ক্যালকুলাসের ড্রাইভার থেকে স্থান নির্ধারক— যাকে ছাড়া সারা পৃথিবী অচল, কে তিনি? কে সেই অবতার, যিনি প্রমাণ করেছেন “something can be made out of nothing”, অর্থাৎ শূন্য থেকে সবকিছু তৈরি সম্ভব?
সত্যিই মজার কথা! এরকম আবার হয় নাকি? হ্যাঁ, হয়। আসুন আমরা সেই অবতারটির সাথে পরিচিত হই। ইনি হলেন ০ (zero বা শূন্য)’। ‘0’ আজকালকার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বব্যাপী ‘symbol’ বা ‘প্রতীক’। যার অবদান সম্পর্কে ৩ বছরের সদ্য স্কুলে পা রাখা বাচ্চা থেকে মৃত্যুর দোরগোড়ায় পৌঁছানো মানুষ পর্যন্ত অবহিত। আজ বলবো সেই— ‘শূন্যের’ জন্মানোর গল্প। অর্থাৎ, বিন্দু থেকে সিন্ধুতে পৌঁছানোর গল্প নয়, শূন্য থেকে সিন্ধুর গল্প।
Zero, zilph, zip, naught— এতগুলো নামে সমগ্র ‘number system’ এর মধ্যে একমাত্র একটি সংখ্যাকেই ডাকা হয়— ‘0’। আমরা আজ প্রায় সমস্ত দৈনন্দিন গাণিতিক সমস্যা-তে, যেমন বাজারে মাছ কিনতে গিয়ে হিসেব করা, কিংবা ফোনে গেম খেলার সময় স্কোর হিসেব করা, চা-করার সময় জল গরম হওয়ার সময়ের হিসেব করা— সবক্ষেত্রেই ‘0’-র সাহায্য নিই। ‘0’ ছাড়া আজ সব অচল। বাণিজ্যিক গণনা, calculus, সহজে গণনা করার পদ্ধতি— সবকিছুই ‘0’ ছাড়া হোঁচট খায়। ‘0’ জন্মানোর গল্প একটা ‘idea’ বা ‘চিন্তা’ জন্মানোর গল্প। যে ‘idea’ যুগ-যুগান্তর ধরে চলে আসছে। যখন কেউ মনে মনে ১০০, ২০০, ৩০০, ১০০০ —ইত্যাদির কথা ভাবেন, তখন তার মনে বড়ো বড়ো ‘গোল্লার’ ছবি ভেসে ওঠে। অর্থাৎ, ‘0’ ছাড়া এই সংখ্যাগুলির অস্তিত্ব নেই। ‘১’ এর পর দুটো ‘০’ বসলে সেটা হয় ‘একশো’ আবার, তিনটে ‘০’ বসলে সেটা হয় ‘এক হাজার’। যেমন, ভাবুন আপনার মাসিক বেতনের শেষে একটা ‘০’ যোগ হয়ে গেলো, অথবা, একটা ‘০’ উড়ে গেল! —তখন আপনার মনের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে! সুতরাং, বুঝতেই পারছেন ‘০’ কোনো সংখ্যার ‘place’ অথবা ‘স্থান’ নির্ধারণ করে। এবং সেই কারণেই ‘০’ কে কোনও সংখ্যার ‘placeholder’-ও বলা হয়।
আমরা আজকাল যে সংখ্যা পদ্ধতির ব্যবহার করি, তার নাম ‘আরাবিক-পদ্ধতি’। নামে আরাবিক হলেও প্রকৃতপক্ষে এর উৎপত্তি আমাদের দেশ ভারত থেকেই। এর আগে যেসব সংখ্যা-পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছে তাদের দ্বারা সহজ ভাবে গণনা করা যেত না। প্রথম গণনা পদ্ধতি তৈরি করেছিলো সুমেরীয় সভ্যতার মানুষেরা। তারা তাদের মালপত্র, গবাদি পশু ইত্যাদির হিসাব রাখার জন্য এই গণনা পদ্ধতির চালু করেছিল। এই পদ্ধতি ছিল চিত্র নির্ভর। তারা ‘১’ সংখ্যাটি বোঝানোর জন্য একটি চিত্র, ২ সংখ্যাটি বোঝানোর জন্য দুটি চিত্র ব্যবহার করতো। কিন্তু তার ফলে বৃহত্তর সংখ্যার গণনা খুবই মুশকিল হতো। তারা ১০, ১০০, ২০০ ইত্যাদি বোঝানোর জন্য আলাদা আলাদা প্রতীক এর ব্যবহার করতো। সুতরাং, তখনো শূন্য সম্পর্কে মানুষের ধারণা পরিপূর্ণ ভাবে তৈরি হয়নি, এটা বলা যায়। এবার খৃ:পূ: ২৫০০ সাল নাগাদ সুমেরীয়দের এই গণনা পদ্ধতি ব্যাবিলনীয়-রা অনুসরণ করতে লাগলো। তারা এবার এই পদ্ধতিকে আরো উন্নত করার চেষ্টা চালালো। ব্যবিলনীয়রাই প্রথম শূন্যের অভাবকে সংখ্যার মধ্যে খালি ঘর রেখে বোঝাতে সক্ষ মহয়েছিলো। যেমন, ১০২৫ না লিখে তারা লিখতো- ১ ২ ৫ -মাঝখানের স্থান ফাঁকা রেখে দিতো এইভাবে। কিন্তু এর ফলে এক সমস্যার সৃষ্টি হলো। যেই তারা পাশাপাশি দুটো সংখ্যা লিখতে গেল, দেখলো এতো মহা ঝামেলা! কী সেই ঝামেলা? ভাবুন, ১০৩ আর ৬০৬ কে আপনি পাশাপাশি লিখছেন আদি ব্যাবিলনীয় পদ্ধতিতে, তাহলে কীরকম লিখবেন?
১ ৩ ৬ ৬
সুতরাং, ব্যাপারটা পুরোই গুলিয়ে গেলো। মনে হচ্ছে যেন ওটি আসলে একটি সংখ্যা, কিংবা চারটি আলাদা আলাদা সংখ্যা ১, ৩, ৬, ৬! কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওটা তো দুটো আলাদা আলাদা সংখ্যার পাশাপাশি অবস্থান মাত্র! এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারা এই সংখ্যার মাঝের খালি ঘরগুলিকে ‘hook’ আকৃতির প্রতীক বা চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করতো পরবর্তীকালে। কিন্তু, এই ‘হুক’ আকৃতির ব্যবিলনীয় শূন্যকে প্রকৃত শূন্য হিসেবে ধরা হয় না। তার কারণ, তারা সংখ্যার মাঝখানে খালি ঘরকে প্রকাশ করার জন্য এই চিহ্নের ব্যবহার করতো। যার ফলে, এই প্রতীকটিকে স্বাধীনভাবে লেখা অসম্ভব ছিলো এবং এটি কোনো সংখ্যার পিছনে বসে দুই অঙ্কবিশিষ্ট কোনো অর্থবোধক সংখ্যা তৈরি করতে পারতো না। সেটি শুধুমাত্র সংখ্যার ‘মাঝে’ বসতে পারতো। কিন্তু, এই সময় থেকে ‘স্থান-নির্ধারক’ বা placeholder হিসেবে একটি ভাবনার জন্ম হলো। যদিও প্রাচীন গ্রীকরা মিশরীয়দের কাছ থেকে গণিতের ধারণা লাভ করেছিলো, কিন্তু তবুও তারা ‘০’ নামক প্রতীক-এর ব্যবহার জানতো না। হয়তো তাদের শূন্য সম্পর্কীয় ধারণা ছিলো, কিন্তু তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। শূন্যকে কোনো সংকেত বা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করে সর্বপ্রথম একটি সংখ্যা হিসেবে ব্যবহার করার কৃতিত্ব ভারতীয়দের। প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদ্ আর্যভট্টের একটি বই পাওয়া যায় খৃষ্টপূর্ব নবম শতাব্দী নাগাদ, নাম ‘স্থানম স্থানম দশ গুণম’। এখানে হয়তোবা তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, স্থানে স্থানে দশ গুণের কথা। কিন্তু এখানেও শূন্যের কথা লুকায়িত ছিলো। শেষ পর্যন্ত শূন্যের কথা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন ব্রহ্মগুপ্ত, ৬৫০ খৃষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ। তাঁর ব্রহ্মস্ফূটসিদ্ধান্ত নামক গ্রন্থে শূন্যের যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগের নীতি বর্ণনা করেন। তিনি সংখ্যার শেষে শূন্যকে বোঝানোর জন্য একরকম ‘ডট’ এর ব্যবহার করতেন। তৈরি হলো ‘শূন্য (sunya)’ নামক এক সংখ্যার। যেটি বিপ্লব ঘটিয়ে দিল গণনা পদ্ধতির। ব্রহ্মগুপ্ত শূন্যের যে property বা ধর্মগুলির উল্লেখ করেছেন, তা হল—
ধরা যাক একটি সংখ্যা A। তাহলে,
A+0=A
A-0=A
A*0=0
A/0=0
চার নম্বর সূত্রে তিনি এক ভুল করেছিলেন, শূন্যের ভাগ সংক্রান্ত ধর্মের ক্ষেত্রে। এই ধর্ম ততদিন সত্যি বলে ধরা হতো, যতদিন না রণক্ষেত্রে নামলো Isaac Newton এবং G.W. Leibniz নামক দুই গণিতবিদ।
এবার আসবো ‘0’ সংখ্যাটির ইউরোপে পৌঁছানোর কাহিনী নিয়ে। আরবীয় নাবিকরা ভারতে যখন বাণিজ্য করতে এসেছিলো, তখন ভারত থেকে মশলাপাতির সাথে সাথে ব্রহ্মগুপ্ত এবং তার সহকর্মীদের লেখা বই নিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেছিলো। প্রায় ৭৭৩ খৃষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ ‘0’ পৌঁছায় বাগদাদে এবং সারা মধ্য পূর্বে ছড়িয়ে পড়ে সেইসব আরবীয় গণিতজ্ঞের দ্বারা, যারা ভারতীয় সংখ্যা-পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে নিজেদের সংখ্যা-পদ্ধতি গড়ে তুলেছিলো। নবম শতাব্দীতে Mohammed ibn-Musa-al-Khowarizmi নামক একজন গণিতজ্ঞ প্রথম এমন একধরণের সমীকরণ বা equation-এর সৃষ্টি করেন যেগুলো ‘0’-এর সমান হয় অর্থাৎ, equaled to zero হয়। এগুলিই পরবর্তীকালে algebra-নামে পরিচিত হয়। তিনি গুণ ও ভাগ করার একরকমের ‘quick method’ বা ‘দ্রুত পদ্ধতি’ উদ্ভাবন করেছিলেন যেগুলোকে আমরা এখন ‘algorithm’ বলি। অনেকে বলেন, Al-Khowarizmi এর নাম থেকেই ‘algorithm’ কথাটির উৎপত্তি। Al-Khowarizmi ‘0’ কে বলতেন ‘sirf’। ‘sirf’ শব্দটি থেকেই আমাদের এখনকার ‘cipher (গোল্লা)’-এর উৎপত্তি। ৮৭৯ খৃষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ শূন্যকে অনেকটা আজকালকার ‘শূন্য’–র মতো করে প্রকাশ করা হতো। কিন্তু, সেটি আকারে ছোটো এবং ডিমের মতো ছিল। অনেকটা ইংরেজি অক্ষর ‘o’ এর মতো। এরপর যখন Spain আবিষ্কার হলো, তখন ‘০’ ছড়িয়ে পড়লো ইউরোপে। দ্বাদশ শতাব্দী নাগাদ Al-Khowarizmi-এর গ্রন্থগুলি ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে পাড়ি দিলো ইংল্যান্ডে। এবার মাঠে নামলো ইতালির এক বিখ্যাত গণিতজ্ঞ Fibonacci। তিনি করলেন কী, Al-Khowarizmi-এর কাজ নিয়ে সেটাকে একটু নতুন রূপ দিয়ে ‘algorithm’-এর গোটা বই লিখে ফেললেন ১২০২ সালে। যার নাম Liber Abacci অথবা, ‘Abacus Book’। Fibonacci গুণ-ভাগ-যোগ-বিয়োগকে আরো সহজতর করে দিলেন। ইউরোপের ব্যবসায়ীরা দেখলো— আরিব্বাস! এতো বেশ মজার ব্যাপার, ব্যবসার হিসেব-নিকেশ রাখতে এই পদ্ধতি তো বেশ কাজে লাগছে, সময়ও বাঁচছে! কিন্তু, এই কাজে বাধা দিলো ইতালির সরকার। তারা আরবীয় পদ্ধতিকে নিষিদ্ধ করলো, কারণ তারা তো রোমান- সংখ্যা পদ্ধতিতে বেশি নির্ভরশীল ছিলো। কিন্তু, সরকারের নিষেধ সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা লুকিয়ে-চুরিয়ে নিজেদের কাজে ‘0’-এর ব্যবহার করতে লাগলেন। ব্যবসায়ীরা এটিকে একটি ‘কোড’ হিসেবে ব্যবহার করতো, যার নাম দিলো তারা ‘cipher’, যেটি আরবিক শব্দ ‘sirf’ এর রূপান্তর মাত্র।
পরবর্তী কালে ‘0’-র ব্যবহার কে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছিলো গণিতবিদ্ রেনে দেকার্তে (Rene Descartes)। তিনি স্থানাঙ্ক জ্যামিতি–র উদ্ভাবক ছিলেন। যাকে আমরা এখন Cartesian Co-ordinate system বলে জানি। এই স্থানাঙ্ক জ্যামিতির সাহায্যে কোনো জ্যামিতিক আকৃতিকে লেখচিত্র বা graph এর সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। এবং সেখানে মূলবিন্দু হিসাবে (0,0) স্থানাঙ্ককে ধরা হয়। যেটি Descartes’s origin নামে পরিচিত। শূন্যের যোগ, বিয়োগ, গুণ নিতান্তই সহজ প্রক্রিয়া। কিন্তু, শূন্যের ভাগের ব্যাপারে বড় বড় গণিতবিদও ধরাশায়ী হয়েছেন। যখন আমরা বলি ১০/০ তখন, ১০-এর মধ্যে কতগুলি ‘0’ জায়গা করে নেবে তা আমরা বলতে পারবো না। অথবা, কতগুলি অস্তিত্বহীন আপেল ১০টি বাস্তবিক আপেলের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারবে, তা আমরা বলতে পারবো না। এই বলতে না পারাটাই ক্যালকুলাস-এর চাবিকাঠি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যেমন, ধরুন আপনি গাড়ি চালিয়ে কলকাতা থেকে দিল্লি যাচ্ছেন। তখন গাড়িটির গতি কখনই স্থির থাকে না। সেটি, ট্রাফিক জ্যাম, সিগন্যাল ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে বিঘ্নিত হয়। কিন্তু আমরা কী করে একটি নির্দিষ্ট সময় বা particular instance–এ গাড়ির গতি বলতে পারবো? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্যই প্রয়োজন পড়ে ‘0’ এবং ক্যালকুলাসের।
আপনি যদি কোনও নির্দিষ্ট ক্ষণ বা মুহূর্তে গাড়ির গতির পরিবর্তন জানতে চান, ধরুন আপনি কলকাতা থেকে হাওড়া অবধি গাড়ির গতি পরিবর্তন জানতে চান। তাহলে আপনার সেই নির্দিষ্ট টাইমকে আরও অনেক ছোটো ছোটো টাইম পিরিয়ড (set of time period)–এ ভেঙে নিতে হবে। যেমন, শিয়ালদহ থেকে কলেজ স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট থেকে সেন্ট্রাল ইত্যাদি ছোটো ছোটো দূরত্বে ভেঙে নিতে হবে। এরপর আপনাকে সেইসব ছোটো ছোটো দূরত্ব ও সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে গাড়ির গতির পরিবর্তনের মান পরিমাপ করতে হবে। আপনি টাইম পিরিয়ড যত লঘু করবেন আপনার গতি পরিবর্তনের মান ততো নির্দিষ্ট বা accurate আসবে। টাইম পিরিয়ড লঘু থেকে লঘুতর করতে করতে একটা সময় দেখবেন একটি নির্দিষ্ট টাইম পিরিয়ডে গাড়ির গতির পরিবর্তন কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যার কাছাকাছি এসে গেছে (সেই সংখ্যা ‘0’-ও হতে পারে)। অর্থাৎ, টাইম পিরিয়ড বা সময়ের অন্তরের মান ‘0’-র কাছাকাছি যাওয়ার সাথে সাথে গাড়ির গতি পরিবর্তনের মান একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার কাছাকাছি যাচ্ছে, যা ‘0’ হতে পারে, অশূন্য কোনও সংখ্যাও হতে পারে (এটাই আসলে ওই গাড়ির তাৎক্ষণিক গতিবেগ)। কিন্তু সেই সংখ্যা সবসময় exact ‘0’ হবে, তার কোনও মানে নেই। এখানেই ভুল করেছিলেন ব্রহ্মগুপ্ত। তিনি ভেবেছিলেন ওটা exact ‘0’ হয়ে যাবে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেটা সাধারণ সত্য নয়। ১৬০০ সাল নাগাদ Newton এবং Leibnitz আলাদা আলাদা করে এই সমস্যার সমাধান করেন এবং জগতের কাছে অফুরন্ত সম্ভাবনার দরজা খুলে দেন। যে সংখ্যাগুলি ‘0’-র খুব কাছাকাছি সেগুলো কাজে লাগিয়ে তৈরি হল এক নতুন বিষয় ‘ক্যালকুলাস’। যে ক্যালকুলাস ছাড়া আজ Physics, engineering, economy, finance— সব অচল। একবিংশ শতাব্দীতে ‘0’-র ব্যবহার সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে শুরু হলো এবং সব ক্ষেত্রেই অপরিহার্য হয়ে পড়লো। শূন্য নিজের শূন্যতা কাটিয়ে পূর্ণতা পেলো। ‘Nothing’ পরিণত হলো ‘something’-এ। যুগ যুগ ধরে ‘0’-র উন্নতিসাধন মানবজাতির এক গুরত্বপূর্ণ প্রাপ্তি। কারণ, গণিত একটি বিশ্বব্যাপী বিষয় এবং ক্যালকুলাস তার শৌর্যের পরিচয়। আবার ক্যালকুলাস ‘0’ ছাড়া অচল। যতদিন বিশ্বের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন গণিত ও ক্যালকুলাসের সাথে সাথে ‘0’-এরও অস্তিত্ব থাকবে। আদতে এর নাম ও ধারণা দেখে মনে হয় যেন ‘0’ কিছুই নয়, যা শুধুমাত্র অনুপস্থিতি দাবি করে। কিন্তু, ‘0’ এই অনুপস্থিতির মধ্যেও দাবি করে বিপুল সম্ভাবনার উপস্থিতির। যে সম্ভাবনা বদলে দিতে পারে সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে।
তথ্যসূত্র:-
http://yaleglobal.yale.edu/history-zero
https://www.scientificamerican.com/article/history-of-zero/
ভালো হয়েছে লেখাটি।
ধন্যবাদ:-)