতে ক্লিক করলেই হয়। এটা অনেকটা Alt+Tab সুবিধার আরেকটি পদ্ধতি বলা যেতে পারে।
৬। ভার্চুয়াল ডেস্কটপঃ
উবুন্টু ব্যবহারকারীরা এর সাথে আগে থেকেই পরিচিত আছেন। এবারের উইন্ডোজে একইসাথে একাধিক ভার্চুয়াল ডেস্কটপ তৈরির সুবিধা দেয়া হয়েছে। টাস্ক ভিউ বাটন চেপে মাউস সরালে নতুন ডেস্কটপ উইন্ডো খোলার যোগ চিহ্নটি দেখা যায়। হাই-ফাংশনিং ইউজারদের জন্য অবশ্যই অত্যন্ত জরুরি একটি সুবিধা এটা।
৭। করটানাঃ
অ্যাপল আইফোনের Siri-এর মতো উইন্ডোজ এবার তৈরি করেছে ব্যক্তিগত সাহায্যকারী করটানা। টাস্কবারে স্টার্ট বাটনের পাশের সার্চ বক্সটাই করটানার ঘরবাড়ি। এখানে টাইপ করে করটানাকে যে কোন কিছু জিজ্ঞেস করা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন জরুরি রিমাইন্ডার, লিস্ট, ম্যাপ ইত্যাদি খুঁজে পেতে বা মনে রাখতে করটানা সাহায্য করে। স্বর-সক্রিয়তার কারণে করটানাকে নিজস্ব করে নিতে পারেন, যাতে আপনার কম্পিউটারে সে শুধু আপনার কথাই শুনবে, আপনার কণ্ঠস্বরেই সাড়া দিবে।
তবে কম্পিউটারে গোপন কিছু থাকলে একটু খিয়াল কৈরা করটানার কাছ থেকে আড়ালে রাখবেন। নাহলে জনসমক্ষে সেসব ইয়ে ব্যাপার করটানা ফাঁস করে দিতে পারে। করটানা কী দেখতে পারবে আর পারবে না, সেটা আপনি ঠিক করে দিতে পারবেন।
৮। মেইল ও ক্যালেন্ডার অ্যাপঃ
এটাও কিছুটা উবুন্টুর আদলেই বলা যায়। মূলত ব্যক্তিগত সকল ইমেইল একাউন্টকে এখানে যোগ করা যায়। অনেকেই আউটলুকের সাথে ঠিক স্বচ্ছন্দ না, তাদের জন্য এই ফিচারটি চমৎকার। মেইল এবং ব্যক্তিগত ক্যালেন্ডারের সব তথ্যই এক জায়গায় থাকলো। সময়ে সময়ে করটানাকেও বলে রাখা যায় বিভিন্ন জরুরি তারিখে নোটিফিকেশন দিতে।
৯। মাইক্রোসফট এজঃ
ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের বিভীষিকা থেকে মুক্তি এলো অবশেষে। মাইক্রোসফট এতোদিনে একটি চলনসই ইন্টারনেট ব্রাউজার বানাতে পেরেছে, যার নাম Edge। এ অবধি যা দেখছি, যথেষ্ট গতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য মনে হয়েছে। গুগল ক্রোম বা মজিলা ফায়ারফক্স যদিও ব্রাউজারের রাজ্যে অবিসংবাদিত নেতা, তারপরও আগ্রহীরা এজ ব্যবহার করে দেখতে পারেন। কে জানে, হয়তো আপনার কাছে এটার আবহই বেশি ভাল লেগে যাবে! একটি সমস্যা হলো এখানে এখনও অ্যাডব্লকার জাতীয় কিছু তৈরি করা হয় নি। যে কারণে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের বিরক্তিকর অ্যাডগুলো জ্বালাতে পারে। তবে আশা করছি অচিরেই ডেভেলপাররা জরুরি প্রয়োজনীয় ব্রাউজার অ্যাড-অন ও এক্সটেনশন তৈরি করে ফেলবে।
*সতর্কতা!
এতোক্ষণ তো নতুন ফিচার আর সুবিধাসমূহ নিয়ে লিখলাম। এই অপারেটিং সিস্টেমটি মোটের ওপর দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করার উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন নতুন ফিচার যোগ করেছে। তবে, সাথে কিঞ্চিৎ সতর্কতারও দরকার পড়েছে এখন। করটানা যেমন সব তথ্য পেয়ে যেতে পারে, এমন ফাইল বা ছবিও দেখতে পারে যা আপনি হয়তো গোপন রাখতে চান। নিচে আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করছি, যা উইন্ডোজ ১০ ইনস্টল করার পরপরই ঠিক করে নেয়া ভাল।
১। ওয়াই-ফাই সেন্স (Wi-fi Sense)
উইন্ডোজ ফোন থেকে এই নতুন ফিচারটি এসেছে। মূলত আপনার বন্ধুবান্ধবরা যদি কোন ওয়াই-ফাই জোনে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে যোগ দিয়ে থাকে, তাহলে আপনিও সেখানে বিনা পাসওয়ার্ডে যোগ দিতে পারবেন। একই পদ্ধতি আপনার বেলাতেও খাটবে, অর্থাৎ আপনি যদি কোন ওয়াই-ফাই জোনে পাসওয়ার্ডসহ যোগ দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার বন্ধুরাও (Contacts) সে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারবে। মূলত প্রত্যেক ব্যবহারকারী কোন কোন ওয়াই-ফাই জোন ব্যবহার করেছে, সে তথ্য উইন্ডোজ ১০ জমা করে রাখে। যে কোন ওয়াই-ফাই হটস্পটে কেউ ঢুকলে তাই সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধুতালিকা ঘেঁটে দেখে কারো কাছে এটার পাসওয়ার্ড আছে কি না। থাকলে সেখানে নিজে নিজেই সাইন ইন করে ফেলে। সুবিধার জন্য করা হলেও ব্যাপারটা বেশ অস্বস্তিকর, ক্ষেত্রবিশেষে নিরাপত্তাজনিত কারণে বিপদজনকও বটে। তাই ইনস্টল করার পরপরই সেটিংসে গিয়ে ওয়াই-ফাইয়ের এই সুবিধাগুলো বন্ধ করে দিন।
২। উইন্ডোজ আপডেট
এই ভার্সনে এটি অটোমেটিক করা আছে। শুধু যে নতুন আপডেট ডাউনলোড হবে তাই নয়, সেটা নিজে নিজে ইনস্টলও হয়ে যাবে। হতেই পারে যে আপনি তা চান না। সেজন্য এটাকেও চাইলে বন্ধ করে রাখতে পারেন সেটিংস থেকে।
৩। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ
স্টার্ট মেনুতে গিয়ে সকল অ্যাপের অপশনে ক্লিক করে অটোমেটিক ইনস্টল হওয়া এবং আগে থেকেই থাকা সকল প্রোগ্রামের লিস্ট দেখতে পারবেন। উইন্ডোজ ১০-এ বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ইনস্টল করে দেয়, যেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখতে পারেন। কোন অ্যাপ পছন্দ না হলে নিচের পদ্ধতিতে অ্যাপটি ডিজেবল করতে পারবেন। এই ব্যাপারটি যদিও আপনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। কারণ মুছে ফেলা ডিফল্ট অ্যাপ কীভাবে ফিরিয়ে আনতে হবে, তা এখনও ঠিকমতো জানি না। খেয়ালখুশি মতো অ্যাপ মুছে বিপদেও পড়তে পারেন। সুতরাং এটা শুধুমাত্র “টেকি” পাঠকদের জন্য।
এমন ছোটখাট কিছু ব্যাপার ছাড়া উইন্ডোজ ১০ আসলে একটি চমৎকার অপারেটিং সিস্টেম। স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীরা ফোন-সহকারীও বানাতে পারবেন এই ও.এস. থেকে। যার সাহায্যে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের বিভিন্ন ফাইল, নোটস, মিউজিক ও ভিডিও আপনি ফোন থেকেই ব্যবহার করতে পারবেন। এরকম আরো নানান ছোট ছোট সুবিধার কারণেই আশা করা যাচ্ছে যে উইন্ডোজ ১০ তার আগের সকল অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে বেশি আধুনিক সমাধান হয়ে উঠবে।
বাহ! আমি অন্যদের রিভিউ এর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সব মিলিয়ে ভালোই মনে হচ্ছে। করে ফেলবো সময় পেলেই।
আমি যতদূর শুনেছিলাম, আপডেট বন্ধ করা যায় না। করা যায় নাকি?
আপডেট বন্ধ করার উপায় আছে। তবে ‘সহজ’ না। রেজিস্ট্রিতে গিয়ে বন্ধ করতে হবে। এটা ঠিক সাধারণ ইউজারদের জন্য না, তারা ভুলভাল করতে পারেন এবং শেষমেশ সিস্টেমের বারোটা বাজিয়ে ফেলতেও পারেন। তবে টেক-স্যাভিদের জন্য এই ব্যাপারগুলো এরই মধ্যে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফোরামে চলে এসেছে।
মূলত দুটো সমালোচনা ছিল এই ও.এস.-এর প্রাইভেসি নিয়ে। একটা হলো ওয়াইফাই সেটিংস, যেটার শেয়ার অপশন ব্যবহার না করাই ভাল। আরেকটা হলো উইন্ডোজে ব্যক্তিগত পিসির লগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হবে ফিডব্যাক হিসেবে, যেটা টার্মস অ্যান্ড এগ্রিমেন্টে আমরা না পড়েই সাইন করে দেই।
আর লগ বন্ধ করার উপায় আছে নিশ্চয়ই!
করটানা কী দেখতে পারবে আর পারবে না এই সেটিংসটা কোথায় আছে ? কিভাবে কাস্টোমাইজ করতে পারব?
করটানার ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পাওয়ার ব্যাপারটা আসলে উইন্ডোজ ১০-এর ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পাওয়ার সাথে জড়িত। মোটের ওপর উইন্ডোজ ১০ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয়েছে এই বিষয়টিতেই। উইন্ডোজ আপনার “অনুমতি সাপেক্ষে”ই আপনার সকল সংরক্ষিত তথ্য দেখতে পাবে। এই অনুমতি আমরা দিয়ে দিচ্ছি, যখন “টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস”-এ অ্যাগ্রিড বাটনে ক্লিক করছি তখন। তাই নিজে থেকে এই ডেটা লগিং প্রক্রিয়াটি বন্ধ করা জরুরি।
পদ্ধতিটি একটু জটিল, অনুবাদ না করে সরাসরি আলোচনার থ্রেডটা দিয়ে দিচ্ছি। এর কোন বিষয় বেশি জটিল লাগলে আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করতে পারেন।
এখানে দেখুনঃ https://www.reddit.com/r/Windows10/comments/3f38ed/guide_how_to_disable_data_logging_in_w10/।
আন্দা ভাই খুব ভালো লাগলো রিভিউটা পড়ে। সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন। আমি এখন পর্যন্ত হ্যাপি আছি উইন্ডোজ ১০ নিয়ে। কিন্তু একটা জায়গায় সমস্যা হইসে, আমার টাচস্ক্রিণ এবং টাচপ্যাড কাজ করতেসেনা ল্যাপ্টপের। আপডেটেড ড্রাইভারের অভাব মনে হচ্ছে
উইনডোজ টেন রিলিজের পরদিন থেকেই চালাচ্ছি। অনেক চমৎকার। তবে আমার পিসিতে ৮.১ যতটা দ্রুত ছিলো তার চেয়ে ১০ খানিকটা ধীরগতির। অবশ্য তেমন চোখে পড়ার মতো না।
উইন্ডোজ টেন রিলিজের সপ্তাহখানেক পর থেকেই চালাচ্ছি। আর আমার পিসিতে ৮.১ এর চে ভালো পারফরমেন্স দিচ্ছে